যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য ১/১১ এর সবচেয়ে বড় কুফল হল মন্ত্রীপরিষদ শাসিত সরকারের বদলে বাংলাদেশে গড়ে উঠলো অনির্বাচিত উপদেষ্টা পরিষদ শাসিত সরকার, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বলে উপদেষ্টাদের কোন দায় নেই, বিদেশি শক্তির কাছে দেশের সব স্বার্থ বিকিয়ে দেয়াই এদের একমাত্র এসাইনমেন্ট, এই যেমন অর্থমন্ত্রী মসিউর হয়ে উঠলেন এদেশে ভারতীয় স্বার্থ ১৬০০০ আনা পূরণ করার হাতিয়ারে! মন্ত্রী আবুল মাল আমাদের গল্প শুনালেন, বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর গল্প, তিনি এবং তাঁর সাথে একমত একশ্রেণীর রাজনীতি শূন্য বুদ্ধিজীবী প্রচার চালালেন বন্ধু রাষ্ট্র ভারতকে ট্রানজিট, ট্র্যান্সশিপমেন্ট দিলে হাজার হাজার কোটি টাকার মাশুল পেয়ে বাংলাদেশ অচিরেই সিঙ্গাপুর বনে যাবে, মন্ত্রীর এই আশায় বাগড়া দিলেন পাওয়ারপুল মসিউর, সভ্যতা ও বন্ধুত্বের নতুন তত্ত্ব নিয়ে আসলেন তিনি, বললেন “ বন্ধু প্রতিম প্রতিবেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে মাশুল চাওয়া অভদ্রতা ও অভব্যতা”। আবুল মালের সিঙ্গাপুর বানানোর স্বপ্নভঙ্গ দেখতে হল আমাদের, বিনা মাশুলে সড়ক, নৌ, সব রকমের ট্রানজিট- ট্র্যান্সশিপমেন্ট- করিডোর দিয়ে দেয়া হল ভারতকে, এর বিনিময়ে ৫৪ টি নদীর পানির হিস্যা, তিস্তা চুক্তি, টিপাইমুখ বাঁধ, সীমান্ত সমস্যা কোন কিছুরই সুরাহা হল না, উল্টো মণির কণ্ঠে শুনি প্রেমের অমিয় বাণী, “ ভারত থেকে আমরা এত কিছু পেয়েছি যে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর না হলে তা কোন ব্যাপারই না”! ভারতপ্রীতির এই শাশ্বত বানী শুনার পর মূর্ছা যাওয়ার সাথে সাথেই আবার হাজির হলেন মসিউর সাহেব, তিনি মণিকে টপকে গেলেন আবার ভারতপ্রেমে! মহানুভব মসিউর মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিলেন ভারতের কাছে মাশুল তো ভদ্রতার কারনে নেয়াই যাবে না বরং আমাদের বদান্যতা দেখাতে হবে , ট্রানজিটে সড়ক সংস্কারের জন্য ৬১ কোটি টাকা ও আশুগঞ্জ বন্দর নির্মাণে ৪৬১ কোটি টাকা বাংলাদেশকে বহন করতে হবে” ! উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী বাংলাদেশের ওপর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ত্রিপুরায় হাজার হাজার টন খাদ্য পণ্য পরিবহনের জন্য এখন ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার করে দেবে বাংলাদেশ ! বিনিময়ে বাংলাদেশ ভারতের কাছে কিছুই দাবি করবে না। অন্যদিকে ভারতের নৌ ট্রানজিটের স্বার্থে নিজ ব্যয়ে আশুগঞ্জে বন্দর নির্মাণ করে দেবে বাংলাদেশ। বছরে ৬০ লাখ টন পণ্য পরিবহনের উপযোগী এই অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার পোর্ট নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ৪শ’ কোটি টাকা। শুরুতে পুরো অর্থ অনুদান হিসেবে দেয়ার কথা বললেও তা কমিয়ে ৬০ কোটিতে নামিয়ে আনে।
তবে শেষ পর্যন্ত সেটাও পাচ্ছেনা বাংলাদেশ। এখন প্রস্তাব রয়েছে, ২শ’ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেয়া হবে। তবে তাও অনেক জটিল শর্তে। অর্থাৎ, ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ৪৬১ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ১০ লাখ টন পণ্য পরিবহণে ভারতের সাশ্রয় হবে ৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
অথচ আশুগঞ্জ বন্দর নির্মাণের ব্যয় বহনে সম্মত নয় ভারত। আশুগঞ্জ বন্দর নির্মাণে অনুদান দেয়ার জন্য ভারতকে প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। তবে এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনো এর উত্তর মেলেনি। আখাউড়া থেকে ভারতীয় সীমান্ত পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
এই অর্থও বাংলাদেশই বহন করছে। আশুগঞ্জ বন্দরকে সারা বছর ব্যবহার উপযোগী রাখতে ৮৬৬ কিলোমিটার নৌ পথের প্রায় তিন কোটি কিউসেক মিটার মাটি খনন করতে হবে। ভারতের এক বিলিয়ন ডলার ঋণের আওতায় এই প্রকল্প নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় ভারতের কাছে পৃথক ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। তবে আশ্বাস দিলেও বাংলাদেশকে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
ভারতের এই আধিপত্যবাদ আর লুণ্ঠন আমাদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নাই!! শুধু উপদেষ্টাদের জন্য রইল এক খণ্ড সিরাজ শিকদার- “ পিণ্ডি ছেড়েছি দিল্লীর কোলে আশ্রয় নেয়ার জন্য না!”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।