আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের একান্ত প্রচেষ্ঠায় নৌবাহিনী আরো শক্তিশালী : দেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধজাহাজ।

শত্রুবিমান ও জাহাজ বিধ্বংসী কামান নিয়ে খুলনা শিপইয়ার্ডে দেশের প্রথম যুদ্ধজাহাজ নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য এই জাহাজা নির্মাণ করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। আজ সোমবার (৮ অক্টোবর) নৌবাহিনীর কাছে এই জাহাজ হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে নৌবাহিনী।

ইমিধ্যে একটি জাহাজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। অন্যগুলোর নির্মাণকাজ চলছে। খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্র জানায়, জাহাজটি ৫০ দশমিক ৪ মিটার দীর্ঘ, ৭ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থ এবং ৪ দশমিক ১ মিটার গভীরতাবিশিষ্ট। ওজন ২৫৫ টন। এটির গতিবেগ ঘণ্টায় ২৩ নটিক্যাল মাইল।

আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি এই জাহাজ গভীর সমুদ্রে চলাচল করতে সক্ষম। জাহাজটিতে শত্রুবিমান ও জাহাজ বিধ্বংসী ৩৭ মিলিমিটারের দুটি ও ২৫ মিলিমিটারের দুটি কামান রয়েছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। আজই নদীতে ভাসতে পারে জাহাজটি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে ২০১১ সালে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ (পেট্রল ক্রাফট) নির্মাণের চুক্তি হয় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের। চুক্তির পর ওই বছরের ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, আড়াই বছরের মধ্যে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের কথা। এর একটি আজ হস্তান্তর করা হচ্ছে। শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আরেকটি, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি এবং ডিসেম্বরের মধ্যে অবশিষ্ট দুটি জাহাজ হস্তান্তর করবে।

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অর্থ) ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২৮৮ কোটি টাকায় পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর একটির নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম যুদ্ধজাহাজ। প্রতিটি জাহাজ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা। চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় এই জাহাজ নির্মিত হচ্ছে।

এই মানের জাহাজ আমদানি করতে গেলে প্রতিটির জন্য ১০০ কোটি টাকার মতো ব্যয় হতো। খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর আর ইউ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, খুলনা শিপইয়ার্ড দেশে প্রথম যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে গৌরব অর্জন করেছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে চায়না শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড অফশোর কোম্পানি। দেশে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের ফলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হলো। তিনি আরও বলেন, ৫৫ বছর ধরে বিভিন্ন শ্রেণীর জাহাজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে খুলনা শিপইয়ার্ডে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে।

শিপইয়ার্ড চালু হওয়ার পর থেকে খুব সামান্যই লাভের মুখ দেখেছে। ১৩ বছর ধরে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড একটি লাভজন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে সুনাম অর্জন করেছে। তিনি আরও জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে খুলনা শিপইয়ার্ড এগিয়ে চলেছে। খুলনা শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ বছর খুলনায় সর্বোচ্চ করদাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে যুদ্ধজাহাজসহ আরও বড় বড় জাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

এ জন্য যে দক্ষ জনবল দরকার, তা শিপইয়ার্ডের আছে। মূলত: এই যুদ্ধাজাহাজ তৈরির জন্য সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করার প্রধান কারণ হল বর্তমান দেশে বিভিন্ন প্রকার বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের একটা অপচেষ্টা চলছে ফলে সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকার এই মহৎ উদ্্েযাগ গ্রহণ করেছে কারণ সমুদ্রসীমা পাহারা দেওয়ার মত আমাদের তেমন কোন আধুনিক সরঞ্জামাদি যন্ত্রপাতি পূর্ব থেকে নাই ফলে এই যুদ্ধজাহাজ তৈরির মধ্য দিয়ে দেশের নৌবাহিনী আরো শক্তিশালী হল এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার একটা আলাদা বেষ্টনী তৈরি হবে বলে সকলের বিশ্বাস। অতএব, বর্তমান সরকার এই জাহাজ শিল্পকে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করার জন্য চিন্তাভাবনা করছে এবং উন্নতবিশ্বে এটা আমদানি করার জন্য সর্বাতœক চেষ্টা করে যাচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশ ছোট্ট রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও এই মহা চিন্তাকে সর্বস্তরের জনগণ সরকারকে সাধুৃবাদ জানাচ্ছে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.