আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! সকাল থেকে কোন কাজেই মন বসছে না । বার বার মনে হচ্ছে যেন কি একটা যেন মিস হচ্ছে । আমি খুব চেষ্টা করলাম মোবাইলটার দিকে একটা বারও না টাকাতে কিন্তু বারবারই মোবাইলের দিকে চোখ চলে যাচ্ছে !
নাহ !
কোন মেসেজ আছে নি ।
আচ্ছা একটা রিপ্লে কি দেওয়া যায় না ?
কালকে এই সময়ে আমার ইনবক্সে এতোক্ষনে অন্তত একশটা মেসেজ চলে আসতো আর আজ ?
এখনও একটাও না ।
এই মেয়ে গুলো এতো জেদি হয় কেন ?
আচ্ছা ঠিক আছে মেয়েরা একটু আদটু জেদ ধরে ।
এটা করতে হবে ওটা করে দাও সেই টা চাই ।
দিবা না কেন ?
দিতে হবে ।
ঠিক আছ তাই বলে কি সবই মেনে নেওয়া যায় ?
সমস্যা বেধেছে এই খানেই ।
অনীনদিতার এই একই কথা যে ওর সব কথা আমাকে শুনতে হবে । কোন অবজেকশন করা যাবে না ।
আরে এই টা কি সম্ভব নাকি ? একটা মানুষের সব কথা কি শোনা যায় ? আমার কত রকম লিমিটেশন আছে না , এটা তো বুঝতে হবে । অনীনদিতা সে কথা শুনবে না । বাচ্চার মত জেদ ধরে বসে আছে ।
যতক্ষন না আমি রাজি হব না ততক্ষন সে আমার সাথে কোন কথা বলবে না আমার মেসেজের কোন রিপ্লে দিবে না আর আমার কল রিসিভও করবে না ।
এখন মনে হচ্ছে কি কুলাক্ষনেই না অনীনদিতার সামনে কথাটা তুলেছিলাম ।
অনীনদিতা সাদা পরতে একদম পছন্দ করে না । কিন্তু আমার সাদা খুব পছন্দ । বিশেষ করে সাদা চুরিদার । আর সাদা ল্যাগিংহ ।
অনীনদিতার এক কথা এসব টাইটস সে পরবে না ।
পরবে না মানে পরবে না । আমি বললাম
-আমার জন্যও পরবে না ।
অনীনদিতা মুখ বাকীয়ে বলল
-ইস ! আমার বয়েই গেছে ।
আমি কোন কিছু না ভেবেই বললাম
-আচ্ছা তুমি যদি আমার পছন্দ মত পোষাক পর , তাহলে তুমি যা বলবে এর পর থেকে আমি তাই শুনব ।
অনীনদিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
-সত্যি তো !
-হুম সত্যি ।
-কথা দিচ্ছ কিন্তু । যা বলব তাই কিন্তু শোনা লাগবে ।
অনীনদিতার বলার ভঙ্গিটা এমন ছিল যে আমার মনে একটু কেমন যেন লাগল । আমি যতদুর অনীনদিতাকে চিনি ও এমন কি বলে বসতে পারে যা আমার পক্ষে করা সম্ভব নাও হতে পারে । তখনতো পরবো বিপদে ।
আমি একটু হেসে বললাম
-মানে সবই শুনবো , তবে ..
-তবে ? কোন তবে ফবে না । যা বলব শুনতে হবে ।
-আরে সব কিছু করা কি সম্ভব ? প্রত্যেক মানুষেরই তো কিছু লিমিটেশন থাকে । সেইটা তো তোমাকে মাথায় রাখতে হবে তাই না ?
-না আমি যা বলব তাই শুনতে হবে ।
-এরকম বাচ্চা মেয়ের মত করে জেদ ধরলে কি হয় ?
-যা বলব শুনতে হবে !
কি রে একই রেকর্ড বাজছে ।
যা বলব শুনতে হবে ।
যা বলব শুনতে হবে ।
আমাকে পাগল পেয়েছ । আমি রাজি হই আর ফান্ডে পরি । আমি ফান্ডে পরতে রাজি নই ।
তারপর থেকে অনীনদিতার ঐ একই কথা । আমি যতক্ষন না রাজি হব ও ততক্ষন আমার সাথে কথা বলবে না ।
আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই মেয়ে টাকে বেশি লাই দেওয়া যাবে না । এই রকম অযৌক্তিক দাবী মেনে নিলে ভবিষ্যতে আমার অবস্থা আরো খারাপ হবে ।
কি হবে কথা না বললে ?
