সময়ের স্রোতে ভেসে বেড়াচ্ছি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের দুইদিন আগে বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পুনর্নির্বাচনের সকল সম্ভাবনা দেখছেন। লড়াইটি হাড্ডাহাড্ডি হলেও ওবামারই জয় হবে এমনটাই ভাবছেন তারা।
এনিয়ে রোববার রাতে বাংলানিউজের কথা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সব বাংলাদেশিই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ভোট দেবেন। কারণ ওবামা প্রশাসন মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষের প্রশাসন।
ওয়াশিংটন থেকে টেলিফোনে ড. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে অবস্থা থেকে দেশের অর্থনীতিকে ফের শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছেন তা এগিয়ে নিয়ে যেতে তাকেই প্রয়োজন হবে আমেরিকার।
তিনি বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট ওবামার দলই করি, আমি একজন রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট । প্রথম ডিবেটে ওবামার পারফরম্যান্স কিছুটা দুর্বল হলেও আমি মনে করি ডিবেটই সব কিছু নয়। যতই সময় ঘনিয়ে আসছে ততই ওবামার পক্ষে সমর্থন বাড়ছে।
রোববার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে দুই পক্ষকে সমান সমান দেখা গেলেও ওবামার জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রকৌশলী ডেমোক্র্যাট।
তিনি বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের তবে আগামী দুই দিন আমাদের কাজ হবে যাতে অনেক বেশি ভোটার তাদের ভোট কেন্দ্রে যান সেবিষয়ে উৎসাহিত করা।
কম্পিউটার বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্সি ফার্ম ইউটিসির চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ বলেন, “জাতীয় ফলাফলের জরিপগুলো দেখাচ্ছে খুবই শক্ত লড়াই হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি ব্যাটল গ্রাউন্ডগুলোর চেহারা দেখি তাহলে দেখা যাবে ১০টি সুইং স্টেটের মধ্যে ৮টিতেই ওবামা এগিয়ে। পেনসিলভ্যানিয়াতে ওবামা এগিয়ে।
আজিজ আহমেদ জানান, জরিপগুলোর জরিপ ও অভ্যন্তরীণ জরিপে দেখা গেছে ওহাইয়োতেও ওবামা তিন পয়েন্ট এগিয়ে।
এছাড়াও ৯টি ব্যাটল গ্রাউন্ডের মধ্যে ৭টিতেই ওবামা ভালো অবস্থানে রয়েছেন। আজিজ আহমেদ বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনির জয়ী হতে সবকটি ব্যাটল গ্রাউন্ডেই জিততে হবে তাকে এদিকে ওহাইও ও পেনসিলভ্যানিয়াতে জিতলেই হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় দফা স্থান করে নেবেন ওবামা।
ক্যালিফোর্নিয়ার রেজিস্টার্ড রিপাবলিকান, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশের উপদেষ্টা ড. জয়নুল আবেদিন বাংলানিউজকে বলেন, চার বছর আগে বারাক ওবামা যে পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন তা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তার প্রতিশ্রতি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এবারের নির্বাচনে মিট রমনি নারী ও যুব বয়সের ভোটারদের কাছে পৌঁছে যেতে পেরেছেন।
ফ্লোরিডা, আইওয়া, ওহাইওতে রিপাবলিকানরা এগিয়ে। এ অবস্থায় পপুলার ভোটে ওবামাকে হারিয়ে এগিয়ে যাবেন রমনি। তবে ইলেক্টোরাল ভোটের ফলটি কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে কথা বলা এখই অসম্ভব।
ওয়াশিংটনের বাল্টিমোরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ইতালিয়ান রেস্টুরেন্টের মালিক মঈন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ধরনের অঘটন না ঘটলে ওবামাই জিতবেন। অঘটন বলতে কি বোঝাচ্ছেন জানতে চাইলে মঈন আহমেদ বলেন, “আমেরিকানরা আনপ্রেডিক্ট্যাবল জাতি।
পোলিং বুথেও তারা মাইন্ড চেঞ্জ করে ফেলতে পারে। কিন্তু এখানে আমেরিকান বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে তারা আরও চার বছর ওবামাকেই ক্ষমতায় দেখাতে চান। বারাক ওবামার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি রাইট ট্র্যাকে আসতে শুরু করেছে। রিপাবলিকানরা এলে এগুলো আটকে যেতে পারে। এ অবস্থায় ওবামাকেই তারা আবার নির্বাচিত করবেন।
