বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ ১৯৭১ সালের অগস্ট মাসের মাঝামাঝি রাত দশটায় কলকাতার হ্যারিংটন স্ট্রিটের ফুটপাতে ধীর এবং নিশ্চিত পদক্ষেপে হাঁটছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছিল। তাজউদ্দীন আহমদ-এর চুল এবং পরনের শার্টটি ভিজে গিয়েছে।
চশমায় বৃষ্টিবিন্ধু পতনের ফলে দৃষ্টি ঝাপসা। যদিও বৃষ্টির শীতল ফোঁটার র্স্পশে দেহমনে গভীর প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়ছিল।
তাজউদ্দীন আহমদ-এর বাঁ পাশে হাঁটছেন একজন বৃদ্ধ। বৃদ্ধের পরনে সাদা চুড়িদার পায়জামা আর মেরুন রঙের পাঞ্জাবি। কাঁধে শান্তিনিকেতনি ঝোলা।
ইনি ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী। কলকাতার বিশিষ্ট এই চিকিৎসকের বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি। মাথায় ধবধবে পাকা চুল। চোখে পুরু লেন্সের চশমা। গায়ের রংটি অবশ্য শ্যামলা।
তবে বেশ নাদুসনুসুস চেহারা বৃদ্ধের। ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর। তবে ইনি বাংলাদেশের একজন অকৃত্রিম বন্ধু। নির্বাসিত মুজিবনগর সরকারের ৮নং থিয়েটার রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে দিনরাত পড়ে থাকেন। যুদ্ধরত নতুন সরকারকে যথাসাধ্য সাহায্যের চেষ্টা করেন।
কখনও যশোর সীমান্তে গিয়ে অসুস্থ শরনার্থী কিংবা আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করেন। প্রখ্যাত চলচিত্রকার ঋত্বিক ঘটক প্রাক্তন পূর্ব
পাকিস্তানের বাঙালি শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষে করছেন। কখনও তাঁর পাশেও দাঁড়িয়ে যান ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি চিকিৎসকটি।
রাত দশটার বৃষ্টিভেজা চৌরঙ্গী প্রায় ফাঁকা। ঝিরঝির করে বৃষ্টিটা পড়েই যাচ্ছিল।
দু’জনেরই অবশ্য শ্রাবণ রাতের বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোই লাগছিল। ওদের ঠিক পিছনেই সাদা পোশাকের কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী অনুসরণ করছে। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশে প্রথম প্রধানমন্ত্রী । আজ রাতে তিনি বাইরে বেরুলেও তিনি রাষ্ট্রীয় প্রোটোকলের বাইরে নন।
দূরে হেডলাইটের আলো।
রাস্তায় পানি জমেছিল। সে পানি ছিটিয়ে একটা সাদা অ্যাম্বাসেডর হ্যারিংটন মিউজিয়ামের দিকে চলে যায়।
হ্যারিংটন স্ট্রিটটি ৮নং থিয়েটার রোডের নির্বাসিত মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী কার্যালয়ের কাছেই। ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী হ্যারিংটন স্ট্রিটের একটি ছ’তলা দালানের সামনে দাঁড়ালেন। ভবনের নাম: ‘দয়াময়ী ভবন’।
লাল রঙের ইটের তৈরি অত্যন্ত পুরনো দালানটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি বলে মনে হয়।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন,এই ভবনেই অধমের নিবাস গুরু। আসুন।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ- এর গুণমুগ্ধ। তিনি এই প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ মানুষটিকে গভীর ভাবে ভক্তিশ্রদ্ধা করেন।
বয়েসে তাজউদ্দীন আহমদ ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী-র অনেক ছোট হলেও উদার বৃদ্ধটি তাঁকে ‘গুরু’ বলে সম্বোধন করেন। কাঠের চওড়া সিঁড়ি। ম্লান আলো জ্বলছিল। সিঁড়িতে ধূপের গন্ধ। আর কেমন ঠান্ডা।
সন্ধ্যের পর থেকে একটানা বৃষ্টি হচ্ছিল বলেই।
তাজউদ্দীন আহমদ বললেন, শুনেছি কুমার শরৎ রায় কলকাতায় এলে নাকি এই দয়াময়ী ভবনেই থাকতেন স্মরণদা?
