আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলার ঈদ-4

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

ঈদের সকালে বাড়ির পুরুষেরা ঈদের নামাজের জন্যে জন্যে বেরিয়ে গেলে বাড়ির মেয়েরা ব্যস্ত হয়ে পড়ত দুপুরের রান্নার আয়োজনে আর দাদি যেতেন পুকুরে স্নান করতে। দাদি বরাবর পুকুরেই স্নান সারেন। দাদির স্নান করাটাও বেশ মজার ছিল।

পুকুরে নেমেই সাঁতার দিয়ে সোজা মাঝপুকুরে, তারপর পাক খেয়ে ঘুরে আবার ফিরে আসা ঘাটে। সিড়িতে উঠে বসে সাবান মাখা গায়ে, বাঁধানো সিড়িতে পা ঘষা আর তারপর নেমে দাঁড়িয়ে তিনখানা ডুব। স্নান শেষ। উঠে পুকুরের পাশেই কাপড় পাল্টনোর জায়গায় গিয়ে কাপড় পাল্টে চলে যেতেন বাড়ির ভেতর। যেতে যেতে রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে দেখে যাওয়া, কদ্দুর এগোলো কাজ।

নামাজ থেকে সবাই ফিরলো বলে! দাদি ঘরে এসে পরতেন তার ঈদের শাড়িটি। স্নানের জায়গায় দাঁড়িয়ে দাদি কখনও তার নতুন শাড়ি পরতেন না। পুরনো শাড়ি পরে ঘরে এসে তারপর নতুন শাড়ি পরা। আটপৌরে ভাবে পরা নতুন শাড়ির আঁচল আলতো করে মাথায় টানা, ফুলহাতা ব্লাউজে দাদি যেন শরত্চন্দ্রের নায়িকা। দু'হাত রাঙা মেহেদির গাড় লাল রঙে, চোখে গাঢ় করে টানা সুর্মা, নতুন চটি পায়ে দাদি এসে বসতেন বারান্দায় পেতে রাখা তার হাতলওয়ালা চেয়ারটিতে।

দাদির ঘরে টেবিলে ততক্ষণে এসে গেছে বড় গামলায় করে সেমুইএর পায়েস আর পাশেই উপুড় করে রাখা আছে একথাক ছোটো বাটি। একটু পরেই পাড়ার সব ছেলে-মেয়েরা দল বেঁধে আসবে। আর আসবে অন্য সবাই নামাজ ফেরত দাদিকে সালাম করতে, ঈদ মুবারক জানাতে। দাদি সালাম নেবেন আর উঠে গিয়ে সবাইকে একবাটি করে দেবেন শির।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।