আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিলিমিলি ভোর - (৭ই নভেম্বরকে নিয়ে একটা শিশুতোষ উপন্যাস)

সুন্দর সমর

(সাতই নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিবস। একদলীয় বিভীষিকাময় দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে সিপাই জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেয়ার এই দিন। আজকের বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে শত ফুল হাজার ধারায় ফুটছে , বহু সংবাদ মাধ্যমের বিকাশ ঘটছে, লক্ষ মানুষের মত প্রকাশের যে ধারা যাত্রা সূচিত হয়েছে তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে এই দিবসে। সে কথা অনেকেই ভুলে গেছেন, কেউ কেউ তা ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্যুতিময় প্রভাতের বিকাশই কেবল ঘটেছে।

আধার পালিয়ে গেছে বারেবারে। তবুও অন্ধকারের কাপালিক প্রভু এবং তাদের চেলারা নিবৃত্ত হননি। আজও তারা ওত পেতে থাকেন। আজও তারা কৃষ্ণ নি:শ্বাসে ডুবিয়ে দিতে চান মানুষের বিজয় গাথাকে। অন্ধকারের প্রভুদের অতীত এবং চলমান অপচেষ্টার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হল শিশুতোষ উপন্যাস ঝিলিমিলি ভোর।

আজ তার ১৭তম পর্ব পরিবেশিত হল। ) ১৭তম পর্ব এখন অজগর সাপের মতো লম্বা এক দুপুর পড়ে আছে। কি করা যায়? আম্মু গল্প শোনাবেন না। তারচেয়ে আম্মুর সাথে আম্মু আম্মু খেলা অনেক মজার। ঝিনু আম্মু হয়ে যায়।

সে সময় আম্মু ঝিনুকে আম্মু আম্মু বলে ডাকেন। আর ঝিনু আম্মুকে ঝিনু ঝিনু বলে ডাকেন। খেলার সময় ঝিনু বেশ ভারিক্কি চালে আম্মুকে বলে, -‘এ্যাই ঝিনু শোন। ’ - ‘জ্বি আম্মু । ’ এসময় আম্মু ঠিক ঠিক ঝিনুর মতই জবাব দেন।

-‘দুপরু বেলা হই চই না করে হোমটাস্কের খাতা নিয়ে এসো। যাও। ’ আম্মু আর কি করবেন। ঝিনুর কথা মেনে চলতে হবে নইলে যে খেলার মজা খতম। তিনি ঝিনুর স্কুলের বাক্স নিয়ে আসেন।

এবং বই খাতা বের করে হোমটস্ক করতে বসেন। -‘আম্মু অংকটা মিলছে না। ’ আম্মু বেশ ঝিনু ঝিনু স্বরে বলেন। -দাঁড়াও তো দেখি মিলিয়ে দেই। ’ ঝিনু অংক কষতে থাকে।

আটে দুইয়ে দশ নামল শুন্য হাতে থাকে এক.... ব্যস মিলে গেছে অংকটা। দেখতো ঠিক আছে কিনা। ’ আম্মুর মতই খূশী খুশী স্বরে ঝিনু বলে। --‘যা আজকে তোর ছুটি । এখন গল্প শোনার পালা ।

হোমেটাস্কের টং টং বাজিয়ে দেয় ঝিনু । ঝিনু রুপী আম্মু ঝটপট খাতা কলম গুটিয়ে উঠে পড়ে। আম্মু রুপী ঝিনুর মাথায় যে ছাই নতুন গল্প আসছেনা। পুরান গল্প শোনাতে গেলেই ঝিনুরুপী আম্মু বলবে ইশ ফাঁকি দিচ্ছ কেন। ও গল্প আমি জানি ইশ।