হুমম। আমিও তেমন শুনেছি। বলে মাথা ঝাঁকালেন ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী।
তাজউদ্দীন আহমদ ক্ষণিকের জন্য অতীতে ফিরে যান।
নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজপরিবারের কুমার শরৎ রায় ১৯১০ সালের এপ্রিল মাসে পূর্ববাংলার প্রথম জাদুঘর রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষনা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । বাংলাদেশে প্রত্নগবেষনার পথিকৃৎ মানুষটির উদ্দেশে মনে মনে সালাম পাঠালেন তাজউদ্দীন আহমদ।
ছ’তলায় উঠে ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন, বিশিষ্ট পন্ডিত কুমার শরৎ রায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ট বন্ধু ।
তাজউদ্দীন আহমদ বললেন, আমিও তেমন শুনেছি। সব জমিদার তাহলে জুরিগাড়ি কিনে আর পায়রা-বুলবুলি উড়িয়ে ফতে হয়ে যায়নি? বলে হাসলেন।
সেরকম হলে কি জগৎ-সংসার চলত গুরু? কলিংবেল চেপে ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন।
দরজা খুললেন মাঝবয়েসি এক মহিলা। মহিলার বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি মনে হল। গোলপানা ফরসা মুখটিতে লাবণ্য টলটল করে। মহিলার পরনে লাল পাড়ের গরদের শাড়ি।
কপালে বড় একটি লাল রঙের টিপ। খোঁপায় বেলিফুলের মালা।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন, গুরু, এ হল আমার স্ত্রীলক্ষী স্বাগতালক্ষ্মী চক্রবর্তী। আর, স্বাগতা ইনি হলেন তিনি- যার জন্য তুমি পঞ্চব্যাঞ্জন রেঁধে
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছ।
স্বাগতালক্ষ্মী ছেচল্লিশ বছর বয়েসি ঋষিপ্রতিম মানুষটির বুদ্ধিদীপ্ত মুখের দিকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইলেন।
তারপর সম্বিৎ ফিরে পেয়ে দু’হাত হাত জোড় করে মিষ্টি করে বললেন, নমস্কার। আসুন। ভিতরে আসুন।
তাজউদ্দীন আহমদ হাত জোড় করে মিষ্টি করে হাসলেন। তারপর ভিতরে ঢুকলেন।
ছিমছাম ড্রইংরুম। সাদা চুনকাম করা দেয়াল, মেঝেতে জুট কার্পেট পাতা। বেতের সোফাসেট, দুটি বইয়ের বড় আলমারি, দেয়ালে রবীন্দ্রনাথের একটি সাদাকালো ছবি, একপাশে ছোট একটি ডিভান। তার ওপর তানপুরা আর ডুগি-তবলা। আর মেঝের ওপর একটা হারমোনিয়াম।
স্বাগতালক্ষ্মী তাজউদ্দীন আহমদ-এর পদধূলি গ্রহন করতে যাবেন- ‘থাক’, ‘থাক’ বলে এক পাশে একটু সরে গেলেন তিনি। স্মরণদার স্ত্রী স্বাগতা বৌদি বয়েসে বড়। এজন্যেই হয়তো তাজউদ্দীন আহমদকে কিছুটা বিব্রত মনে হল।
একটি ছিপছিপে তরুণি কলাপাতা রঙের সুতির শাড়ি পরে গোলাপি রঙের একটি তোয়ালে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তরুণির গায়ের রং শ্যামলা; চোখে চশমা, মাথায় বেণি।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, এ আমার বড় মেয়ে। ইন্দ্রাণী। যাদবপুরে পড়ছে ফিলজফিতে। সুচিত্রা মিত্রের কাছে রবীন্দ্রসংগীত শিখছে।
মেয়েটি দু’হাত হাত জোড় করে মিষ্টি করে বলল, নমস্কার।
তাজউদ্দীন আহমদ মিষ্টি করে হাসলেন।