অনীনদিতা যদি কথা না বলে থাকতে পারে তাহলে আমি কেন পারবো না ? সকাল থেকে ওকে প্রায় ২০ টার উপর মেসেজ পাঠিয়েছি কত বার কল দিয়েছি অনীনদিতার একটা মেসেজের রিপ্লে দেয় নি কলও ধরে নি ।
যাও !
আমি আর ফোন দিবো না ।
কি হবে ঐ মেয়েকে ফোন না দিলে ? আমি ফোনটা বন্ধ করে রেখে দিলাম পাশে । কিন্তু দশমিনিটও বন্ধ রাখতে পারলাম না ।
কেন যেন মনে হল অনীনদিতা আমাকে এসএমএস পাঠিয়েছে । আমি সেলফোনটা অন করলেই মেসেজটা দেখতে পাবো ।
আমি তাড়াতাড়ি মোবাইলটা চালু করলাম ।
কিন্তু কোথায় কি ?
কোন এসএমএস আসলো না ।
আচ্ছা অনীনদিতার কি আমার কথা একটুও মনে পরছে না । ওর কি একবারও মনে হচ্ছে না যে আমি কেমন অস্থির হয়ে আছি ।
আমি ঘড়িতে সময় দেখলাম ।
প্রায় চার ঘন্টা । চার ঘন্টা অনীনদিতার কোন এসএমএস আসে নি ।
মাত্র চার ঘন্টা ?
আশ্চর্য !
আমার মনে হল যেন কত বছর আমি অনীনদিতার সাথে যোগাযোগ করি নি । কত দিন ওর মেসেজ ওপেন করি নি ।
আশ্চর্য !
অনীনদিতার সাথে আমার মোবাইলে কথা হয় কম ।
কিন্তু আমরা প্রচুর মেসেজ চালাচালি করি । আমার মোবাইলে পাঁচশর মত মেসেজ স্টোর করে রাখা যায় । আমি দুজন এতো মেসেজ পাঠাই যে দু দিনে মেসেজ ইনবক্স ফুল হয়ে যায় ।
আর আজকে ?
কোন মেসেজ নাই ?
একদম ফাকা ! এই মেয়েটা এমন কেন করে ?
একটা মেসেজ পাঠালে কি হয় ?
আমি বাধরুমে গেলাম । কমডের উপর সবে মাত্র বসেছি ঠিক তখনই মনে হল মেসেজ টোনটা বেজে উঠল ।
আমাকে আর ঠেকায় কে ।
আর একটু হলে ঐ অবস্থায় উঠে পরতাম কিন্তু বহুকষ্টে নিজেকে রোধ করলাম ।
কাজ অর্ধেক রেখেই আসলাম মোবাইলের কাছে ।
মোবাইলটা হাতে নিয়েই মনটা ভাল হয়ে গেল ।
এসছে ।
মেসেজ এসছে । জলদি জলদি মেসেজটা ওপেন করলাম । দেখি মহারানী কি লিখেছে
200 Minits & 200 sms kinun matro 50 takai. akhone dail korun ...
কি রে ভাই অনীনদিতা এই মেসেজ কেন পাঠাবে !
তখনই সেন্ডারের নামের দিকে চোখ গেল । মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল । আসলে এতো তাড়া হুড়ার মধ্যে ছিলাম যে ঠিক মত দেখিই নি যে কে পাঠিয়েছে ?
শালার ওপরেটর মেসেজ !
নাহ এই যন্ত্রনা আর সহ্য করবো না ।
যা হয় দেখা যাবে । মোবাইলটা হাতে নিয়ে অনীনদিতাকে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দিলাম । ওকে লিখলাম
আচ্ছা ঠিক আছে । হার মানছি । তুমি যা বলবে শুনবো ।
মেসেজের
রিপ্লে আসলো সঙ্গে সঙ্গেই ।
একটা স্মাইলি ।
তারপর আর একটা মেসেজ
আমার সুইট জানপাখিটা ! একটা চুমর ইমো ।
আবার বাথরুমে ঢুকলাম । এবার একটু শান্তি মত কাজটা করা যাবে ।
আহা !
মোবাইল নিয়েই বাধরুমে ঢুকলাম । মেসেজ এলে ওখান থেকেই রিপ্লে দিবো । আবার যেন কাজের মাঝে দৌড়াদৌড়ি না করতে হয় ।
অনীনদিতার ফোন এসে হাজির কাজ করার মাঝ খানে ।
-কি কর পাখি ?
