আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মানস চৌধুরীর পোস্ট পড়ে গলায় কাটা বিধেই গেল

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

টিভির সামনে বসে রাতের খাবার গ্রহণের আয়েশটা আমার সদ্য – সে অর্থে সদ্যের ব্যপ্তিকাল আট/দশ বছর। ধরুন মাছের কাটা সহ একটা গ্রাস মুখে পুরে কাটা নির্বাচনের জন্য মধ্যমা অঙ্গুলির নির্ভুল চয়নে একমাত্র ছেদ ঘটাতে পারতো, মানে যে ভিজুয়াল প্রদর্শনী ছেদ ঘটাতে পারতো, তার দেখা কদাচিৎ মিলতো। তবে মাঝেমাঝে কাটা যে গলায় আটকে যেত না তা নয়, কিছু দৃশ্যের চিত্রায়ন দেখে হা করে ঢোক গিলতে গিয়ে ভুলে যেতাম মাছ চিবুচ্ছি। তবে এর আগে আমার বইয়ের পৃষ্ঠা খুলে খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস ছিল। বিশেষতঃ সেই সব লেখা মাছের কাটাকে শত্রু হিসাবে পরিগন্য করাতো যার মতই মানস চৌধুরী লেখেন।

কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কি পড়তাম তার কোন হিসাব নাই, স্মরণ নাই, স্মৃতি নাই, রোমান্থন নাই – আপতত এমনটা পরিদৃশ্য হলেও এ যে নেহায়েতই অমূলক প্রমাণ করে দিচ্ছি হাতে নাতে। ক্লাস নাইনে আমি বানান করে পড়েছিলাম বায়রনের ডন জুয়ান। সেই উত্তেজনা টের পাই এখনও। দীর্ঘকাল যাবত কোনপ্রকার গদ্যের রাসায়নিক আমাকে গলায় কাটা বাধতে বাধ্য করে নাই। হু‍, কবিতা পেড়েছে।

প্রেয়শী কবিতা লিখলে তা আমার কাছে অনবদ্য সৃষ্টি বলে মালুম হয়। এটা একদম ম্যানিপুলেটেড। তবে এর বাইরে কিছু কবিতা পড়ে আমার ডিকশনারী ঘাটতে ঘাটতে চোখে মুখে বিষম গিলতে হয়েছে। টেনিসন, ইয়েটস আর মারভেল তো অক্ষর মেপে পড়তে বাধ্য করার সর্দার ছিল। যখন আমি বিচিত্র সব টেস্ট জিভে পরখ করার পায়তারা করছি তখন মাত্র বাংলা কবিতার পাঠ শুরু, স্বভাবতই লিখতে গিয়ে – এবং বলে নেই এ সময়ে শামসুর রহমানকে আমার মনে হতো প্যনপ্যানানী বিযুক্ত একটা বিশাল সম্ভারের মালিক।

এরপরে মূলত আমি পাঠকই। এবং আবারো এ মুহূর্তে কোন কোন কবির কি কি কবিতা পাঠ হলো – এসব সূচীপত্র রচনায় আমি স্মৃতিভ্রমের শিকার। তবে নেহায়েতই কিছু একটা ঝটকে, কোন অচৈতন্যের ঘোরে দুটো লাইন বেরুলে এমন হয়তো হতেও পারে – বড়লোকের সাথে আমি মিশবার চাই; শব্দ, বাক্য আর চেতনায় এর প্রভাব আমাকে গলায় কাটা বিধতে সাহায্য করেছে। তবে ইদানিং মানে ঐ আট/দশ বছর আমি টিভি দেখে ভাত খাই। টিভিতে পরিপাটি দৃশ্যায়নে আহামরি গ্লামার থাকলে আমার প্লেটে হাত স্থির থাকে।

এমন গ্লামার আছে মানস চৌধুরীর লেখায় নিঃসন্দেহে। আচ্ছা, আমি যে এসব কথা বলছি, এসবই আমার ব্যক্তিগত ভাবনার রাজ্যের দু’চারটে প্রকাশ – সেটা নিশ্চয়ই কেউ আবার উল্টো বুঝতে শুরু করেন নি! আপনাদের নিশ্চয়ই এটা মনে হচ্ছে না যে আমি জাতির প্রতিনিধিত্ব করছি অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের যার অভিমতকে সার্বজনীন ভাবার রাষ্ট্রীয় বিধিলিপি তৈরী হয়েছে। তো যা বলছিলাম। আমার এমন মনে হয় যে অটুট একটা পরিনতি আছে তার গদ্যে। মানে যা বলতে চাইলেন তা শেষাবধি পেরেছেন।

ফলে মানস চৌধুরীর পোস্ট পড়ে গলায় কাটা বিধেই গেল। উদ্যোগটা সংখ্যাগরিষ্ঠকে সামনে রেখে বটে – কারণটাও অনুমেয়, সংখ্যাগরিষ্ঠকেই ম্যানিপুলেশনের আগ্রহ এবং এর কারণ আবিষ্কার নিঃসন্দেহে যে কারো ব্যক্তিগত অনুসন্ধানে ভিন্ন ভিন্ন হোক সেই সুযোগটা উন্মুক্ত রাখাটা আসলে আয়োজকদের প্রয়োজনও। তবে আয়োজনটা ব্লগের কর্তৃপক্ষের নয়, ব্লগারদেরই। মানে কয়েকজন উৎসাহী ব্লগারদের। নো-খারিজ অপসনের সুযোগে এটাকে নয়া সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি প্রদানও যার উৎকট (?) লক্ষ্য।

তবে একদম নিরীহ একটা বিষয় আদপে, ভার্চুয়াল আর বইয়ের প্রভেদ ও ব্যবহার এখনও আলাদাভাবে অস্তিত্বময়। যার জন্য একদম থিমেটিক একটা এপ্রোচ নিয়ে কয়েকজন ব্লগার বই প্রকাশে উৎসাহী হলেও ব্লগের শক্তিমত্তা জায়গাগুলো খর্ব হবে না – বিশেষত পূর্বের অভিজ্ঞতায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বই তেমন প্রভাব ফেলেনি। সেজন্য কাটা বিধলো। এমন কাটা বিধতে তো পছন্দ করি, গোস্বা করার কোন উপায় নাই। কিন্তু আমি নিশ্চিত আছি, আপনাদের দোয়ায়, কী বিষয়ে আমি কথা বলছি (যেমন এটাকে উদ্ধৃতি হিসাবে নির্বাচন করা আমার এখতিয়ারভূক্ত, উৎসের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া ব্যক্তিবিশেষে অপ্রয়োজনীয়)।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.