তারচে এক কাজ কার যাক, ঝিনুরুপী আম্মুর মাথায় বুিদ্ধ গজিয়ে যায়। -‘শোন ঝিনু তোকে আমি রোজ রোজ গল্প শোনাই আজকে তুই আমাকে গল্প শোনাবি। ’ আম্মু মাথা নাড়েন । ঠিক ঝিনুর মতই মাথা দুলিয়ে হাত দুলিয়ে গল্প বলতে থাকেন। ঝিনু যখন অনেক বড় হবে শাড়ি পড়ে কথা বলতে তখন এ্যাই আজকের আম্মুর মতই দেখা যাবে।

তাই না । ঝিনু ভেবে ভেবে আনন্দ পায় । ঝিনু গল্প শোনার ফাকে ফাকে আম্মুর চুলে বিলি কেটে মিছে মিছি উকুন খোজার ভান করে। ঝিনু একদম পুরো দস্তুর আম্মু সেজে গেছে আরকি। আম্মুর ভাবভঙ্গি হুবহু নকল করতে পারছে।

ঝিনুর মাথায় আম্মুর মত চুল নেই এই যা। মেজ আপার মাথা বোঝাই আম্মুর মতই বড় বড় ঘনচুল। কিন্তু আপার মাথায় বাদরের পশমের মত এ্যাই চারটে চুল। তবুও ভাগ্য ঝিনুর অমন চুল হয়নি। আম্মুর মত অত না হলেও ঝিনুর মাথায় অনেক চুল।

ঝিনু এখন আচার খেতে ই্েছ হচ্ছে। কিন্তু মুশকিল হলো ঝিনু যে এখন আম্ম সেজে আছে। খাবে কি করে। আম্মুরা কারও কাছে খেতে চাইতে পারেনা। আম্মু কখনো গবগবিয়ে আচার খায় না।

ঝিনু রুপী আম্মুর গল্প বলা থামিয়ে দেয় ও। তারপর জানতে চায়, -হারে ঝিনু তোর কি আচার খেতে ইচ্ছে হচ্ছে? ত হলে যা তো লক্ষী মেয়ে আচারের বয়াম নিয়ে আয়। আচারের বয়াম হতে বের করে আম্মুকে খানিকটা আচার দিতে দিতে ঝিনু বলে -‘ দেখত আচারটা কেমন হল। ’ বড় এক টুকরা আচার নিজের মুখে পুরে টকাস টকাস করতে থাকে। সে সময় ঝিনুরুপী আম্মু বলেন, -‘এ্যাই আম্মু আচারে যেন কেমন শেতলা পড়েছে রোদ দেয়া হয়নি কত দিন?’ তার মানে ঝিনু বোঝে আম্মু বলতে চাইছেন আচার রোদে দেয়া দরকার।

-‘ঠিক বলেছিস আচ্ছা খাওয়া শেষ করে বাইরে রোদে দিয়ে আসবি। ’ কথাটা বলে মনে হয় এই ভর দুপুরে আম্মরু বাইরে যাওয়া মোটেই ভাল দেখায় না। বলা কথা ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বলে, -‘থাক আমিই দিয়ে আাসব তুই যা চঞ্চল বাবা ! যদি তোর হাত ফসকে পড়ে যায় তো সবটা আচারই নষ্ট হয়ে যাবে। ’ ঝিনুর শেষের কথায় আম্মু খুশি হয়ে উঠেন। যাই হোক ঝিনুর বেশ বুদ্ধিশুদ্ধি হচ্ছে।

কোন কোন দিন খেলার সময় ভাইয়া ভাইমনি এস হাজির হন। তাতে খেলার মজা Íও বেড়ে যায়। ঝিনু ভারিক্কি গলায় আম্মুকে বলে যাওত তুমি ওদের খেতে দিয়ে এস। ছেলেরা সব তেতে পুড়ে এসেছে । ’ ভাইমনি হঠাৎ হঠাৎ খেলায় যোগ দেন।

ঝিনুকে প্রশ্ন করেন, -‘ এ্যাই বড় আপা তোর আর ছেলে মেয়েরা কই?’জবাবে ঝিনু বলে, -‘ আরে তোর যে কথা। আমার আর ছেলে মেয়ে কই? ছেলে মেয়ে দুটো । এইত মেয়ে। ’ আম্মুকে দেখিয়ে দেয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.