ইন্দ্রাণী তাজউদ্দীন আহমদ-এর দিকে তোয়ালে বাড়িয়ে দিয়ে রিনরিনে কন্ঠে বলল, কাকা, আপনি কিন্তু ভিজে গেছেন। এই নিন, মাথা মুছে নিন।
তোয়ালে নিয়ে মাথা মুছে নিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
তরুণির পাশে নীল রঙের গেঞ্জি আর কালো ট্রাউজার পরে শ্যামলামতন একটি কিশোর দাঁড়িয়ে ছিল।
ভারী মেধাবী চেহারা। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, আর এ হল আমার ছেলে শুভ। শুভব্রত। ও সিটি কলেজে পড়ছে। সায়েন্সে।
ফুটবল খেলায় খুব ঝোঁক।
শুভব্রত দু’হাত হাত জোড় করে বলল,নমস্কার।
তাজউদ্দীন আহমদ মিষ্টি করে হাসলেন।
বস, গুরু। ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন ।
তাজউদ্দীন আহমদ বেতের সোফায় বসলেন। স্বাগতালক্ষ্মী সোফায় বসে মেয়েকে চোখের ইঙ্গিত করতেই ইন্দ্রাণী ভিতরে চলে যায়। শুভব্রত বসল ওর বাবার পাশে। স্বাগতালক্ষ্মী হেসে বললেন, কত ইচ্ছে ছিল আপনাকে চারটি ডালভাত রেঁধে খাওয়াব। আপিসে কী খান না খান।
জানি ভীষণ ব্যস্ত থাকেন । তবু সময় করে আজ এসেছেন। আমি ধন্য বোধ করছি। বলে, ‘গোপা’, ‘গোপা’ বলে কাকে যেন ডাকলেন মহিলা।
ভিতর থেকে নারীকন্ঠ ভেসে এল: কি হল মা? অত ডাকচ কেন?
এদিয়ে আয় তো একবার।
সবজে রঙের শাড়ি পরা থলথলে চেহারার কালোমতন এক মাঝবয়েসি মহিলা ছুটে এল। বলল, কি বলবে বল।
পেঁপে কেটেছিস?
হ্যাঁ, মা। কেটেচি।
আর বরফকুচি?
তাও গেলাসে ঢেলেচি।
তালে যা, শরবত নিয়ে আয়।
অতিথির দিকে একবার তাকিয়ে গোপা চলে যায়।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন, সীমান্তের ওপারে মুক্তিযোদ্ধারা যা খেল দেখাচ্ছে না লক্ষী- কী বলব। হানাদার সব মেরেকেটে সাফ করে দিচ্ছে।
শুভব্রত তাজউদ্দীন আহমদ এর দিকে তাকিয়ে বলল, কাকা, শরনার্থীদের সাহায্য করার জন্য আমাদের কলেজ থেকে আমরা চাঁদা তুলছি।
নেক্সট উইকে একটি চ্যারিটি শো করছি। গৌতম চট্টোপাধ্যায় আসবেন ক্যাম্পাসে। ইনি গতবছর ‘মহিমের ঘোড়াগুলি’ নামে একটি গানের দল করেছেন। বলতে বলতে শুভব্রত খানিকটা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
তাজউদ্দীন আহমদ স্নেহের দৃষ্টিতে কিশোরের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
সারা বিশ্বের মানুষ আজ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে শরিক হয়েছে । বোম্বের ভিটি রেলস্টেশনের বুট-পালিশ বালকের দল এক দিনের রোজগার তুলে দিয়েছে মহারাষ্ট্রের বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির কাছে। তবে তাজউদ্দীন আহমদ তখনও জানতেন না যে ইংল্যান্ডের লিভারপুলের ‘লি ব্রেনান ও তাঁর সঙ্গীরা’ নির্বিচারে বাঙালি হত্যায় বিচলিত হয়ে দুটি গান লিখেছেন । অনেক কষ্ট করে একটি ছোট স্টুডিও থেকে গান দুটির ৪৮টি রেকর্ড বের করেছেন। তাজউদ্দীন আহমদ তখনও জানতেন না যে- জঁ ইউজিন পল কে নামে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষনা করা একজন ফরাসি লেখক ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর প্যারিসের অরলি বিমানবন্দরে ব্যাগে বোমা নিয়ে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৭১১ বিমানটি দখল করতে সমর্থ হবেন।
