মূর্তি
লাল চাদরে মুখ-ঢাকা মূর্তির আবির্ভাবের পরেই সবকিছু
পালটে যেতে থাকে।
ঘোরের মধ্যে আমরা ঘর থেকে একে একে বেরিয়ে আসি আর
আবিষ্কার করি তস্করদের ফেলে যাওয়া সারি সারি নষ্ট তৈজস,
গ্লাস, প্লেট।
অন্ধকারে রাখা মালামালের ভেতর আরো উদ্ধার হয় এক হাঁড়ি
তপ্ত অন্ন, এক পাত্র ভোজ্য আলু।
আমাদের মধ্যে চিরক্ষুধার্ত মৃতরা জেগে ওঠে আর তস্করদের
রেখে যাওয়া অন্ন নিয়ে তড়িঘড়ি বসে পড়ে যেন এরকমই হবার
কথা।
তারপর আমরা নিজেরা মত্ত হই এক দীর্ঘ লড়াইয়ে।
দল আর
উপদলে চলে লড়াই আর লড়াই। রাবারের মতো মৃতরা ছোট
থেকে বড় হয়, বড় থেকে বারবার ছোট হয়ে যায়। তাদের
প্রত্যাঘাত বাতাসের মতো আমাদের বিদ্ধ করতে থাকে।
মৃত চন্দ্রের নিচে আমরা ক্লান্তিহীন─রক্ত থেকে দেহ, দেহ থেকে
পুনরায় রাবার হতে থাকি।
[কথিত আছে যে, এইরূপে কয়েকশত বৎসর অতিক্রান্ত
হইবার পর জনৈক বৃদ্ধ সহিস অসীম কৌতূহলে চুপি চুপি পুনরায়
ফিরিয়া আসে সেই পূর্বকার গৃহে।
লাল চাদরে আপাদমস্তক-ঢাকা
সেই রহস্যময় মূর্তি তখনো ধীরে ধীরে হাঁটিয়া বেড়াইতেছে।
বহুকাল পূর্বে পাতা উৎসবের টেবিল চেয়ারগুলিতে ঘন পুরু শেওলা
জমিয়াছে। দু’একটি চেয়ার কাত হইয়া আছে। আকাশ হইতে
ঝুলিতেছে নিভু নিভু পেট্রোম্যাক্সের আলো। দূরে চরাচরব্যাপি
দিগন্তের শাদা আভাস।
বৃদ্ধ সহিস নিকটে আসিয়া হঠাৎ একটানে খুলিয়া ফেলে সেই মূর্তির
শাদা চাদর। দ্যাখে, হায়, ভিতরে কিছুই তো নাই! বৃথাই তাহারা
এতকাল ভয় পাইয়াছে।
আদিম বিপন্ন বাতাস শুধু খেলিয়া বেড়ায়। ]
................
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।