আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগে সিনিয়র-জুনিয়র আজাইরা কনসেপ্ট

যখন থামবে কোলাহল

মাঝে মধ্যে দেখি কোন ব্লগার যদি কোন লেখা লেখে কিংবা কারো পোষ্টে কমেন্ট দেয় যা অন্যের মন মত হয় নাই, ঐ ব্লগারের ১৪ গুষ্টি উদ্ধার কইর্র্যা ফেলানো হয়। ব্লগে কত দিন হইল আইছো, ৩ মাস ব্লগে আইস্যাই ফালাইতাছো, নয়া পাগলা, আমি আইজ সাড়ে দুই বছর ধইর‌্যা লেখতাছি ইত্যাদি আজাইরা নাবালকসুলভ কমেন্ট করে। তাদের এইসব আজাইর‌্যা প্যাচাল যে নতুন ব্লগারদের কতটা পিছিয়ে দেয়, সামুর উপরে অধিকারবোধ কতটা কমিয়ে দেয়, কত সৃষ্টিশীলতার অপচয় ঘটে সেটা ঐ আবালদের মাথায় ধরে না। আবার এমনও দেখা যায় যে, অমুক ভাই কিংবা তমুক আপা সিনিয়র ব্লগার হিসেবে চিহ্নিত হন এবং কারো ব্লগে কমেন্ট করলে সেই ব্লগার বর্তাইয়া যান। বুঝতে পারি না এই সিনিয়ারিটি কি বয়সের নাকি অন্যান্য কিছু? যদি মনে করি পাকা হাতের লেখকদের সিনিয়র বলা হয়, তা কিন্তু গ্রহনযোগ্য না।

যেকোন লেখা লেখকের সন্তানতুল্য। লেখার কাচা-পাকা ভাব খুবই আপেক্ষিক বেয়াপার। সুতরাং আমার মেয়ে কালো হইলে তার জামাই জুটবো না এইটা কি গ্রহনযোগ্য কথা হইলো? তবে কি যারা বেশী দিন ধরে লেখতেছেন তারা সিনিয়র? আইজ যদি কবিগুরু বেঁচে থাকতেন আর আমার পরে ব্লগ লিখতে শুরু করতেন তাহইলে কি পারস্পরিক তুলনায় তিনি জুনিয়র ব্লগার আর আমি সিনিয়র ব্লগার খেতাব পাইতাম? আবার যদি বয়সের কথা বলা হইয়া থাকে তাইলে তো বলতে হয় ব্লগ হলো নিজের ভাবনা, কর্ম, সৃষ্টিগুলোকে অন্যের সাথে শেয়ার করা, কখনো বিদগ্ধ পাঠকের আয়নায় নিজের কাজগুলোকে যাচাই করে নেয়ার অনন্য এক প্রযুক্তিগত প্লাটফর্ম। এইটা কাউরে কদমবুসি করনের জায়গা না। উদাহরন - ১ঃ একবার কবি ও গীতিকার দেহলবি-র সাথে কথা হইতেছিল।

বলছিলাম বড় ভাই হিসাবে ছোট ভাইয়ের লেখা গানগুলোর দিকে একটু নজর রাইখেন। তিনি বলছিলেন সৃষ্টিশীলতার জগতে সিনিয়ার-জুনিয়ার কোন ব্যাপার নাই। যদি থাকতো তবে সব বুড়ারাই কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী কিংবা চিত্রকর হইয়া বইস্যা থাকতেন। তরুণরা শুধু অপগন্ডই থাকতো। সুতরাং কাম চালাইয়া যাও, ভাল কাম করলে এমনিতেই প্রকাশিত হইবা, না হইলে আমারে দিয়াও কোন কাজ হইবো না।

হের তাৎক্ষণিক চিন্তাপ্রসুত কমেন্টে খুব শরম পাইছিলাম। সেই থেকে আইজ পর্যন্ত এ লাইনে আর কাউরেই বড়ভাই বানাই নাই। আমার সৃষ্টির জগতে আমিই বড়ভাই। উদাহরন - ২ঃ আমাগো লগের এক পইসাওয়ালার পোলা এলাকার বড়ভাইগো লগে ঘুরতো । হে আমাগো সামনে বড়ভাইগো লগে বিড়ি সিগারেট এমনকি গাঞ্জা-ফেন্সিও টানতো আর টেরাইয়া টেরাইয়া চাইয়া চোখ দিয়া বুঝাইতো দেখ আমি কি জিনিস! কাগো লগে গাঞ্জা টানি! বড়ভাইরাও মাগনা সাপ্লাই পাওনের আশায় হেরে ভাজ দিয়া চলতো।

আইজ পয়সার অভাবে বড়ভাইরা গাঞ্জা-ফেন্সি ছাইড়া আধবুড়া হইছে, আগের সেই তেজ নাই আর ঐ পোলা নেশা খাইয়া ক্লীব লিঙ্গ হইছে। সস্তা সিনিয়র-জুনিয়রগিরিও ছুটছে। কি উদ্দেশ্যে এই পাওয়ার স্ট্রাকচার তৈরী করা হইতাছে তা পরিস্কার না। ব্লগে রাজনীতি করবো ? ভোটে দাড়াইবো? বছরের সেরা ব্লগার নির্বাচিত হইবো? সামুতে নতুন কোন বিষয় আইবো যা ইর্ন্টানালি হেরা খবর লইছে? কে জানে কোনটা? সিনিয়র-জুনিয়রের আজাইরা এই কনসেপ্ট ব্লগারদের মইধ্যে একপ্রকার বৈষম্য তৈয়ার করে। যেকোন বৈষম্যই পরিত্যাজ্য।

হায়রে বাঙগালী সমাজের বৈষম্যমূলক আচরন! একবিংশ শতকের আধুনিকতম প্রযুক্তি ইন্টারনেটরেও ছাড়লি না!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.