ইন্দ্রাণী আজ বিকেলে ভেটকি মাছের পকৌড়া আর বাটার ফ্রাই করেছিল। একটা প্লেটে সেগুলি এনে রাখল টেবিলের ওপর। গোপাও একটা ট্রেতে দই শরবত নিয়ে এল। ট্রেটা টেবিলের ওপর রাখল। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, সামান্য দই শরবত করেছি।
নিন।
ধন্যবাদ। বলে ঝুঁকে একটি গ্লাস তুলে নিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। এক চুমুক খেয়ে গ্লাসটা টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখলেন। স্বাগতালক্ষ্মী খেয়াল করলেন ব্যাপারটা।
মেয়ের দিকে আড়চোখে তাকালেন একবার। স্বাগতালক্ষ্মী স্বামীর কাছে শুনেছেন তাজউদ্দীন আহমদ সামান্য আহার করেন। থিয়েটার রোডের অফিসের মেস থেকে যা খেতে দেওয়া হয় তাই খান। এঁটো বাসনকোসন নাকি নিজেই ধোন। স্মরণজিৎ আরও বলেছে
তাজউদ্দীন আহমদ বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছের ঝোল খেতে ভালোবাসেন।
বেশ সময় নিয়ে ওই পদটি রেঁধেছেন স্বাগতালক্ষ্মী। ইলিশ মাছের ডিমের অম্বলও রেঁধেছেন। কিন্তু, তাজউদ্দীন আহমদ খাবেন কিনা কে জানেন। স্বাগতালক্ষ্মী দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
বাইরে এখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে।
শ্রাবণমাসে অনেক সময় রাতভর বৃষ্টি হয়। তখন কলকাতার রাস্তায় জল জমে যায়। রাস্তায় পানি থইথই করে। ধর্মতলার মোড়ে সাদা-কালো অ্যাম্বাসেডর দাড়িয়ে থাকে। সে এক দেখার মতন দৃশ্য হয় বৈকী।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, আমার বাবা কিন্তু ওপারের।
তাই নাকি? তাজউদ্দীন আহমদ এর মুখেচোখে কৌতূহল ফুটে উঠেছে।
হ্যাঁ। আমার দাদু পার্টিশনের পর ওয়েস্ট বেঙ্গল চলে আসেন । প্রথমে ব্যারাপুরে ছিলেন।
তারপরে কলকাতার তালতলায় জমি কেনেন।
তাজউদ্দীন আহমদ জিজ্ঞেস করেন, ওহ্ । তা পূর্ববাংলায় কোথায়?
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, শ্রীপুর।
তাজউদ্দীন আহমদ-এর কপালে ভাঁজ পড়ে। বাংলাদেশে শ্রীপুর নামে বেশ ক'টি জায়গা আছে।
স্বাগতাবৌদি কোন শ্রীপুরের কথা বলছেন? গাজীপুরের শ্রীপুর নয় তো? তিনি বললেন, গাজীপুরের শ্রীপুর কি? ঢাকার কাছে?
হ্যাঁ। হ্যাঁ। ঢাকার কাছে। বলতে বলতে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন স্বাগতালক্ষ্মী
আশ্চর্য! আমি ... আমি কিন্তু, ওই অঞ্চলেরই মানুষ।
তাই?
হ্যাঁ।
গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে আমার জন্ম । জানেন বৌদি, কাপাসিয়া খুব সুন্দর জায়গা । সোনার বাংলা যেমন হয়। রূপসী বাংলা যেমন হয়। বলতে বলতে কন্ঠস্বর গভীর আবেগে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, আমার এক বিধবা পিসিকে ছোটবেলায় দেখেছি। আমরা তাঁকে মনোরমা পিসিমা বলে ডাকতাম। তিনি একটা নদীর কথা বলতেন।
তাজউদ্দীন আহমদ- এর বুক ধক করে উঠল। তিনি অস্ফুট স্বরে বললেন, কি নদী?