মঈন আহমেদ বলেন, এটি একটি বিরাট গর্ত সেটি ভরাট করতে সময় লাগবে এটা আমেরিকানরা বোঝেন। কাজের বাজার সৃষ্টি, আবাসন খাতের উন্নয়ন হতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ অবস্থায় ওবামা প্রশাসনের কন্টিনিউশন জরুরি। ”
নিউইয়র্কে বসবাসরত সাবেক কূটনীতিক আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, “আমি এখনো আশাবাদী। ” ওবামার কিছু সলিড ভোটব্যাংক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কৃষ্ণাঙ্গদের ৯৭ শতাংশ ভোট ছাড়াও লাতিনোদের ভোট, নারীদের ভোট, যুব শ্রেণীর ভোট ওবামার পক্ষে যাবে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে রমনি অনেক মিথ্যাচার করছেন।
এগুলো ধরা পড়ে গেছে। ওহাইও, আইওয়া, কলারোডো ফ্লোরিডায় জরিপে ওবামা সবক`টিতেই এক দুই পয়েন্ট করে এগিয়ে। ইলেক্টোরাল ভোটেও এগিয়ে থাকবেন ওবামা। ”
আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, স্যান্ডির আঘাতের পর ওবামার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। নিউইয়র্কের মেয়র ব্লুমবার্গের এনডোর্সমেন্ট ফ্লোরিডায় ওবামাকে জয়ী হতে সাহায্য করবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই রাজ্যে প্রচুর ইহুদি ভোটার রয়েছে।
ব্লুমবার্গ একজন ইহুদি হওয়ায় ফ্লোরিডায় ইহুদিদের ভোট ওবামার পক্ষে যাবে। এছাড়া সাবেক রিপাবলিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের এনডোর্স করা, স্যান্ডির আঘাতের পর নিউজার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টির প্রশংসা ওবামার জয়ের পক্ষে কাজ করবে বলেও মনে করেন আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ক্যাটরিনার সময় বুশ অনেক সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু ওবামা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে মনে হয়েছে হি ইজ আ ট্রু লিডার।
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলাপত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ইমিগ্র্যান্ট বাংলাদেশি হিসেবে আমি বারাক ওবামার জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।
তবে নির্বাচনের ঠিক দুই দিন আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া যারা সার্বক্ষণিক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে তাদের সবশেষ বিশ্লেষণ কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি করছে। তবে সবকিছুর পরেও আমার ধারণা ওবামারই জয় হবে।
নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, “এবারের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনটি খুবই টাফ হলেও মনে হচ্ছে ওবামা জিতবেন। আমি রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট। আমি মনে করি, ওবামাই বেরিয়ে আসবেন।
আমেরিকান জনগণেরও তাকেই দরকার। কারণ ওবামা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন তখন রমনি ক্ষমতায় এলে আবার সব উল্টোপাল্টা হয়ে যাবে। ”
ওবামা নারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল উল্লেখ করে রোকেয়া আক্তার বলেন, “নারীর অধিকার অর্জনে তার নেওয়া নীতিগুলো অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ওবামা যে স্বাস্থ্যসেবা নীতি নিয়েছেন তা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য উপযোগী এ অবস্থায় তার নির্বাচিত হওয়াটাই জরুরি। ”
প্রবীণ সাংবাদিক মনজুর আহমদ বলেন, “শেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
তবে যাই হোক ওবামা এক পয়েন্ট হলেও এগিয়ে থাকছেন। আর্লি ভোটেও ওহাইও এবং মিয়ামিতে ওবামা এগিয়ে আছেন। ইলেক্টোরাল ভোটে সবশেষ হিসাবে দেখা গেছে তাতেও ওবামা এগিয়ে থাকবেন। তবে লড়াইটি হাড্ডাড্ডিই হবে। ”
