আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্বার বন্ধ করে ভ্রমটাকে রুখি

mostafizripon@gmail.com

ব্লগের মূল আকর্ষন খুব সম্ভবত সরাসরি পাঠকের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়াটি জানতে পারা। লেখাটির পরিপ্রেক্ষিতে যে মন্তব্যগুলো আসছে সেটি একটি বড় উদ্দীপনা হয়ে ওঠে লেখকের পরবর্তী লেখার জন্য। যদিও সব পাঠকই সঠিকভাবে লেখার মূল্যায়ন করতে পারেন বা করেন তা নয়। আর ব্লগে লেখকেরাই পাঠক বলে কোন লেখার ওপর প্রকাশিত মন্তব্যের বিষয়টি একটু জটিল, কিছুটা ভিন্নতর; যা সাধারনত হয় আরকি! ব্লগে লেখার মানের চেয়ে বিষয় বস্তুই মূল হয়ে দাঁড়ায় অধিকাংশ সময়। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি লেখা প্রসঙ্গে নয়, লেখক প্রসঙ্গে আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

পাঠক সবসময়ই পছন্দ করেন লেখকের 'উদ্দেশ্যের পেছনের বিধেয়টি' জানতে; লেখক কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী তা জানলে আলোচনা সমালোচনাগুলো আরো তীব্র হয়। সামহয়্যার-ইন-ব্লগ এই সমস্যাতে আক্রান্ত হয়ে আছে শুরু থেকেই এবং মাঝে মাঝেই তা প্রকট হয়ে উঠছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি ব্লগে কথ্য ভাষায় মন্তব্য প্রকাশ পছন্দ করিনা। আমি লক্ষ্য করেছি, সামহয়্যার-এ কথ্যভাষায় প্রকাশিত মন্তব্যগুলো অধিকাংশ সময়ই কারো প্রতি অশোভন আচরন করার জন্য, বা কাউকে হেয় করবার জন্য ব্যবহার করা হয়। কথ্যভাষায় মন্তব্য, প্রতিমন্তব্যগুলো কী এক অজ্ঞাত কারনে তিক্ততায় ভরে ওঠে কে জানে! ধর্ম আর রাজনীতি যেকোন বাংলা ব্লগের প্রধান আলোচনার বিষয়।

ব্যক্তিগত জীবনে আমাদের অসংখ্য অপ্রাপ্তি এই দুইটি বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বলেই হয়ত এদের আমরা এড়াতে পারিনা। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এই সত্যটিকে আমরা বরাবরই অস্বীকার করি এবং এর মধ্যেই ঘুরপাক খাই। অনেক ব্লগারই তিতিবিরক্ত হয়ে মাঝে মাঝেই বলেন, ধর্মীয় আলোচনা বা রাজনৈতিক আলোচনা ব্লগে নিষিদ্ধ করা হোক। কিন্তু যিনি প্রস্তাবটি দিচ্ছেন তিনি ভালো করেই জানেন এটি সম্ভব নয়। আবার যাকে 'ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছে' বলা হয় তার প্রধান কারন এবং উৎসও এ দু'টি।

যদি কেউ ব্যক্তিগত শান্তি নষ্টের আশংকা করেন তবে এ ধরনের লেখাগুলো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কিন্তু ব্যাপকভাবে 'ব্লগের শান্তি রক্ষা করা' কিংবা 'ব্লগের সুস্থ পরিবেশ' কি নিশ্চিত করা সম্ভব? যদি সামহয়্যার-এ অনুমোদনের পর প্রতিটি লেখা প্রকাশিত হয় তাহলে এটি সম্ভব। কিন্তু এতে গতিহীনতা ব্লগের মূল সৌন্দর্যকে আক্রান্ত করবে। তবে প্রতিটি লেখারই একটি বিভাগ নির্দেশিত হতে পারে লেখাটির শুরুতে; যা দেখেই পাঠক লেখাটি পড়া না পড়ার বিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমরা লক্ষ্য করেছি ব্লগে কাউকে কাউকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত যে কয়জনকে সামহয়্যার-এ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা কোন মতবাদ বা মতাদর্শের জন্য নয়, অশোভন আচরনের জন্য। মাঝে মাঝে কারো কারো মন্তব্যে দেখা যায় যিনি কোন এক সময়ে সামহয়্যার-এ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। যদি কেউ একবার নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে থাকেন, তিনি আবার কিভাবে সেখানে ফিরে আসতে পারেন? শুধু 'নিক ব্যান' কোন কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারেনা; একজন মানুষই বিভিন্ন নামে একই ব্লগের সদস্য হতে পারেন। সামহয়্যার-এর এই বিষয়টি কিছুটা অসংগতিপূর্ণ। যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, কাউকে নিষিদ্ধ করলে উল্লোসিত হওয়ার কোন কারন নেই।

দ্বার বন্ধ করে ভুলগুলোকে আটকালে সত্য প্রবেশের পথটিও যে রুদ্ধ হয়!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.