আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিক্ষায় বাংলাদেশ

কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ? একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে কি? আমরা কি পারবো স্বাধীনভাবে দেশের বুকে চলাফেরা করতে? এ রকম প্রশ্ন যেন মাথার মধ্যে রাতদিন ঘুর ঘুর করে। এটি তো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, তো গনতন্ত্রের প্রশ্ন আসছে কেন? সবগুলো প্রশ্নের উত্তর- আলোচিত দুটির একটিও এখন বাস্তবে কার্যকর নয়। পাকিস্তান নামক একটি দেশ গঠিত হওয়ার পর আমাদের মনে হয়েছিল যে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে আমরা মুক্তি পেলাম। পূর্ব ও পাকিস্তান নামে দুইটি ভাগ হয়ে যেন শোষণের রাজনীতি শুরু করেছিল পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা। নিজেদের অধিকার আদায় তথা গণতান্ত্রিক জীবন পাওয়ার স্বার্থে আমাদের যুদ্ধ করতে হল।

কিন্তু? সংসদীয় গনতন্ত্রে জনগন দাবি দাওয়া উথাপনের জন্য সাংসদের তাদের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় সংসদে পাঠান । যেখানে একজন সাংসদ ও তার কর্মীরা জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন (যেহেতু জনগণের সমর্থনে তারা সাংসদ) সেখানে আমরা দেখি জনগন তাদের কাছে দাসমাত্র। দল ক্ষমতায় থাকলে দেশটা তাদের। সাধারণ মানুষ বিচার চাইতে গেলে উলটো তাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় কারণ সে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে বিচার চাইছে। বর্তমানে রাজনীতি আর জনগণের সেবা নয় বাণিজ্য হিসেবে পরিচিত।

কারণ জয়ী হলে এলাকার সব ধরণের কাজ তাদের দখলে। ফলে অবৈধ স্থাপনা আর রানা প্লাজার মতো ঘটনা আমাদের কাছে এক সাধারণ ব্যাপার। জনগণেরও এই সব ঘটনা সয়ে গেছে । সব মিলিয়ে আমরা এখন আর স্বাধীন নয়, যেন এক অভিজাততন্ত্রের জাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ নাগরিক। তবে যাই হোক এখন আমাদের দেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় আগামী নির্বাচন।

নির্বাচনকে সামনে নিয়ে একটা জোর প্রস্তুতি চলছিল দেশে এবং বিদেশে। বেশ সরগরম চললেও কিছু দিনের জন্য পরিবেশ একটু ঠাণ্ডা। কারণ সব দলই এখন তাকিয়ে আছে সিটি করপোরশনের নির্বাচনের দিকে। সিটি করপরশনের নির্বাচনের পরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন যেন এখন মরুভুমির বালির মাঝে সিলিকার মত মূল্যবান ও দুর্লভ বস্তুর মতো হয়ে যাচ্ছে।

কারণ কোন দলই এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারে নি, কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে? সরকারী দল নানা অজুহাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে, আর সরকারী দল ঐ পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন করবে না। কিন্তু যে পদ্ধতিই হোক তা তো সংলাপ বা আলোচনার মাধ্যমে হতে হবে। শিক্ষিত মহল থেকে বারবার দুই নেত্রীর সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই সংলাপ কতটুকু ফলপ্রসূ হবে? যেখানে দুই নেত্রী সবসময় একে অপরের বিপরীত পথে চলেন সেখানে কিভাবে একটি সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব। অবস্থা এমন যে সরকারী দল লবণ বললে বিরোধী দল বলেন চিনি, সরকারী দল সূর্য বললে বিরোধী দল বলে চাঁদ।

এই যদি অবস্থা হয় (যদিও হওয়ার দরকার ছিল ভালো সিদ্ধান্তের সমর্থন ও ভুল হলে বিরোধিতা করা) তাহলে সংলাপ শেষে সময়ক্ষেপণ ও চা নাস্তা ছাড়া কোন সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কিন্তু কিভাবে? আমার মনে হয় যেখানে দুই নেত্রীর সংলাপের সম্ভবনা অকল্পনীয় সেখানে দলের অভিজ্ঞ, ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা এগিয়ে আসতে পারেন। যেহেতু তারা রাজনীতিতে অনেক অভিজ্ঞ সেহেতু তারা দেশের কল্যাণে দলের অন্য সদস্যদের নিয়ে বিরোধী দলের সাথে বসে একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারেন। দলের অধিকাংশ সদস্যদের সিদ্ধান্ত হয়তোবা দলের প্রধান অগ্রাহ্য করতে পারবেন না কারণ সকল সদস্যদের নিয়ে একটি দল।

সব মিলিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে এসে সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণকে উপহার দিতে হবে। তা না হলে জনগণও তার প্রত্যুত্তর দেবে। কারণ সব দলকে মনে রাখতে হবে এই জনগণ যেমন কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারে আবার ইচ্ছে করলে কাউকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.