শেষের দিকের কিছু ঘটনা ওবামার পালে হাওয়া দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নিউ জার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টিও ওবামার প্রশংসা করলেন স্যান্ডির আঘাতের পর তার সহযোগিতার কারণে।
ওবামার ওই সহযোগিতার মনোভাবে সবাই খুশি। ”
বাংলাদেশি ডেমেক্র্যাট নেতা ও পরিবেশ বিজ্ঞানী মোর্শেদ আলম বলেন, “রিপাবলিকানদের মধ্যে একটি যুদ্ধংদেহী ভাব দেখা গেছে। এটা ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে নেই। এবারের মতো এতটা কঠোর প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন আর কখনোই দেখা যায়নি। তবে এই নির্বাচনে বারাক ওবামার জয় না হলে তা হবে চ্যালেঞ্জ টু ডেমোক্রেসি।
”
নিউইয়র্কের আবাসন শিল্প ব্যবসায়ী জাকির খান বাংলানিউজকে বলেন, “নিউইয়র্কে বড় ব্যবধানেই জিতবেন ওবামা। সুইং স্টেটগুলোতেও ওবামার জয় হবে যদি বর্ণবাদী কোনো ইস্যু নিয়ে শেষ মুহূর্তে কোনো খেলা না হয়। ওবামার জয়ের সম্ভবনা ৭০ শতাংশ বলে উল্লেখ করেন জাকির খান। স্যান্ডির আঘাতের পর বারাক ওবামার সবগুলো পদক্ষেপেই ছিল ইতিবাচক, বলেন এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশের সাবেক সাংবাদিক বর্তমানে নিউইয়র্কের অধিবাসী নাসিমুন্নাহার নিনি বাংলানিউজকে বলেন, স্যান্ডির পরে নেওয়া ভূমিকার জন্য ক্রিস ক্রিস্টি বারাক ওবামার যে প্রশংসা করেছেন সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ওবামার ফরেন পলিসির কড়া সমালোচক ছিলেন এই ক্রিস্টি; অথচ তিনিই ওবামাকে আউটস্ট্যান্ডিং লিডার বলে উল্লেখ করেছেন।
নিনি আরও বলেন, “নিউইয়র্কের গভর্নর মাইক ব্লুমবার্গ ওবামাকে এনডোর্স করেছেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল এনডোর্স করেছেন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ওবামার পাশের বিষয়ে আশাবাদী। ওবামাকে ক্রিস্টিও আউট স্ট্যান্ডিং লিডার বলা শুধু নিউ জার্সিতেই নয় গোটা আমেরিকাতেই ওবামাকেও বড় করে তুলেছে, মত দেন এই সাবেক নারী সাংবাদিক। ``
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের দুইদিন আগে বাংলাদেশি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পুনর্নির্বাচনের সকল সম্ভাবনা দেখছেন।
লড়াইটি হাড্ডাহাড্ডি হলেও ওবামারই জয় হবে এমনটাই ভাবছেন তারা।
এনিয়ে রোববার রাতে বাংলানিউজের কথা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সব বাংলাদেশিই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ভোট দেবেন। কারণ ওবামা প্রশাসন মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষের প্রশাসন। ওয়াশিংটন থেকে টেলিফোনে ড. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে অবস্থা থেকে দেশের অর্থনীতিকে ফের শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেছেন তা এগিয়ে নিয়ে যেতে তাকেই প্রয়োজন হবে আমেরিকার।
তিনি বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট ওবামার দলই করি, আমি একজন রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট । প্রথম ডিবেটে ওবামার পারফরম্যান্স কিছুটা দুর্বল হলেও আমি মনে করি ডিবেটই সব কিছু নয়। যতই সময় ঘনিয়ে আসছে ততই ওবামার পক্ষে সমর্থন বাড়ছে।
রোববার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে দুই পক্ষকে সমান সমান দেখা গেলেও ওবামার জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রকৌশলী ডেমোক্র্যাট। তিনি বলেন, বিষয়টি উদ্বেগের তবে আগামী দুই দিন আমাদের কাজ হবে যাতে অনেক বেশি ভোটার তাদের ভোট কেন্দ্রে যান সেবিষয়ে উৎসাহিত করা।
কম্পিউটার বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্সি ফার্ম ইউটিসির চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ বলেন, “জাতীয় ফলাফলের জরিপগুলো দেখাচ্ছে খুবই শক্ত লড়াই হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি ব্যাটল গ্রাউন্ডগুলোর চেহারা দেখি তাহলে দেখা যাবে ১০টি সুইং স্টেটের মধ্যে ৮টিতেই ওবামা এগিয়ে। পেনসিলভ্যানিয়াতে ওবামা এগিয়ে।
