noneed জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দশম ও সর্বশেষ সাী সৈয়দ আবদুল কাইয়ুমকে আসামিপক্ষের জেরা গতকাল শেষ হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার স্যা গ্রহণ করা হবে। গতকাল ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাী জেরা শেষ হওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তার স্যাগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।
জানা গেছে, আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মোট ৪০ জন মূল সাী ও ৯ জন অতিরিক্ত সাীর নাম ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। তাদের মধ্যে সাতজন অতিরিক্ত সাীসহ এ পর্যন্ত মোট ১০ জন সাীর স্যা নিয়েই তা সমাপ্ত করা হয়েছে।
অর্থাৎ ৪০ জন মূল সাক্ষীর তালিকা থেকে মাত্র তিনজন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে বলে বিবাদিপক্ষের আইনজীবী ফরিদউদ্দিন খান জানান। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে আসামিপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
দশম সাী সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম গতকাল জেরায় বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি যুদ্ধের পুরো সময় আমি গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ছিলাম। মিরপুরের হত্যাকাণ্ডের কোনো ঘটনাই নিজে দেখেননি। সব ঘটনাই তিনি অন্যের কাছে শুনেছেন।
১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি আমি মিরপুরে ফিরে আসার পর লোকের মুখে শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের সময় বিহারিরা সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব ও কবি মেহেরুননেসাকে হত্যা করে। ’
জেরায় সাক্ষী আরো বলেন, ‘ছাত্রজীবনে আমি ছাত্রলীগ করতাম। ’৭০-এর নির্বাচনের সময় মিরপুর এলাকায় কিছুসংখ্যক বাঙালি ছিল। তারা আওয়ামী লীগ করত এবং তাদের সাথেই আমার ওঠাবসা ছিল। জেরার জবাবে সাক্ষী বলেন, ’৭০-এর নির্বাচনে মিরপুরে তার স্কুলের ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সর্বাধিক ভোট পান।
ওই সময় মিরপুরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন একজন বাঙালি ছিলেন। ’ এ সময় প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী (অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন বাঙালি ছিলেন না, অবাঙালি বিহারি ছিলেন; এ বিষয়ে সাক্ষী ভুল উত্তর দিচ্ছে বুঝতে পেরে) সাক্ষীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি বুঝে উত্তর দেন। প্রশ্নটা কী তা আপনাকে বুঝতে হবে। সাক্ষী তখন বলেন, তিনি বাঙালি না বিহারি ছিলেন তা বলতে পারব না। সাক্ষী উত্তর পরিবর্তন করায় কাদের মোল্লার আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার বলেন, এটা খুবই আপত্তিকর।
আপনি এভাবে সাক্ষীকে অ্যালার্ট করতে পারেন না।
জেরা (সংক্ষিপ্ত)
আইনজীবী : আবদুস সোবহান তরফদার।
সাক্ষী : সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মিরপুরে আপনার স্কুলের ভোটকেন্দ্রে কী দায়িত্বে ছিলেন?
উত্তর : সম্ভবত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করি।
প্রশ্ন : ’৭০-এর নির্বাচনে আপনার ভোটকেন্দ্র থেকে কোন প্রার্থী বেশি ভোট পান?
উত্তর : আওয়ামী লীগের প্রার্থী সর্বাধিক ভোট পান।
প্রশ্ন : ’৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন বাঙালি ছিলেন না বিহারি ছিলেন?
উত্তর : বাঙালি ছিলেন। পরে বলেন, তিনি বাঙালি না বিহারি ছিলেন তা বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ছাত্রজীবনে আপনি কোন দল করতেন?
উত্তর : ছাত্রলীগ।
প্রশ্ন : এখন কি আওয়ামী লীগ করেন?
উত্তর : এখন কোনো লীগ করি না।
প্রশ্ন : ’৭০-এর নির্বাচনের সময় কোন দল করতেন?
উত্তর : ’৭০-এর নির্বাচনের সময় মিরপুর এলাকায় কিছুসংখ্যক বাঙালি ছিল, তারা আওয়ামী লীগ করত এবং তাদের সাথেই আমার ওঠাবসা ছিল।
প্রশ্ন : ১৯৭০-৭১ সালে মিরপুরে বিহারিরা সংখ্যায় নগণ্য ছিল।
উত্তর : না, বাঙালিরা নগণ্য ছিল।
প্রশ্ন : ১৯৭০-৭১ সালে মিরপুরে বিহারিরা বাঙালিদের ভালো চোখে দেখত না।
উত্তর : হ্যাঁ, ভালো চোখে দেখত না।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে কবি মেহেরুননেসা ও কবি কাজী রোজিকে চিনতেন?
উত্তর : হ্যাঁ, চিনতাম।
কবি মেহেরুননেসা তখন থেকে লেখালেখি করতেন এবং কাজী রোজি পরে লেখালেখি শুরু করেন।
প্রশ্ন : আপনি কত সালে বিয়ে করেছেন?
উত্তর : ১৯৭৩ সালে।
প্রশ্ন : ঘটনার সময় সাংবাদিক খন্দকার আবু তালিবের বাসা আপনার বাসা থেকে কত দূরে ছিল?
উত্তর : ১০০ থেকে ১৫০ গজের মধ্যে।
প্রশ্ন : আবু তালিব সাহেবের কয় ছেলে মেয়ে ছিল? তাদের নাম কী?
উত্তর : তিন ছেলেমেয়ে। তাদের নাম চঞ্চল, অঞ্জু ও দীপু।
প্রশ্ন : খন্দকার আবু তালিবের এক ছেলের নাম খন্দকার আবুল আহসান।
উত্তর : হ্যাঁ। খন্দকার আবুল আহসানই অঞ্জু, তিনি দ্বিতীয় ছেলে।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আবু তালেবের ছেলে খন্দকার আবুল আহসানের বয়স কত ছিল?
উত্তর : ১৩-১৪ বছর হবে। সে তখন কাস নাইনে পড়ত।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনি যখন বিহারিদের দ্বারা আক্রান্ত হন তখন সাংবাদিক আবু তালিব ঘটনাস্থলে আসেননি।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে ঘটনার সময় অপনার বাসায় অন্য কেউ থাকত?
উত্তর : মনির নামে একজন পিয়ন থাকত।
প্রশ্ন : ঘটনার সময় গভীর রাতে বিহারিরা যখন আপনার বাসায় ঠক ঠক করছিল ওই সময় মনির বাসায় ছিল?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ’৭১ সালের কখন আপনার স্কুল বন্ধ করেন এবং কখন খোলেন?
উত্তর : ’৭১ সালের ৮ মার্চ থেকে স্কুল বন্ধ করে দিই এবং ’৭২ সালের ৩ জানুয়ারি স্কুল খোলা হয়।
প্রশ্ন : আপনি কখন স্কুল থেকে অবসর নেন? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।