সালদা।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। সালদা। শ্রীপুরের বুক চিরে বয়ে গেছে।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, নদী ছাড়াও মনোরমা পিসিমা কয়েকটা জায়গার নাম বলতেন।
যেমন?
যেমন মীর্জাপুর।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। মীর্জাপুর। মীর্জাপুর।
ছেলেবেলায় মীর্জাপুরে এক মেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, হ্যাঁ, আরও একটা নদীর নাম মনে পড়েছে
কি নাম?
লবণদহ।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। লবণদহ।
লবণদহ। চমৎকার নদী। শীতে ওই নদীর চরে বনভোজনে যেতাম।
ইজ্জতপুর রেলস্টেশন।
হ্যাঁ।
হ্যাঁ। ইজ্জতপুর রেলস্টেশন। আমার এক মামাবাড়ি ওখানে।
কাউলতিয়া।
হ্যাঁ।
হ্যাঁ। কাউলতিয়া। আমার এক ছোট ফুপু মানে পিসি থাকেন ওখানে।
বালু নদী।
হ্যাঁ।
হ্যাঁ। বালু নদী। চমৎকার নদী। নৌকাবাইচ দেখার মতন।
বাসন।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। বাসন। বাসন। আমার এক বন্ধুর বাড়ি বাসন।
পূবাইল।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। পূবাইল। আমার এক খালা মানে মাসীর বাড়ি পূবাইল।
টঙ্গী খাল।
হ্যাঁ। হ্যাঁ। টঙ্গী খাল। গাজীপুরের একমাত্র খাল।
খুব টলটলে পানি।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, ব্যাস। আর কিছু মনে নেই। আমি ছোট থাকতে মনোরমা পিসিমা মারা যান। আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি।
একা একা বিড়বিড় করে বলতেন পূর্ববঙ্গের কথা। আমি পুতুল খেলতে খেলতে শুনতাম। হায়, দাদু কেন যে অত সুন্দর দেশ ছেড়ে এলেন।
কেন এলেন?
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন,কী আর বলব। বাবার মুখে শুনেছি।
দেশবিভাগের পর পাকিস্তানপন্থী একদল কট্টর কাঠমোল্লা মল্লিকবাড়ি পুড়িয়ে দেবার হুমকি দিচ্ছিল। দাদু তখন ইন্ডিয়া চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। দাদুর বন্ধু মাওলানা নুরুল ইসলাম অবশ্য দাদুকে থাকার জন্য জোর করেছিলেন। বলেছিলেন, ইস্ট পাকিস্তান হইল বাঙালির রাষ্ট্র। তুমি থাক হৃদয়নাথ ।
আমরা তোমার ভিটামাটি বুক দিয়ে আগলে রাখব। আমার দাদু হৃদয়নাথ মল্লিক কেন জানি বন্ধুর কথায় ভরসা পাননি।
ঘরে নীরবতা নামল।
একটু পর স্বাগতালক্ষ্মী নীরবতা ভেঙে বললেন, ভাবলে কষ্ট হয় অত সুন্দর দেশ আজ হানাদাররা ধ্বংস করছে। ভগবান সব দেখছেন।
জানেন, আমার বড় মেয়ে ইন্দ্রাণীর স্বপ্ন না সত্যি হয়। ও ক’দিন আগে বাংলাদেশ নিয়ে ভোররাতে একটা স্বপ্ন দেখেছে ।
তাজউদ্দীন আহমদ ইন্দ্রাণীর তাকালেন। মেয়েটির মায়াভরা মুখে কেমন ঘুমঘুম ভাব। আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারীদের মুখচোখে নাকি এমন ভাব থাকে।
তাজউদ্দীন আহমদ নরম স্বরে বললেন, বলত মা শুনি, কি দেখলে ?