আজিজ আহমেদ জানান, জরিপগুলোর জরিপ ও অভ্যন্তরীণ জরিপে দেখা গেছে ওহাইয়োতেও ওবামা তিন পয়েন্ট এগিয়ে। এছাড়াও ৯টি ব্যাটল গ্রাউন্ডের মধ্যে ৭টিতেই ওবামা ভালো অবস্থানে রয়েছেন।
আজিজ আহমেদ বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনির জয়ী হতে সবকটি ব্যাটল গ্রাউন্ডেই জিততে হবে তাকে এদিকে ওহাইও ও পেনসিলভ্যানিয়াতে জিতলেই হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় দফা স্থান করে নেবেন ওবামা।
ক্যালিফোর্নিয়ার রেজিস্টার্ড রিপাবলিকান, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশের উপদেষ্টা ড. জয়নুল আবেদিন বাংলানিউজকে বলেন, চার বছর আগে বারাক ওবামা যে পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন তা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তার প্রতিশ্রতি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এবারের নির্বাচনে মিট রমনি নারী ও যুব বয়সের ভোটারদের কাছে পৌঁছে যেতে পেরেছেন। ফ্লোরিডা, আইওয়া, ওহাইওতে রিপাবলিকানরা এগিয়ে।
এ অবস্থায় পপুলার ভোটে ওবামাকে হারিয়ে এগিয়ে যাবেন রমনি। তবে ইলেক্টোরাল ভোটের ফলটি কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে কথা বলা এখই অসম্ভব।
ওয়াশিংটনের বাল্টিমোরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ইতালিয়ান রেস্টুরেন্টের মালিক মঈন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ধরনের অঘটন না ঘটলে ওবামাই জিতবেন। অঘটন বলতে কি বোঝাচ্ছেন জানতে চাইলে মঈন আহমেদ বলেন, “আমেরিকানরা আনপ্রেডিক্ট্যাবল জাতি। পোলিং বুথেও তারা মাইন্ড চেঞ্জ করে ফেলতে পারে।
কিন্তু এখানে আমেরিকান বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে তারা আরও চার বছর ওবামাকেই ক্ষমতায় দেখাতে চান। বারাক ওবামার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি রাইট ট্র্যাকে আসতে শুরু করেছে। রিপাবলিকানরা এলে এগুলো আটকে যেতে পারে। এ অবস্থায় ওবামাকেই তারা আবার নির্বাচিত করবেন। মঈন আহমেদ বলেন, এটি একটি বিরাট গর্ত সেটি ভরাট করতে সময় লাগবে এটা আমেরিকানরা বোঝেন।
কাজের বাজার সৃষ্টি, আবাসন খাতের উন্নয়ন হতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ অবস্থায় ওবামা প্রশাসনের কন্টিনিউশন জরুরি। ”
নিউইয়র্কে বসবাসরত সাবেক কূটনীতিক আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, “আমি এখনো আশাবাদী। ” ওবামার কিছু সলিড ভোটব্যাংক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কৃষ্ণাঙ্গদের ৯৭ শতাংশ ভোট ছাড়াও লাতিনোদের ভোট, নারীদের ভোট, যুব শ্রেণীর ভোট ওবামার পক্ষে যাবে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে রমনি অনেক মিথ্যাচার করছেন। এগুলো ধরা পড়ে গেছে।
ওহাইও, আইওয়া, কলারোডো ফ্লোরিডায় জরিপে ওবামা সবক`টিতেই এক দুই পয়েন্ট করে এগিয়ে। ইলেক্টোরাল ভোটেও এগিয়ে থাকবেন ওবামা। ”
আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, স্যান্ডির আঘাতের পর ওবামার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। নিউইয়র্কের মেয়র ব্লুমবার্গের এনডোর্সমেন্ট ফ্লোরিডায় ওবামাকে জয়ী হতে সাহায্য করবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই রাজ্যে প্রচুর ইহুদি ভোটার রয়েছে। ব্লুমবার্গ একজন ইহুদি হওয়ায় ফ্লোরিডায় ইহুদিদের ভোট ওবামার পক্ষে যাবে।
এছাড়া সাবেক রিপাবলিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলের এনডোর্স করা, স্যান্ডির আঘাতের পর নিউজার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টির প্রশংসা ওবামার জয়ের পক্ষে কাজ করবে বলেও মনে করেন আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ক্যাটরিনার সময় বুশ অনেক সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু ওবামা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে মনে হয়েছে হি ইজ আ ট্রু লিডার।
