আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিলিমিলি ভোর - (৭ই নভেম্বরকে নিয়ে একটা শিশুতোষ উপন্যাস)

সুন্দর সমর

(সাতই নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিবস। একদলীয় বিভীষিকাময় দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে সিপাই জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেয়ার এই দিন। আজকের বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে শত ফুল হাজার ধারায় ফুটছে , বহু সংবাদ মাধ্যমের বিকাশ ঘটছে, লক্ষ মানুষের মত প্রকাশের যে ধারা যাত্রা সূচিত হয়েছে তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে এই দিবসে। সে কথা অনেকেই ভুলে গেছেন, কেউ কেউ তা ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্যুতিময় প্রভাতের বিকাশই কেবল ঘটেছে।

আধার পালিয়ে গেছে বারেবারে। তবুও অন্ধকারের কাপালিক প্রভু এবং তাদের চেলারা নিবৃত্ত হননি। আজও তারা ওত পেতে থাকেন। আজও তারা কৃষ্ণ নি:শ্বাসে ডুবিয়ে দিতে চান মানুষের বিজয় গাথাকে। অন্ধকারের প্রভুদের অতীত এবং চলমান অপচেষ্টার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হল শিশুতোষ উপন্যাস ঝিলিমিলি ভোর।

আজ তার ৮ম পর্ব পরিবেশিত হল। ) অনেক রাতে একবার ঘুম ভাংগল ঝিনুর। চোখ মেলে দেখে আব্বু ভাইমনি সবাই রেডিও ঘিরে বসে। রাত যে এখন অনেক। ঝিনু বুঝতে পারে।

রাস্তা থেকে কোন শব্দ ভেসে আসছে না। হৈ চৈ কমে গেছে। কিন্তু ঝিনু ভেবে পায়না । দেশের হলোটা কি। এই রেডিও বন্ধ থাকছে।

এই আবার চলছে তো চলছেই। শেষ হবার নাম নেই। সবই দারুণ বিচ্ছিরি। পাশ ফিরতে ফিরতে ভাবল ঝিনু। রেডিওতে কি এক যে ঘোষণা ভেসে আসে ।

সে সাথে সাথেই শোনা যায় আব্বুর চাপা গলার আওয়াজ,-‘ইনালি ল্লাাহ..’ বিপদ আপদের সময় আব্বু এই দোয়া পড়েন। ঝিনু ধড়মড় করে উঠে বসে। নিশ্চয়ই খারাপ কিছু ঘটেছে। -‘আরে এ জনন্যেই আজ মিছিলের সামনে ব্রিগেডিয়ারের ভাই আর মাকে দেখলাম। ’ ভাইমনি তিতা গলায় বললেন।

-‘ ইশরে আমার শোলার বাদশা । ’ আপা ফোড়ান কাটেন। -‘ওনাকে পদ থেকে সরিয়ে নিয়ে কি মেরে ফেরেছ, মেরে ফেলেছে জিয়াকে? না ভাই মনি জানতে চায় । -‘মানুষের জীবন মৃত্যর ফয়সালা আসমানে হয় জমিনে নয়। ’ মীর্জা চাচার মুসে বহুবার শোনা একথা বললেন আব্বু।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে আব্বু আবার বললেন, -তাঁকে মেরে ফেললে ফল ভাল হবে না। স্বাধীনতা ঘোষণা তিনি দিয়েছেন। ’ বিছানায় ঝিনু কেবল এপাশ ওপাশ করতে থাকে । একসময় ডাকে আম্মু আম্মু । না আম্মু সেজদায়।

ওর ডাকে সাড়া দেন না। আপা এসে ওর পাশে বসে। -‘ঝিনু ঘুমাও। লক্ষীসোনা। -‘আপা ঘুম আসছে না।

আমার খালি কালি কান্না পাচ্ছে । ’ আপা ঝিনুর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে থাকেন। আবার গা জাড়িয়ে দেন । জাড়িয়ে দিলে ঝিনুর খূ-ব- ভাল লাগে। সারা শরীর মজার শির শির করে।

এবং এক সময় দু’ চোখ ছেয়ে নেমে আসে ঘুম। আপার সাথে ঝিনুর মোটেই বনিবনা হয় না। শুধু শুধু মাতবব্বরি করে এটাই মনে হয়। এটা করনা সেটা করনা। ধমক।

চুল টানা । চোখ লাল। সারাদিন কার ভাল লাগে তাও যদি বয়সে অনেক বড় হত । মাত্তর ছয় বছরের বড় তাই এত হম্বি তম্বি । ঝিনু একটু দুষ্টমি করলেই আপা তাড়া করে।

তবে আপা তার শুকনো শরীর নিয়ে দৌড়ে ঝিনুকে ধরতে পারেননা। হাঁপাতে হাঁপাতে হুমকি দেন, -‘দাঁড়া ধরলে চুল ছিঁড়ে ফেলব। ঝিনু ভাবে, -‘হু ঝিনুকে ধরতে পারলে তা। ’ শেষে আপা চেচায়, অসভ্য। মহা অসভ্য।

আব্বুর কাছে ওর নামে নালিশ করে । শুধু কি ঝিনু অমন যে বড় ভাইমনি ভাইয়া তাদেরকেও সুযোগ পেলে আপা ধমকায়। পান থেকে চুন ঘষলেই হল। অুি বলবে, -‘বই গুছিয়ে রাখ। টেবিল ঠিক কর।

কাপড় ভাঁজ কর। আপার মেজাজ বড় কাঠ কাঠ। আজ অনেকক্ষন ঝিনুর চুলে বিলি কাটছেন আপা। ওকে জারিয়ে দিচ্ছে। ঝিনু ঘুমিয়ে পড়ে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.