আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্কিনীদের অনৈতিক মানসিকতা এবং নাফিস প্রসঙ্গ

তারুণ্যের শক্তিতে জাগুন এই দেশ। ছিনিয়ে আনুক নতুন সকাল রেজওয়ানুল আহসান নাফিসকে নিয়ে এখন প্রতিদিনই নতুন নতুন লেখা আসছে। সংবাদও কম আসছে না। এফবিআই এর ষ্ট্রিং অপারেশনের ফাঁদে পড়ে নাফিস এখন বনে গেছে সন্ত্রাসী। এই স্ট্রিং অপারেশন কতটা নৈতিক বা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে খোদ আমেরিকাতেই রয়েছে বিতর্ক।

কিন্তু আমেরিকা বলে কথা। তারা এখন বিশ্ব মোড়ল। তাই যা খুশী তাই করতে পারে বা ভাবতে পারে। নাফিস সন্ত্রাসী না হলেও তার মাঝে যে মার্কিন বিরোধী একটা মন ছিল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মতোই মুসলমানদের উপর মার্কিনীদের আচরণ নিয়ে আপত্তি ছিল সেটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তার দোষটা হলো এফবিআই এর ফাঁদে পড়ে সে আক্রমণে যেতে উদ্যত হয়েছিল।

সে নিজেও জানতোনা যে বোমাগুলো ফাটবে না। তবে বোমাগুলো ফাটানোর জন্যই তো সে গিয়েছিল। এটা তার অপরিণত মগজের এ্যাডভেঞ্চারিজম এর প্রভাব। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন নাগরিক আছেন যারা মার্কিন নীতিকে সমর্থন করে না। আমেরিকার বাইরে যত দেশ আছে কেউই আমেরিকার স্পিরিচুয়াল মিত্র না।

সবাই আমেরিকাকে মেনে চলে মোড়লগিরির জন্য। কিন্তু তারপরও অন্যদের নিয়ে স্ট্রিং অপারেশন হয়েছে কিনা আমি জানিনা। যতটুকু খবর পেয়েছি তা হলো এক্ষেত্রে তরুন বয়সের মুসলমান ছেলেরাই টার্গেট। সেটা বাংলাদেশের হোক বা অন্য দেশেরই হোক। আমেরিকার নিরাপত্তা বিভাগের মূল উদ্দেশ্য হলো --- ইসলামকে বা মুসলিম ধর্মাবলম্বীকে সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

(এ জন্য অবশ্য উগ্রবাদী মুসলমানরাই প্রধানত দায়ি। এরাই একসময় আমেরিকার ফাঁদে পড়ে জঙ্গী হয়ে উঠেছিল, গড়ে তুলেছিল মুজাহিদিন। সবাই জানে ওসামা বিন লাদেন বা মোল্লা ওমর আমেরিকারই তৈরি)। এটা ইসরায়েলের একটি বড় চাল। আমেরিকা মূলত ইসরায়েলের পররাষ্ট্রনীতিই বাস্তবায়ন করে কারণ আমেরিকার অর্থনীতির মূল চালিকা ইহুদীদের হাতে।

একজনের মনে কোনো না কোনো রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে, কারো প্রতি বিরোধীতাও থাকতে পারে। কিন্তু সুপ্ত সেই মনোভাবকে উস্কানি দিয়ে জাগিয়ে তুলে তাকে সন্ত্রাসী বানানো হবে না কি তার মধ্যে যদি সন্ত্রাসী ধারণা থাকলে সেটিকে দূর করার চেষ্টা নিতে হবে? এই প্রশ্ন রাখলাম সচেতন নাগরিকদের কাছে। তবে এই ঘটনা আমাদের কয়েকটি শিক্ষা দেয়: ১. আমেরিকার কখনো বন্ধু হতে পারে না, ওরা বন্ধুত্বের আবরণে শত্রুতাকেই উস্কে দেয়। ২.বাংলাদেশের নাগরিক যারা আমেরিকায় বসবাস করেন, তাদের অবশ্যই আচরণের দিক থেকে আরো সাবধানী হতে হবে। বাংলাদেশের চায়ের দোকানের আড্ডায় আমরা কথার ফুলঝুরি ছিটাই আমেরিকাতে সেটা না করাই ভাল।

৩. সোভিয়েট ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমেরিকার প্রধান প্রতিপক্ষ এখন মুসলিম বিশ্ব। এটা একদিকে ইহুদিদের প্রভাবে আবার মধ্যপ্রাচ্যের তেলসম্পদও এর প্রধান কারণ। অতএব মৌলবাদী হন বা না হন-- মুসলমানরা সব সময়ই টার্গেটে থাকবেন। কিউবা যখন স্বাধীন হয় তখন থেকে কিউবার প্রতিও একই ধরনের আচরণ করা হয়েছে। এখন করা হচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে।

উগ্রতা দিয়ে নয়, মেধা দিয়েই তাদের ষড়যন্ত্র দমন করা প্রয়োজন। আমেরিকা এবং ইসরায়েল সবসময়ই মুসলমানদের মাথা গরম করে প্রমাণ করতে চায় যে মুসলমান মানেই উগ্র। নাফিস যেমন একটি ফাদে পা দিয়ে সন্ত্রাসী বনে গেছে, গোটা বিশ্বের মুসলমানও একই ফাদে পা দিচ্ছে। অতএব সকলেরই এক্ষেত্রে দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। এটি আমার একান্তই নিজের মতামত।

পাঠকের মতামত বা প্রতিক্রিয়া জেনে আমার নিজের বুঝটা আরো পরিষ্কার করতে চাই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.