আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলার স্মৃতিকথা--০২

সুশীলের ভেকধারী এক মহা ভন্ড!

আবারো কিছু এলোমেলো বকবক! কোন সিরিয়াল নাই লাইন বেলাইন নাই! আমি তখন পড়ি কলেজে, মনে হয় সেকেন্ড ইয়ারে। বাবার হেপাটাইটিস বি হবার কারনে আম্মু, ছোট ভাই আর আমার ব্লাড টেস্ট করা লাগলো। আমিও হাসিমুখে দিয়ে আসলাম রক্ত। এ আর এমন কি! সেইটা ছিল আমার প্রথমবার ব্লাড টেস্ট। তো দেয়ার পরে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে দেখি মাথা ঘুরায়! ইজ্জতের ব্যাপার দেখে চেপে গেলাম।

একটু আগাইলাম। তখন দেখি আমি পুরা ঘেমে গেছি। সাথে ছিল এক ডাকু মামা। তারে বললাম মাথা ঘুরায়। উনি সাথে সাথে আমারে এক চায়ের দোকানের বেঞ্চি ফাঁকা করিয়ে আমাকে শুয়ে থাকতে বললো।

বেশ কিছুক্ষণ এমন করে শুয়ে থেকে তারপর উঠলাম। আশেপাশের মানুষজন সব তাকাইয়া ছিলো আমার দিকে! রক্ত জিনিসটা আমি একদম সহ্য করতে পারি না। একবার এক কাজিন সামান্য হাত কেটে ফেলে আর রক্ত দেখে আমি সোজা বিছানায় শুয়ে পড়ছি। কপাল ভালো আমার যে নিজের হাত পা তেমন কাটে নাই! তাইলে খবর ছিলো আমার। তো এই আমি কোনদিন ভাবি নাই ব্লাড দিবো কাউকে।

কিন্তু আম্মুর একবার অপারেশন হবে। আমাদের গ্রুপ সেইম। তো মামা আমাকে বললো রক্ত দিতে। দুই ব্যাগ লাগবে। কিন্তু যাদেরকে চিনি তাদের মাঝে কেউ ঐ সময়ে দিতে পারতেছিলো না।

ভয়ে ভয়ে রাজি হলাম। আরো এক ব্যাগ লেগেছিলো। কপাল ভালো সন্ধানীর ঐ সময়ে প্রেসিডেন্ট আপু পরিচিত ছিলেন, উনি দিয়েছিলেন। উনি আবার আমার এক ফ্রেন্ডের বড় ভাইয়ের ফিয়ান্সে ছিলেন। এখন বাচ্চাকাচ্চা হয়ে শান্তিতে সংসার করতেছেন ওনারা, আমার ঐ বন্ধুরও বিয়া কইদিন পরে ।

তো যখন রক্ত নিচ্ছিলো আমি আরেকদিকে তাকিয়ে ছিলাম। ভুলেও ব্যাগের দিকে তাকাই নাই বা আমার হাতের দিকে তাকাই নাই। আম্মু বাপরে বলে দিছিলো রক্ত নেয়ার সময়ে যেন সামনে থাকে, যেহেতু প্রথমবারের মত দিচ্ছি। কিন্তু আমার বাপে সুই আর ব্যাগ দেখেই ভেগে গেছে রুম থেকে! পরে আম্মুর ঝাড়ি খাইছিল এই কারনে! হি হি! এই একবার দেয়ার পরে (ভার্সিটিতে থার্ড ইয়ারে পড়ি তখন) সাহস বেড়ে গেলো। এরপর বেশ কয়েকবার দিছি।

পানিভাত মনে হইছে! কিন্তু একবারো ভুলেও তাকাই নাই ব্যাগ বা সুই এর দিকে! কাইল্কা বিমার লগে কথা কইতে কইতে এইসব কইতেছিলাম। আইজকা লেইখা লাইলাম। ছবি কৃতজ্ঞতা


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।