আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিলিমিলি ভোর - (৭ই নভেম্বরকে নিয়ে একটা শিশুতোষ উপন্যাস)

সুন্দর সমর

(সাতই নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিবস। একদলীয় বিভীষিকাময় দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে সিপাই জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেয়ার এই দিন। আজকের বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে শত ফুল হাজার ধারায় ফুটছে , বহু সংবাদ মাধ্যমের বিকাশ ঘটছে, লক্ষ মানুষের মত প্রকাশের যে ধারা যাত্রা সূচিত হয়েছে তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে এই দিবসে। সে কথা অনেকেই ভুলে গেছেন, কেউ কেউ তা ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্যুতিময় প্রভাতের বিকাশই কেবল ঘটেছে।

আধার পালিয়ে গেছে বারেবারে। তবুও অন্ধকারের কাপালিক প্রভু এবং তাদের চেলারা নিবৃত্ত হননি। আজও তারা ওত পেতে থাকেন। আজও তারা কৃষ্ণ নি:শ্বাসে ডুবিয়ে দিতে চান মানুষের বিজয় গাথাকে। অন্ধকারের প্রভুদের অতীত এবং চলমান অপচেষ্টার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হল শিশুতোষ উপন্যাস ঝিলিমিলি ভোর।

আজ তার ৯ম পর্ব পরিবেশিত হল। ) কত দিন পার্কে আসেনি। ন-য়-মা-স! উহু। তারপর ঝিনু হিসেব করে দেখে মাত্তর দু’দিন। এত লম্বা দু’দিন আর কম্মিন কালেও দেখেনি ঝিনু ।

সুর্যমামা কাজে-কর্মে ফাঁকি দিচ্ছে । কিংবা আলসে হয়ে গেছে। অথবা বুড়ো হওয়ার জন্য আর আগের মত চলতে-ফিরতে পারেনা। গিটে গিটে বাত। হাড়ে হাড়ে বেদনা।

নড়তে-চড়তে কষ্ঠ হয়। ফলে রাত দিনগুলো ওই বুড়ো হাবড়া ঘোড়ার চেয়ে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে চলছে । বিকেলভর গুম হয়ে বসে থাকতে হয়। না হয় বাসায় সামনের ঘাসের চেহারা মুখস্থ করতে হয়। সময়ের এমন ধীর গতি ঝিনু একদম কাহিল হয়ে পড়ে।

রুকাও যেন কি! একদম সময়মত জ্বর বাধিয়ে বসেছে । কি বিচ্ছিরি জ্বর । সারেই না। হাঁপিয়ে উঠা ঝিনুর চেহারা দেখে আব্বুই আজ ভাইয়াকে দিয়ে ওকে পার্কে পাঠিয়ে দেন্ একটু আধুটু ঘুরে ফিরে আসলে শরীর-মন ভাল হবে। ঝিনু ভেবেছিলো যা দেরি হয়ে গেল এতক্ষণে পার্কের সব দোলনাগুলো বোধাহয় দখল হয়ে গেছে।

আসলে তা হয়নি। পার্কটা কেমন যেন নিঝুম নিঝুম। অনেকগুলো দোলনা খালিই আছে। ঝিনু একটাতে চেপে বসে হেইয়ো হেইয়ো দোল দিতে থাকে। দুটা চারটে আটটা দশটা-বারটা ব্যাস দোল দেবার আনন্দ ফিকে হয়ে আসে।

খালি খালি পার্কে খেলতে ইচ্ছে করেনা। পার্কের সবাই ঝিনুকে দোলের রানী বলে। অল্প দোল দিয়ে সবাই যখন ফোস ফোস হাফায় ঝিনইু তখনও হেইয়ো হেইয়ো দোল দিতেই থাকে। কিন্তু আজ দোল দিয়ে মজা পাচ্ছে না। ধুত্তরি।

ঝিনু দোলনা থেকে নেমে পড়ে । ভাইয়া কোথায় ? এদিকে সেদিকে ও খুঁজতে থাকে। দেখতে পায় পার্কের ও দিকটায় দাড়িয়ে কার সাথে আলাপ করছে। ঝিনু ওদিকে ভো দৌড় দেয়। ভাইয়াকে পিছের থেকে জাপটে ধরে।

-‘কিরে, দোল হয়ে গেল?’ ভাইয়া খুব অবাক হন। -‘দোল দিতে ভাল লাগছে না। ’ ঝিনু গোল গোল মুখ করে জবাব দেয়। ভাইয়া চল হেটে আসি। ওই কোণার দিকে যাব।

’ -‘চল। ’ চুপচপ হাটে দু’জন। ভাইয়ার সাথে ছোঁয়া ছুয়ি খেলতেও ইচ্ছে করছে না অন্যদিন হলে রেডি ওয়ান টু থ্রি । ঝিনুকে ছুতে পালে ভাইয়া দেবে এক কিল। ভাইয়াকে ছুঁলে দেব তিন কিল।

ঝিনু এঁকে বেঁকে ছোঁটে। ভাইয়া পেরে উঠেনা। একটু পরে হাঁপিয়ে পড়ে। এইবার ভাইয়ার পালা। ভায়াকে ছুঁয়ে দিয়েছে।

-‘কিল দিয়ন্তি না জমান্তি। মানে কিলগুলো তখনই দেয়া হবে না বরং অনেক কিল জমে ওঠার পর খেলা শেষে দেয়া হবে। ’ ঝিনু জানে এ এক মজার হিসেব। - ‘উরে বাপস এত কিল মরেই যাব। আতকে উঠে ভাইয়া শোন কিল দিবি না মিমি খাবি।

’ -শেষে ভাইয়া বলেন, ঝিনু ফ্রকের কোনা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ভেবেচিন্তে বলে -‘ তুইত ভাইয়া তাই এম্নি এম্নি মিমি খাওয়াবি। আর খেলার হারুপাট্রি তাই কিলও খাবি। ’ ভাইয়া জোরে মাথা নেড়ে বলেন, -‘ তা হয় না তা হয় না। তা হবে না। ’ ঝিনু লাফালাফি করে হতেই হবে।

তারপর ভাইয়ার পিঠে আস্তে আস্তে কয়টা কিল দিয়ে বলে যা শোধশোধ । বাকিটা ছেড়ে দিলাম। মিমির কাগজ খুলতে খুলতে শোনে ভাইয়া বলছে হরিনের সাথে দৌঁড়িয়ে কি পারা যায় না আমি আর খেলব না ঝিনু ঠিকই জানে ভাইয়া আবার খেলবে। ঝিনু খেলার ডাক দিলে ভাইয়া না এসে বসে থাকতে পারবেন না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.