আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০০৫ সালে রাষ্ট্রপতিকে ঘুমে বিক্রি করে, ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি।

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন রয়েছে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে খোদ রাজধানীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় শেরেবাংলা মার্কেট দোকানদার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৫ সালে শেরেবাংলা বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে ওই জমি এমন পানির দামে বিক্রি করা হয়। ওই সময় রেলের কতিপয় কর্মকর্তা তথ্য গোপন করে এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের কথা বলে এ অপকর্ম ঘটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বহুমুখী সমিতির অভিযোগ, টাকা পরিশোধের পরও তারা বুঝে পাননি জমিটি।

অবশ্য ২০০৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশীদ হাওলাদার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক হলফনামায় এই মর্মে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, বিক্রয় কবলা সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশনের আগে সরকার-নির্ধারিত জমির মূল্য রেলওয়ের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে যদি বেশি হয়, তাহলে তারা ওই অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবেন। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে বহুমুখী সমিতি ওই পথে হাঁটেনি। ফলে বিপুল অঙ্ক থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার। এর আগে রেলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ঢাকা মহানগরীর জমির নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী আগের বিক্রয় মূল্যের চেয়ে চার গুণ বেশি হিসাবে আদায় করার জন্য মহাপরিচালকের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ব্রাহ্মণচরণ মৌজায় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় আড়াই একর জমি বিনা দরপত্রে শেরেবাংলা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের অনুকূলে বিক্রির জন্য ২০০৫ সালের ২৪ মার্চ রেলওয়ের ভূ-বরাদ্দ কমিটির এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

ওই সিদ্ধান্তের আলোকে একই বছরের ৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত ভূ-বরাদ্দ কমিটির আরেক সভায় জমির সালামি নিলামের মাধ্যমে বন্দোবস্তের জন্য সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৮ কোটি ২৪ লাখ ২৪১ টাকা ৫৬ পয়সা। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেরেবাংলা বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশীদ হাওলাদার দুই কিস্তিতে ওই টাকা রেলওয়েকে দেন যথাক্রমে ২০০৮ সালের ১১ এবং ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট। প্রথম কিস্তিতে এক কোটি টাকা ও দ্বিতীয় কিস্তিতে বাকি টাকা জমা দেন তিনি। সূত্র জানায়, এ জমি বিনা দরপত্রে বরাদ্দের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কাগজগত্র পর্যালোচনা করে খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তারা দেখতে পান, জমিটি বিক্রয়যোগ্য রেলভূমির তালিকাভুক্ত নয়।

ব্রাহ্মণচরণ মৌজার অন্য দাগের জমি বিক্রয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও সিএস ১৩০ ও ১৩১ দাগের বহুমুখী সমিতির কাছে বিক্রীত জমিটি বিক্রয় তালিকায় নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, তৎকালীন রেলওয়ের কতিপয় কর্মকর্তা নিয়মকানুন ভেঙে আর আইন অমান্য করে জমিটি পানির দরে বিক্রি করে দেন। ক্রেতাপক্ষ শেরেবাংলা বহুমুখী সমিতিও দ্রুততার সঙ্গে জমির মূল্য পরিশোধ করে। ওই কর্মকর্তা জানান, মূল্যবান জমিটি পানির দরে চলে যাচ্ছে জানতে পেরে পরবর্তী সময়ে রেল মন্ত্রণালয় এটি রক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গুরুত্ব্বপূর্ণ তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে ওই অসাধু কর্মকর্তারা নিজেদের আখের গোছানোর অংশ হিসেবে বিনা দরপত্রে জমিটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

অর্থাৎ জমিটি বিক্রির যাবতীয় কার্যক্রম ছিল যুগপৎভাবে বেআইনি ও প্রকৃত তথ্য গোপন করে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। ৪০০ কোটি টাকার জমি মাত্র ১৮ কোটি টাকায় বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের মহাপরিচালক প্রকৌশলী আবু তাহের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'এটা কীভাবে হয়েছে বলতে পারব না। তবে এখন পর্যন্ত জমিটি হস্তান্তর করা হয়নি। ' এই জমি বহুমুখী সমিতিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়। তাদের সিদ্ধান্তের আলোকেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সুত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।