আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত [img|http://ciu.somewherein.net/ciu/image/51843/small/?token_id=90600fc33ea2dd414461b88d12138451ন্যাশনাল ব্যাংকের সেই ধিকৃত চেয়ারম্যানঃ
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল আহসান নাফিস। এ অভিযোগে বাংলাদেশে অবস্থিত ন্যাশনাল ব্যাংকের চাকরি হারালেন নাফিসের পিতা কাজী আহসান উল্লাহ। সম্প্রতি ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতা বলে কোন কারণ ছাড়াই তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন।
গতকাল বাংলাদেশে অবস্থিত নাফিসের ঘনিষ্ঠ স্বজনরা এ তথ্য জানিয়েছেন। নাফিসের মামা আবুল বাশার আক্ষেপ করে বলেন, মিথ্যা অভিযোগে নাফিসকে গ্রেপ্তার করা হলেও মার্কিন আদালতে বিচার কার্যক্রমই শুরু হয়নি। কিন্তু তার আগেই নাফিসের পিতার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন এ দেশের ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান। কোন কারণ ছাড়াই নাফিসের পিতাকে চাকরিচ্যুত করেছেন। স্বজনরা জানান, ঈদের দু’দিন আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি নোটিশের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির খবর জানানো হয়।
পরে গত মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর করা হয়েছে। এ খবরে আরও মুষড়ে পড়েছেন নাফিসের পিতা ও মাতা। একদিকে মার্কিন মুলুকে বন্দি ছেলের সঠিক তথ্য জানতে পারছেন না তারা। আবার গ্রেপ্তারের পর ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এদিকে গতকাল পর্যন্ত নাফিসের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকারী মার্কিন ও বাংলাদেশী গোয়েন্দারা কোন ধরনের নেতিবাচক তথ্য খুঁজে পাননি।
ছেলের সঙ্গে কথা বলতে না পেরে নাফিসের পিতা কাজী আহসান উল্লাহ সপ্তাহখানেক আগে ডাকযোগে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ওই চিঠির উত্তর আসেনি। চিঠিখানা ছেলের হাতে পৌঁছেছে কিনা সে খবরও জানতে পারেননি। একমাত্র ছেলের অনিশ্চিত পরিণতির কথা চিন্তা করে পিতা-মাতা দু’জনেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। নিউ ইয়র্কের ব্রুকল্যান্ড ডিটেনশন সেন্টারের আইনজীবী হেইডি ক্লেয়ার সিজারি বন্দি নাফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তার মাধ্যমেই নাফিসের বিষয়ে জানতে পারছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নাফিসের সাক্ষাতে অনীহার যে খবর বেরিয়েছে তা সঠিক নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। হেইডি বলেন, নাফিসের সঙ্গে দেখা করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়নি। এ কারণে তারা এখন পর্যন্ত দেখা করেননি। তার বরাত দিয়ে নাফিসের মামা আরও বলেন, সবার আগে নাফিস তার পিতা-মাতার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন।
এ খবর জানার পরপরই নাফিসের পিতা তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন- ‘প্রিয় নাফিস, কোন চিন্তা করো না। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো। নিরপরাধকে তিনিই রক্ষা করতে পারেন। তোমাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি।
চিঠি পাওয়ার পরপরই উত্তর পাঠিও। ’
ব্রুকল্যান্ড ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি নাফিসের সঙ্গে ওই দেশের একজন সলিসিটার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রেখে চলেছেন। তার সম্পর্কে বাংলাদেশসহ বিশ্বের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সব তথ্যই তাকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। ওই সলিসিটারের সহায়তায় নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিফেন্ডার হেইডি বাংলাদেশে অবস্থিত নাফিসের পরিবারের স্বজনদের কাছে এসব তথ্য সরবরাহ করছেন। নাফিসের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, এফবিআই-এর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাফিস।
নাফিসের মামা আরও বলেন, হেইডির ঠিকানায় ই-মেইল ও তার সঙ্গে ফোনালাপের মাধ্যমে আমরা এসব খবরাখবর জানতে পারছি। ওই আইনজীবী বলেছেন, নাফিস পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু তার কাছে কোন অর্থকড়ি না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। ওই খবর জানার পর পরই নাফিসের কাছে অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন স্বজনরা। আমেরিকায় অবস্থানরত নাফিসের ঘনিষ্ঠ স্বজনরাও তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।
স্বজনরা জানান, চিঠি ছাড়াও নাফিসের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলতে পারবেন তার পিতা ও মাতা। এ ক্ষেত্রে নাফিসকেই উদ্যোগী হয়ে কথা বলতে হবে। সে ওই দেশের কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার পর কর্তৃপক্ষেরই কথা বলার সুযোগ করে দেয়ার বিধি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নাফিসকে ডলার গুনতে হবে।
নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার অভিযোগে ১৭ই অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও এফবিআই-এর হাতে গ্রেপ্তার হন নাফিস।
এটি এফবিআই’র ‘স্টিং অপারেশন’ নামে পরিচিত। এ অপারেশনের কৌশল- ফাঁদে ফেলে মানুষের নেতিবাচক চেতনাকে উসকে দেয়া। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নাফিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার ও জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে আমেরিকার আদালতে দাখিল করা ওই অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়নি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ দেশে অবস্থানরত খোদ এফবিআই’র এজেন্টও নাফিসের জঙ্গি কানেকশনের তথ্য খুঁজে পায়নি।
নাফিসের পিতা কাজী মো. আহসান উল্লাহ বলেছেন, আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলা হয়েছে। আমি দুই দেশের সরকারের কাছেই ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।