আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেবেলার ঈদ-2

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

এখন যেমন কোণ দিয়ে লিকুইড মেহেদি পরা হয়, সেই মেহেদি তা ছিল না। গাছ থেকে মেহেদির পাতা তুলে শিলে মিহি বেটে নিয়ে সেই মেহেদি দিয়ে হাতে নানা ডিজাইন আঁকা হত। আমার দাদি হাতে মেহেদির ডিজাইন করতেন না।

হাতের গোটা পাতায় মেহেদি লেপে দিতেন আঙুল সহ আর এদিকে হাত উল্টে নখগুলো ও মেহেদি দিয়ে ঢেকে দিতেন। তারপর দুই হাতের মাঝে একটা পানপাতা রেখে হাতদুটো একসাথে জোড় করে রাখতেন। সে এক দেখার মত জিনিস ছিল। আমরা রোযার পুরো একমাস ছুটি পেতাম। রোযা শুরু হওয়ার দু-চারদিন আগে স্কুল ছুটি হয়ে যেত, ঈদের ও আরও হপ্তা দশদিন পরে স্কুল খোলার একটা তারিখ দিয়ে।

এই সোয়া মাস ছুটি মানে পড়াশোনা? একদমই নয়! সোয়া মাস ধরে উত্সব। মায়ের তাগিদে বই নিয়ে বসতে হলেও দাদি মাকেই বকে দিত, সারা বছরই তো পড়ছে, এখন থাকতে দাও না কদিন শান্তিতে!! ভোর রাত্তির থেকেই শুরু হয়ে যেত হুল্লোড়। ভোর রাত্তির মানে সেই রাত তিনটে! আমার তো কল্সীতে হা ঁদিয়ে রোযা, ভোরে উঠে সেহরী ( রোযা রাখার জন্যে ভোররাতে উঠে খাওয়া) না খেলেও চলে কিন্তু আব্বু তুলবেই। আর দাদিও বলে, সেহরী খাওয়াও পুণ্যের কাজ! অতএব উঠে পড়ো রাত তিনটেয়! মা এই ভোরবেলায় ডাকতে চাইতো না, কারন আমরা, এই পোলাপানেরা ভোরে আর ঘুমাতে চাইতাম না। সেহরী খেয়ে মা যে একটু ঘুমুবে তার বারোটা বাজিয়ে দিতাম আমরা হই হুল্লোড় করে।

আমার দাদু, দাদি দুজনেই দেশের বাড়িতে থাকতেন। আমরা তাই ঈদ করতে দেশের বাড়ি চলে যেতাম প্রায় প্রতি বছর। দেশের বাড়িতে যাওয়াটা এমনিতেই একটা উত্সব তায় আবার সে যদি হয় ঈদ তো সে এক বিরাট ব্যাপার। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।