অনীনদিতাকে কি করে বলি কি করছি ! বললাম
-এই তো করছি ।
তেমন কিছু না । বল ।
অনীনদিতা বলল
-আচ্ছা শুনো আজ আমার সাথে দেখা কর ।
-আজ ? কখন ?
-বিকেলে ।
-না না প্লিজ বিকেলে না ।
বিকেলে আমার টিউশনি আছে ।
-কোন না শুনবো না । তুমি বলেছ যা আমি বলবো তাই তুমি শুনবা । শুনতে হবে ।
এই জন্যই ঠিক এই জন্যই আমি রাজি হতে চাই নি ।
-দেখ প্লিজ ......
-কোন কথা না । আমি বেইলী রোডে আছি । আসো ।
-ও আচ্ছা ।
এটা একটা ভাল কথা ।
আমার টিউশনী ঠিক বেইলী রোডের পাশে । যাক হয়ে যাবে ।
অনীনদিতা ঠিক জারুল গাছটার নিচে বসে ছিল । আমাকে দেখেই উঠে দাড়াল । আমি কেবল কিছুক্ষনের জন্য থ হয়ে গেলাম ।
ওর পরনে সাদা শর্ট কামিজ সাথে সাদা ল্যাগিংস । চোখে কাজল দিয়েছে । আর হাত ভর্তি মেহেদী ।
আমি কিছুক্ষন কোন কথাই বলতে পারলাম না ।
কেবল মনে হল এই মেয়েটার জন্য সব কিছু করা যায় ।
সব কিছু ।
সন্ধ্যা পর্যন্ত অনীনদিতার সাথেই রইলাম । একটু অন্ধকার নামলে অনীনদিতা বলল
-এইবার তুমি টিউশনিতে যাও । ঠিক আছে ।
-আর তুমি ?
-আমি বাসায় যাই ।
-আমার যেতে ইচ্ছা করছে না ।
-আসতেই চাচ্ছিলে না আর এখন যেতে চাচ্ছ না ।
-আসলে তোমাকে এতো সুন্দর আর হট লাগছে যে ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না ।
-তুমি এতো ফাজিল হয়ে গেছ না ? এসব কি কথা ?
-আরে বাবা সত্য কথা বললাম ।
-হয়েছে যাও এখন ।
আমি জানি ওর কথাটা শুনে ভাল লেগেছে । ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে । ওকে বললাম
-চল মিন্টু রোডের দিকে যাই ।
-সত্যি যাবে না টিউশনীতে ?
-না । তোমাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না ।
মিন্টু রোডে যখন হাটছি তখন অন্ধকার নেমে এসেছে । ইস ! কি চমৎকার একটা সময় । অনীনদিতাকে মনে হচ্ছে যেন কোন অপ্সরী । চারিদিকে আধারের মাঝে একটু সাদার ছোয়া । আমি ওর হাত ধরে হাটতেছি ! খুব ভাল লাগছে !
আমার খুব ওকে চুম খেতে ইচ্ছা হল ।
ওর ঠোট দুটো এতো চমত্কার । কম্পিউটারে যখন ওর ছবি দেখি জুম করে ওর ঠোটদুটো খুব ভাল করে দেখি । এতো ...... থাক কেমন লাগে আর বললাম না ।
হাটতে হাটতে অনীনদিতা আমার সামনে এসে দাড়ালো । বলল
-কিছু খেতে ইচ্ছা করছে ।
-কি খাবে ?
অনীনদিতা এমন চোখে তাকালো মনে হল কিছু বলতে চায় । আমি আবার বললাম
-কি খাবে বল ।
অনীনদিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
-তুমি আসলেই একটা গাধা ! সব কথা কি মুখে বলা যায় ? কি সুন্দর পরিবেশ ! তোমার পাশে হাটতে কি যা ভাল লাগছে ! এই সময় বুঝ না কি খেতে ভাল লাগে ?
আমি আবার বললাম
- কি খেতে ? এই সময় কিন্তু চটপট খুব ভাল লাগবে !
-তোমার মাথা !
এই বলে অনীনদিতা আমি কিছু বুঝার আগেই আমি ওর নরম ঠোট দুটির স্পর্শ পেলাম আমার ঠোটে !!!!!!!
আসলেই সব সময় সব কথা শুনা যায় না । সবার কিছু লিমিটেশন থাকে ! তার বাইরে যাওয়া সম্ভব হয় না কিছুতেই ! এটা তো মানুষের বোঝা উচিৎ !!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।