ইন্দ্রাণী বলল, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ।
কথাটা শোনামাত্র তাজউদ্দীন আহমদ শরীরে প্রগাঢ় বিদ্যুৎতরঙ্গপ্রবাহ টের পেলেন। পলকহীন তাকিয়ে রইলের একটি বাঙালি তরুণির মায়াবী মুখোশ্রীর দিকে। তাঁর চোখে জলের আভাস।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, অ্যাই শুভ।
এবার গুলজারের মার ঘটনাটা বল না তোর কাকাকে।
শুভব্রত বলল, ওহ্ । বলছি। আমরা যে মাঠে ফুটবল খেলি তার পাশে একটা বিহারি বসতি। বেশির ভাগই মুসলমান ঘর।
সে বসতিতে থাকে এক থুরথুরে বুড়ি। তাকে সবাই ‘গুলজারের মা’ বলে ডাকে। তো, গুলজারের মা দেশভাগের সময় যখন বিহারে দাঙ্গা বেঁধেছিল সেসময় শেখ মুজিবকে দেখেছিল। শেখ মুজিব বিহারের ত্রানশিবিরে দিনরাত খাটছেন। বুড়ির স্বামী সালামত পাঠান দাঙ্গায় নিহত হন।
তো বুড়ি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই বয়েসেও হুগলীর গাজী পীরের মাজারে যায়। সেখানে নাকি সিন্নি চড়িয়েছে। গুলজারের মার নাতী উমর আমাদের সঙ্গে ফুটবল খেলে। এসব তার মুখেই শোনা।
তাজউদ্দীন আহমদ অভিভূত হয়ে শুভব্রতর মুখের তাকিয়ে আছেন।
তাঁর চোখে জলের রেখা স্পস্ট । চশমা খুলে রুমাল বের করে চোখ মুছে নিলেন।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী স্ত্রীকে চোখের ইশারা করলেন। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, ওহ্। আসুন, খেয়ে নিই।
বলে উঠে দাঁড়িয়ে ‘গোপা’, ‘ও গোপা, বলি তোর পটল ভাজা হল?’ বলতে বলতে রান্নাঘরে চলে গেলেন।
ভাত আর ডাল ছাড়া স্বাগতালক্ষ্মী আজ মাছের পদই বেশি রেখেছেন। রুই মাছের তিনটি পদ রেঁধেছেন। রুই মাছের মালাইকারি, দো পেঁয়াজা আর পটলের দোরমা। আর রেধেঁছেন চিতল মাছের মুঠির ডালনা, কই মাছের গঙ্গা-যমুনা, নারকোল কোরা দিয়ে পার্শেবাটার পাতুরি।
পটল ভাজি, করলা ভাজি, আমের আচার। ব্যাস। মিষ্টির মধ্যে চৌরঙ্গীর বিখ্যাত রাঘব নাগ- এর দই আর বউবাজারের সন্তোষ ঘোষের রাবরী।
তাজউদ্দীন আহমদ খাওয়ার টেবিলে বসে স্তম্ভিত। বললেন, সর্বনাশ! একি করেছেন বৌদি! এত কে খাবে?
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, এ আর কী এমন? সামান্য আয়োজন।
সবই আমার বড় মেয়ে ইন্দ্রাণীই রেঁধেছে। খাওয়া আর কী বলুন। আপনি এসেছেন-এই তো অনেক।
তাজউদ্দীন আহমদ কী বলবেন বুঝতে পারলেন না। টেবিল ভরতি ভাত-তরকারি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
স্বাগতালক্ষ্মী একটা প্লেটে ভাত তুলে দিলেন। বললেন, আপনার যা ইচ্ছে তুলে নিন। আমি জোর করব না।
তাজউদ্দীন আহমদ অল্পখানি করলা ভাজি তুলে মাখতে লাগলেন।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী এই বয়েসেও খেতে পারেন।
রান্নার প্রশংসাও করছেন। শুভব্রতও বাবার সঙ্গে পাল্লা লাগালো। ইন্দ্রাণী প্লেটে অল্পখানি রুই মাছের মালাইকারি নিয়ে চামচ দিয়ে নাড়তে লাগল। খাওয়ার ইচ্ছে নেই মনে হল।
অল্পখানি ভাত খেতে তাজউদ্দীন আহমদ-এর সময় লাগল না।
স্বাগতালক্ষ্মী কী বলতে যাবেন- ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী স্ত্রীকে চোখের ইশারা করলেন। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, খাওয়া হয়ে গেল? থাক, তাহলে।
খাওয়ার পর সোফায় এসে বসলেন তাজউদ্দীন আহমদ। আরও কিছুক্ষণ এটা ওটা নিয়ে কথাবর্তা হল। শুভব্রত ঘনঘন হাই তুলছিল।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, যা, তুই শুয়ে পড়।
শুভব্রত চলে যায়। তাজউদ্দীন আহমদ ঘড়ি দেখলেন। বললেন, বৌদি আজ উঠি তাহলে?
