আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুমনুসংলাপ- (মধুচন্দ্রিমায় মধুর প্রতিশোধ!!)

"You may like a situation which is not good for you And You may dislike a situation which is good for you." (Al- Quran)

এই সংলাপ পড়ার আগে মধু খাওয়া সংলাপটি পড়তে হবে। (--- চিহ্নটি ছেলে এবং = চিহ্নটি মেয়ে নির্দেশক) =এ্যাই সেদিন মধু খাওয়াবো বললাম আর তুমি বাঁচি-মরি করে আমার সঙ্গে ছুটলে কেন??? তোমার যদি নৈতিকতা থাকত তাহলে অন্তত একবার তো বলতে পারতে যে তুমি যেতে চাও না বা কিছু !! ---তুমিও কেমন মেয়ে?? তুমি মধু খাওয়ার প্রস্তাব দাও কেন ? =আরে আমি তো জানি আমি বাজারের মধুর কথা বলেছি !! আর মজা জমানোর জন্য হোটেলের কথা বললাম !! ---আমিও মজাটা শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য সেখানে গিয়েছি !!! =তুমি কীভাবে জানলে যে আমি মজা করব !! ---তুমি কী মনে করেছ আমি তোমাকে চিনি না !! তুমি যে ঐ প্রস্তাব দেয়ার মেয়ে না তা কী আমি জানিনা ভেবেছ !! আমি শুধু শেষটা দেখতে চাইছিলাম... আর আমি শেষটা দেখতে না চাইলে তো মজাটা জমত না তাই না!! =হুঁ তা অবশ্য ঠিক !! ---তবে তুমি মজা করে হোক আর যে করেই হোক আমাকে বোকা বানিয়েছ !! আমিও ঠিক করেছি তোমাকে একবার বোকা বানাব !! =তাই না কী খোকাবাবু !! ---তবে বিয়ের আগে মনে হয় সেটা সম্ভব নয় !! =আমকে বোকা বানানো অত সোজা না !! ---তবে আমি যে প্ল্যান করেছি তাতে তুমি হারবে এবং সেদিনের প্রতিশোধ নিতে পারবো... =বেস্ট অব লাক !!! আমি তো চাই তোমার মাথায় কিছু বুদ্ধিশুদ্ধি হোক!! (ছেলেটির মাথায় একটা প্ল্যান এসছে ...প্ল্যানটি করা হয়েছে বিয়ের কিছুদিন পরের কথা চিন্তা করে...প্ল্যানটি যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে এরকমই হবে... ---এই চলনা একটু কোথাও একটু ঘুরে আসি !! মেয়েঃ তোমার হল কী !! কয়দিন আগে না কক্্রবাজার থেকে হানিমুন সেরে আসলাম !! তোমার স্বভাবে তো লোভ জিনিসটা ছিল না ! এ জিনিস কোথা হতে আসল !! ---আরে সেজন্য না । আমি একটা জায়গা জানি যেখানে একেবারে শতভাগ খাঁটি মধু পাওয়া যায় !! চল সেখান থেকে বেড়িয়ে আসি...আর জায়গাটা ও খুব সুন্দর !! মেয়েঃ দেখি চিন্তা করে ... ছেলেটির একটা ধারণা মেয়েটি রাজী হবে সেখানে যেতে...এবং সে তার প্রতিশোধের খুব কাছাকাছি চলে যাবে !! এভাবেই তারা দুজন নিজেদের একটি বাংলোয় আবিষ্কার করবে...জায়গাটা যেহেতু ছেলেটির চেনা তাই সে জানত জায়গাটি মেয়েটির পছন্দ হবে !!! =জায়গাটা তো দারুণ !! ---হুঁ... =তুমি এর আগে এসেছিলে ? ---হ্যাঁ... তখনই ঠিক করেছিলাম বিয়ের পর একবার ভরা পূর্ণিমায় এখানে আসব...আজ ভরা পূর্ণিমা !! =তোমার সব কিছু প্ল্যান করা তাই না ? ---একটু পর উপলব্ধি করবে প্ল্যান কত নিখুঁত! =হুমম... রহস্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে !! রাতের খাবারের পর---- =এই তুমি না বলেছিলে এখানে খাঁটি মধু পাওয়া যায় !! মধু কী আনা হয়েছে ?? ---চল ছাদে যাই ! পুরো একটা চাঁদ আকাশে উঠেছে... (এরপর তারা ছাদে উঠে যায়...) মেয়ে ঃ আহ! কী অসাধারণ সুন্দর জোছনা !! তোমাকে স্পেশাল থ্যাঙ্কস্ ! আমি তো প্রথমে আসতে চাই নি !! আচ্ছা তুমি তো কবিতা -টবিতা লিখ...