জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটাই অতিথিদের সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ২০০৬ সালে জয়পুরে ১০১ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বড় জয়ে বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার বুলাওয়ায়োর কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৬৯ রান করে বাংলাদেশ।
জবাবে ৩২ ওভার ১ বলে ১৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
ডান আঙ্গুলের চোট কাটিয়ে ফেরা তামিম ইকবালের সঙ্গে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৬৫ রানের জুটি বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দেয়। শিঙ্গারাই মাসাকাদজার বলে তামিম ব্রেন্ডন টেইলরের হাতে ক্যাচ দিলে ভাঙ্গে ১৩ ওভার ৪ বল স্থায়ী জুটি।
পরের ওভারে ফিরে আশরাফুলকেও সাজঘরে ফেরান শিঙ্গিরাই। ডিপ স্কয়ার লেগে প্রসপার উৎসেয়ার হাতে ক্যাচ দেন আশরাফুল।
দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর পর ২২তম ওভারে অতিথিদের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন শিঙ্গিরাই। সেই ওভারের প্রথম বলে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম টেইলরের ক্যাচে পরিণত হন।
পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে বিদায় নেন গত বছরের মার্চের পর প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামা সাকিব আল হাসান।
৬৫/০ থেকে ৯৪/৪-এ পরিণত হওয়া বাংলাদেশকে কক্ষপথে ফেরানোর কৃতিত্ব নাসির ও মমিনুল হকের। ‘পাওয়ার প্লে’র দ্বিতীয় ওভারের (৩৭তম) দ্বিতীয় বলে মমিনুল বিদায় নেয়ার আগে পঞ্চম উইকেটে ৭৬ রানের চমৎকার একটি জুটি গড়েন তারা।
এরপর সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৪৪ রানের আরেকটি ভালো জুটি উপহার দেন নাসির। টিনাশে পানিয়াঙ্গারার বলে ডিপ পয়েন্টে ম্যালকম ওয়ালারের হাতে ধরা পড়ার আগে নাসির করেন ৬৮ রান। তার ৬৭ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা।
নাসিরের বিদায়ের পর জিয়ার সঙ্গে ২৩ ও আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ২৯ রানের দুটি ছোট্ট কিন্তু কার্যকর জুটি গড়েন শেষ ওভারে আউট হওয়া মাহমুদুল্লাহ।
৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শিঙ্গিরাই জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শফিউল ইসলামের মারাত্মক বোলিংয়ে ১৩ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। রেগিস চাকাবভা ও অভিষিক্ত সিকান্দর রাজাকে বোল্ড করেন গত ডিসেম্বরের পর প্রথম খেলতে নামা শফিউল।
তৃতীয় উইকেটে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার সঙ্গে টেইলরের ৬৫ রানের জুটি দলকে ভালো অবস্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পনেরতম ওভারে টেইলরকে বোল্ড করে বিপজ্জনক জুটি ভাঙ্গেন রাজ্জাক।
১৫ রান পর শন উইলিয়ামস রান আউট হয়ে গেলে বড় একটা ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা।
উইলিয়ামসের বিদায়ের পর কোনো রান যোগ করার আগে আরো তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তিনটি উইকেটই নেন জিয়া।
বিশতম ওভারের প্রথম বলে হ্যামিল্টনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর চতুর্থ বলে এল্টন চিগুম্বুরাকে বোল্ড করেন তিনি। পরের ওভারে ফিরে উৎসেয়াকে মমিনুলের ক্যাচে পরিণত করেন জিয়া।
৭৮/২ থেকে ৯৩/৭-এ পরিণত হওয়া জিম্বাবুয়েক আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
শিঙ্গিরাই ও ওয়ালার এরপরও চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তা পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে কেবল।
৩২তম ওভারের তৃতীয় বলে ওয়ালারকে বোল্ড করে তাদের ৫৫ রানের জুটি ভাঙ্গার কৃতিত্বও জিয়ার। পরের বলে পানিয়াঙ্গারাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান জিয়া। পঞ্চম বলে বলে টেন্ডাই চাতারাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললেও আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে হ্যাটট্রিক হয়নি তার।
অভিষিক্ত রবিউল ইসলাম পরের ওভারের প্রথম বলে শিঙ্গিরাইকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে অতিথিদের জয় নিশ্চিত করেন।
৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা জিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার। এই প্রথম পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি।
রোববার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৬৯/৮ (তামিম ৩১, আশরাফুল ২৯, মমিনুল ৩৮, মুশফিক ৫, সাকিব ১, নাসির ৬৮, মাহমুদুল্লাহ ৩৬, জিয়া ১২, রাজ্জাক ১৬*, শফিউল ১*; শিঙ্গিরাই ৪/৫১, চাতারা ২/৫২, পানিয়াঙ্গারা ১/৪৯)
জিম্বাবুয়ে: ১৪৮ (হ্যামিল্টন ৩৮, চাকাবভা ১, রাজা ৩, টেইলর ৩৩, উইলিয়ামস ১০, ওয়ালার ১৯, চিগুম্বুরা ০, উৎসেয়া ০, শিঙ্গিরাই ৩৩, পানিয়াঙ্গরা ০, চাতারা ০*; জিয়া ৫/৩০, শফিউল ২/৩৯, রাজ্জাক ১/১০, রবিউল ১/২১)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।