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, যাবেন? কিন্তু আমার বড় মেয়ে ইন্দ্রাণী যে আপনাকে গান শোনাতে চায়।
ঠিক আছে মা, শোনও।
তাজউদ্দীন আহমদ বললেন। এই পরিবারটিকে তাঁর ভালো লাগছে। এদের যদি একবার কাপাসিয়া নিয়ে যেতে পারতাম। স্বাধীন বাংলাদেশের কাপাসিয়ায়!
ইন্দ্রাণী হারমোনিয়ামের সামনে বসে সাদাকালো রিডের ওপর কিছুক্ষণ আঙুল বোলালো। তার পর গাইতে থাকে -ও আমার দেশের মাটি/ তোমার পরে ঠেকাই মাথা তোমাতে বিশ্বময়ী/ তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।
গান শেষ হল। ইন্দ্রাণীর কন্ঠের মাধুর্যে তাজউদ্দীন আহমদ মুগ্ধ। সুচিত্রা মিত্রের যোগ্য শিষ্যাই বটে। বৃষ্টিটা আর থামছেই না। তাজউদ্দীন আহমদ ঘড়ি দেখলেন।
তিনি খানিকটা উদ্বেগ বোধ করেন।
স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, আজ মনে হয় না বৃষ্টি কমবে। আপনি বরং আজ রাতটা আমাদের এখানে থাকুন না।
তাজউদ্দীন আহমদ ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী-র দিকে তাকলেন। ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, থাকুন, গুরু।
বিদেশ দপ্তরকে আমি ম্যানেজ করব। আমি এখুনি নীচে গিয়ে সিকুরিটির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আসছি। বলে তিনি দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন।
স্বাগতালক্ষ্মী ডাকলেন, গোপা, গোপা!
ভিতর থেকে গোপা চেঁচিয়ে বলল, আবার কি হল শুনি?
একবার এদিয়ে আয় তো।
গোপা এসে বলল, বল, কি বলবে?
শোন, আমাদের শোওয়ার ঘরটা না ভালো করে পরিস্কার করে দে।
বিছানার চাদর আর বালিশের কভার বদলে দিস। যা।
গোপা চলে যায়। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, ও, ইয়ে। মানে, ধোওয়া লুঙ্গি আছে।
এনে দেব?
না, থাক। বলে তাজউদ্দীন আহমদ হাসলেন। বললেন, আরেকটা গান ধর তো মা।
ইন্দ্রাণী হারমোনিয়ামের সাদাকালো রিডের ওপর কিছুক্ষণ আঙুল বোলায়। তারপর গাইতে থাকে -আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি/ তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী/ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে/ তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে ... তাজউদ্দীন আহমদ টের পাচ্ছেন তাঁর শরীরের শিরায় শিরায় তরল আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি এক গভীর তীব্র আবেগ বোধ করছেন। যে আবেগের নাম দেশপ্রেম।
ইন্দ্রাণী এবার গাইছে-যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক/ আমি তোমায় ছাড়ব না মা ...