আমার এমনিতে কবিতা ভাল লাগে না !! তবে এখন শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে...তোমার লেখা বলতে হবে..এ জনমে বই বের করতে পারবে কী না সন্দেহ...আমাকেই শুনাও... ছেলেঃ তাহলে ছোট্ট একটি অণুকাব্য-- হৃদয়ের নদী ভরে যাবে আজ আকাশে শুরু হয়েছে ভরা জোছনার সাজ ! =এত ছোট হলে তো হবে না !! ---আর একটা তবে এটাও বড় না... জোছনা ভরা রাতে তোমার সাথে থাকতে ইচ্ছে করে-- আমার অসংখ্য কাজ তোমার সীমাহীন লাজ দুটো মন তাই গুমরে গুমরে মরে!! =আরে এটা তো বিরহের হয়ে গেল!! এই রোমান্টিক পরিবেশে বিরহের কথা শুনতে কী ভাললাগে!! রোমান্টিক একটা শুনাও... ---তাহলে তো আর আমার লেখা কবিতা নাই !! কবি ধার করে বলি... বৈকুন্ঠ মল্লিক এর একটি অমর কবিতা... “আহা! দেখ চাঁদের মহিমা কভূ বা সুগোল রৌপ্যথালি কভূ আধা কভূ সিকি কভূ একফালি যেন সদ্য কাটা নখ পড়ে আছে নভেঃ সেটুকুও নাহি থাকে,যবে আসে অমাবস্যা-- এ রাতে তুমি তাই অচন্দ্রমস্পর্শা!! =জটিল কবিতা! ---এটা তো সোজা সরল কবিতা ! জটিল বলছ কেন ? =আরে বোকা এ জটিল সে জটিল না !! কোন কিছু খুব ভাল হলে আমরা এ প্রজন্মের ছেলে - মেয়েরা সেটাকে জটিল বলি !! ---আমিও তো এ প্রজন্মের !! আমি বলি না কেন! =কারণ তুমি ভুল করে এ প্রজন্মে চলে এসেছ!! আচ্ছা যাই হোক বৈকুন্ঠ মল্লিকের কবিতাটার সবচে’ সেরা লাইন...“যেন সদ্য কাটা নখ পড়ে আছে নভেঃ” কী উপমা !! পারবে এরকম অসাধারণ উপমা দিয়ে কবিতা লিখতে ?? যেদিন পারবে সেদিনই বই ছাপানোর আশা করো !! ---সত্যিই উপমাটা অমর!! আধফালি চাঁদ ঠিক কাটা নখের মতই দেখায়!! =আচ্ছা ভাল কথা আমাকে খাঁটি মধু খাওয়ানোর কথা ছিল !! কই মধু !! ---তোমার মনে পড়ে একবার আমাকে মধু খাওয়ানোর কথা বলে বোকা বানিয়েছিলে !! =কী করে ভুলব বল !! আমার মনে হয় প্রতিটা খুঁটিনাটি ঘটনাই আমার মনে আছে ! আচ্ছা !! তুমি না তার প্রতিশোধ নিবে বলছিলে... তাহলে এখানে আমাকে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আনা হয়েছে!! তোমার মাথায় তো আসলে বুদ্ধি আছে !! আগে মনে হত তোমার বুঝি মাথাই নাই !! আমি তো তোমাকে এপি’র মধু খাইয়েছিলাম !! তুমি আমাকে না কী খাঁটি মধু খাওয়াবে !! কই তোমার মধু!! ---আকাশের দিকে তাকাও !! =মধু আজকাল আকাশে থাকে না কী ! মাথা তো আসলেই তোমার নাই!! ---তুমি আমাকে হ্যান্ডশেক করিয়েছিলে! তার উল্টা তুমি কী আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে !! (মেয়েটি জড়িয়ে ধরে) আকাশের দিকে তাকাও...আজ ভরা জোছনা। এটাকে চন্দ্রিমা ও বলতে পার !! তুমি আমাকে বাজারের মধু খাইয়েছিলে !! আমি তোমাকে “মধু+চন্দ্রিমা ”= “মধুচন্দ্রিমা” দিলাম ... হয়ত এটাই আমার প্রতিশোধ !!! মেয়েটি ছেলেটিকে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে...“হুঁ ভাল প্রতিশোধই নিলে !! অন্যভাবে বলা যায় “মধুর প্রতিশোধ”!!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.