যেথায় পড়শী বসত করে, আমি একদিন ও না দেখিলাম তারে। কোচ এসেছে, কোচ গিয়েছে, আরো অনেক কোচ আসবে ভবিষ্যতে। কিন্তু আমরা কি আমাদের বৃত্ত থেকে বের হতে পেরেছি? খুব বেশি হলে, বৃত্তের পরিধি হয়তো কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু বৃত্ত থেকে আমরা আজো বের হতে পারিনি।
এর কারণ কি?
আমরা বিশ্বমানের ভালো খেলোয়াড় খুব বেশি পাই নি, তাই? নাকি বিশ্বমানের ভালো কোচ আমরা কখনোই পাইনি?
জবাব এক বাক্যে----না এর কোনটাই না।
প্রথমতঃ বিশ্বমানের খেলোয়াড় আপনা-আপনি আকাশ থেকে পড়ে না।
সেই খেলোয়াড়কে তিল তিল করে গড়ে তুলতে হয়। করতে হয় তার নিবিড় পরিচর্যা।
প্রশ্ন হলো এই তিল তিল করে গড়ে তোলার কাজটি কে করেন? কোচ? বিসিবি প্রধান, নির্বাচক, সি ই ও। এর উত্তর ও একবাক্যে---- না। এরা কেউ ই ব্যক্তিগতভাবে এই কাজটি করেন না।
এই কাজটি করার জন্য প্রয়োজন একটা সুনির্মিত পদ্ধতি/সিস্টেম।
এই পদ্ধতি টি কি হবে সেটি নিয়ে ভাবার জন্যই দরকার ক্রিকেট সম্পর্কে যাদের গভীর জ্ঞান এবং ভালবাসা আছে, এরকম কিছু ব্যক্তি।
ধরে নিলাম এই কাজটি করে আমাদের বি সি বি তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ও কমিটির মাধ্যমে। এরা মিলে তৈরী করেন মহাপরিকল্পনা এবং কর্মকৌশল।
তারা মাঠপর্যায় থেকে সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় বাছাই করেন এবং তাদের কে এই পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসেন।
এ পর্যন্ত ঠিক আছে।
এর পর আসে খেলোয়াড়দের গড়ে তোলা, আর তাদের পরিচর্যার বিষয়।
এই পর্যায়েই আমাদের প্রয়োজন পড়ে কিছুটা ব্যক্তিনির্ভর হয়ে পড়ার। সেই ব্যক্তিটি হলো একজন দক্ষ কোচ বা একগুচ্ছ দক্ষ কোচিং স্টাফ। এরা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর অভিজ্ঞতা দিয়ে ঐ খেলোয়াড় দের কে বিশ্বমানের করে গড়ে তোলেন।
এই সিস্টেমে বিসিবির ভুমিকা হলো, কোচিং স্টাফদের কে তাদের চাহিদামত প্রয়োজনীয় যাবতীয় সহায়তা প্রদান করা। এর বাইরে আর কিছুই না।
এই খানে এসেই বার বার হোঁচট খাচ্ছে আমাদের ক্রিকেট। ফজলুর রহমান পটল-আলী আসগর লবী-মোস্তফা কামাল, পরিবর্তন হয়েছে বি সি বি নেতৃত্বের স্থান টি, কিন্তু সেই পদ্ধতি যা ছিল তাই রয়ে গেছে। সেটি হচ্ছে, কোচিং এর সহায়ক না হয়ে লীডার (বস) হবার প্রবণতা।
যার কারণে আমারা দেখতে পাচ্ছি স্যাণ্ডুইচ খাবার সিদ্ধান্তেও হস্তক্ষেপ, কারা কারা মূল একাদশে খেলবে সেখানেও হস্তক্ষেপ।
কোচিং কে মূল চালিকা শক্তি না ভেবে নিজেদেরকে চালিকা শক্তি ভাবা। কোচিং কে অধীনস্ত ভাবা। এই প্রবণতা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে আসতে হবে। সুনিপূন বিচার বিশ্লেষন করে কোচিং স্টাফদের কে নিয়োগ দিতে হবে।
তাদের কে কর্মচারী ভাবা যাবে না। এই পর্যায়ে বি সি বির ভূমিকা হবে শুধুই সহায়ক, নেতৃত্ব নয়। এটা যেদিন আমরা নিশ্চিত করতে পারব, সেদিন থেকেই আমরা বৃত্তের আগল ভাঙতে পারব।
যদি একটি মানব দেহের সাথে ক্রিকেট কে তুলনা করি, তারা (সেই কোচিং স্টাফ রা) হবে কৃকেটের মাথা-অর্থাৎ ব্রেন। খেলোয়াড়েরা হবে তার প্রাণ (হৃৎপিন্ড) আর বিসিবি ও তার বিভিন্ন কমিটি হবে তার হাত-পা-চোখ।
এই পর্যায়ে হাত-পা-চোখের দায়িত্ব হবে শুধু ব্রেনের নির্দেশ অনু্যায়ী তাকে সহায়তা করা, যেন প্রাণ তার আপন ছন্দে স্পন্দিত হতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।