গান শেষ হতেই গোপা এল। বলল, মা, ঘরখানা বেশ করে গুচিয়ে দিয়েচি।
আচ্ছা যা।
তুই এখন শুয়ে পড়গে যা।
গোপা চলে যায়। স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, যা ইন্দ্রাণী । অরেক রাত হয়েছে। তুই্র শুয়ে পড় গে যা।
ইন্দ্রাণী চলে গেলে স্বাগতালক্ষ্মী তাজউদ্দীন আহমদ কে বললেন, গোপা শোওয়ার ঘরটা গুছিয়ে দিয়েছে। আপনি না হয় শুয়ে পড়ুন। অনেক রাত হয়েছে। ভোরে উঠতে হবে।
তাজউদ্দীন আহমদ হেসে বললেন, থাক।
রাতটা এখানেই কাটিয়ে দেওয়া যাবে।
ও আচ্ছা।
দরজা ভেড়ানো ছিল। ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী ফিরে এলেন।
স্বাগতালক্ষ্মী স্বামীকে বললেন, উনি ড্রইংরুমে থাকবেন বললেন।
ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী হেসে কাঁধ ঝাঁকালেন। বললেন, গুরু যা বলে তাইই সই। এসো। আমরা যাই শুয়ে পড়ি।
তাজউদ্দীন আহমদ সম্ভবত ক্লান্ত ছিলেন।
তিনি গায়ের শার্ট না খুলেই মেঝের ওপর টানটান হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়লেন।
বাতি নিভিয়ে দিলেন ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী ।
শোওয়ার ঘরে এসে স্বাগতালক্ষ্মী বললেন, একি! উনি তো মেঝের ওপরই শুয়ে পড়লেন!
পাঞ্জাবি খুলতে খুলতে ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন, থিয়েটার রোডের অফিসে গুরু মেঝেতেই শোন। এখানে তাও তো কার্পেট জুটেছে।
ওহ্ ।
বাট হোয়াই?
আলনা থেকে তোয়ালে তুলে নিয়ে ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বললেন, বোঝোই তো বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা দিনরাত কী দুঃসহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। এদের অবিভাবক হয়ে ইনি যদি বিলাসিতা করেন তো ঈশ্বর সইবেন?
আমি ওনাকে লুঙ্গি দিতে চেয়েছিলাম। নিলেন না।
ওনার পরনে যে ড্রেস দেখলে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওই পরে আছেন।
স্নানও নাকি করেন না। বলে বাথরুমের দিকে চলে গেলেন ডা. স্মরণজিৎ চক্রবর্তী।
স্বাগতালক্ষ্মী স্তব্দ হয়ে গেলেন। শোওয়ার ঘরের বাতি নিভিয়ে ব্যালকনি এলেন। তিনি ব্যালকনিতে চলে এলেন।
মানুষের সংসারে তো কান্না উপলক্ষ্য থাকেই। কখনও কান্না পেলে স্বাগতালক্ষ্মী এখানে আসেন। নিভৃতে কাঁদেন। বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে মধ্যরাতের চৌরঙ্গী, হ্যারিংটন স্ট্রিট, হ্যারিংটন মিউজিয়াম, ডান দিকের ক্যামাক স্ট্রিট, বর্ধন মার্কেট, বাঁয়ের সিকিম ট্যুরিজম ইনফর্মেশন সেন্টার,আরও দূরের মিডিলটন ষ্ট্রিট।
অন্ধকারে একটানা বৃষ্টির শব্দ।
অঝোর বৃষ্টির শব্দ। কেন জানি বাবার কথা মনে পড়ছে। স্বাগতালক্ষ্মীর বাবার নাম গৌড়কৃষ্ণ মল্লিক। তালতলা মহিমা বিদ্যানিকেতন স্কুলে পড়াতেন। বাবার কাছে ছোটবেলায় রামায়ণ- মহাভারত।
শুনেছেন স্বাগতালক্ষ্মী; শুনেছেন যোগীঋষিদের কথা। বালিকা জিজ্ঞেস করত, আমাদের ঋষি কে বাবা? বাবা বলতেন, কলিযুগে ঋষির আবির্ভাব সম্ভব নয় মা। কেন নয় বাবা? বাবা বলতেন দেখছিস না চর্তুদিকে কত পাপ। বিশ্বজুড়ে কেমন যুদ্ধ হয়ে গেল।
বাবার কথা মিথ্যে হওয়ায় ছ’তলার ব্যালকনিতে স্বাগতালক্ষ্মী মনের আনন্দে কাঁদছেন ... যখন ড্রইংরুমের মেঝের ওপর শুয়ে আছেন এক ঋষি ...
ঘটনাটি কাল্পনিক ...
তথ্যসূত্র:
http://fourleaders.webs.com/tajuddinahmed.htm
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।