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলাপত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ইমিগ্র্যান্ট বাংলাদেশি হিসেবে আমি বারাক ওবামার জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। তবে নির্বাচনের ঠিক দুই দিন আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া যারা সার্বক্ষণিক বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে তাদের সবশেষ বিশ্লেষণ কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি করছে।
তবে সবকিছুর পরেও আমার ধারণা ওবামারই জয় হবে।
নিউ আমেরিকান উইমেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, “এবারের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনটি খুবই টাফ হলেও মনে হচ্ছে ওবামা জিতবেন। আমি রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট। আমি মনে করি, ওবামাই বেরিয়ে আসবেন। আমেরিকান জনগণেরও তাকেই দরকার।
কারণ ওবামা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন তখন রমনি ক্ষমতায় এলে আবার সব উল্টোপাল্টা হয়ে যাবে। ”
ওবামা নারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল উল্লেখ করে রোকেয়া আক্তার বলেন, “নারীর অধিকার অর্জনে তার নেওয়া নীতিগুলো অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ওবামা যে স্বাস্থ্যসেবা নীতি নিয়েছেন তা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য উপযোগী এ অবস্থায় তার নির্বাচিত হওয়াটাই জরুরি। ”
প্রবীণ সাংবাদিক মনজুর আহমদ বলেন, “শেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে যাই হোক ওবামা এক পয়েন্ট হলেও এগিয়ে থাকছেন।
আর্লি ভোটেও ওহাইও এবং মিয়ামিতে ওবামা এগিয়ে আছেন। ইলেক্টোরাল ভোটে সবশেষ হিসাবে দেখা গেছে তাতেও ওবামা এগিয়ে থাকবেন। তবে লড়াইটি হাড্ডাড্ডিই হবে। ”
শেষের দিকের কিছু ঘটনা ওবামার পালে হাওয়া দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নিউ জার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিস্টিও ওবামার প্রশংসা করলেন স্যান্ডির আঘাতের পর তার সহযোগিতার কারণে। ওবামার ওই সহযোগিতার মনোভাবে সবাই খুশি।
”
বাংলাদেশি ডেমেক্র্যাট নেতা ও পরিবেশ বিজ্ঞানী মোর্শেদ আলম বলেন, “রিপাবলিকানদের মধ্যে একটি যুদ্ধংদেহী ভাব দেখা গেছে। এটা ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে নেই। এবারের মতো এতটা কঠোর প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন আর কখনোই দেখা যায়নি। তবে এই নির্বাচনে বারাক ওবামার জয় না হলে তা হবে চ্যালেঞ্জ টু ডেমোক্রেসি। ”
নিউইয়র্কের আবাসন শিল্প ব্যবসায়ী জাকির খান বাংলানিউজকে বলেন, “নিউইয়র্কে বড় ব্যবধানেই জিতবেন ওবামা।
সুইং স্টেটগুলোতেও ওবামার জয় হবে যদি বর্ণবাদী কোনো ইস্যু নিয়ে শেষ মুহূর্তে কোনো খেলা না হয়। ওবামার জয়ের সম্ভবনা ৭০ শতাংশ বলে উল্লেখ করেন জাকির খান। স্যান্ডির আঘাতের পর বারাক ওবামার সবগুলো পদক্ষেপেই ছিল ইতিবাচক, বলেন এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশের সাবেক সাংবাদিক বর্তমানে নিউইয়র্কের অধিবাসী নাসিমুন্নাহার নিনি বাংলানিউজকে বলেন, স্যান্ডির পরে নেওয়া ভূমিকার জন্য ক্রিস ক্রিস্টি বারাক ওবামার যে প্রশংসা করেছেন সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওবামার ফরেন পলিসির কড়া সমালোচক ছিলেন এই ক্রিস্টি; অথচ তিনিই ওবামাকে আউটস্ট্যান্ডিং লিডার বলে উল্লেখ করেছেন।
নিনি আরও বলেন, “নিউইয়র্কের গভর্নর মাইক ব্লুমবার্গ ওবামাকে এনডোর্স করেছেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল এনডোর্স করেছেন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ওবামার পাশের বিষয়ে আশাবাদী। ওবামাকে ক্রিস্টিও আউট স্ট্যান্ডিং লিডার বলা শুধু নিউ জার্সিতেই নয় গোটা আমেরিকাতেই ওবামাকেও বড় করে তুলেছে, মত দেন এই সাবেক নারী সাংবাদিক। ``
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।