আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাতৃত্বকালীন ছুটির পর অফিস ফেরার প্রস্তুতি

আমার নাম হিতুনা.। বডটজস না!! আমার বানান অনেক ভূল হয়। বুঝে নিয়ে পড়বেন। ধইন্যা পাতা।

অলস দুপুরে নিরলস খাটা মানুষ আপনি।

বুদ্ধিদীপ্ত, কর্মচঞ্চল! টিম কে লীড করছেন, মিটিং, ব্রিফিং মিলে নয়টা – পাচঁটার টগবগ জীবন। ক্যারিয়ারটা খুব গোছানো; আপনার গোছানো সংসারের মতই। কোথাও কোন কম্প্রোমাইসের লেশ মাত্র নেই। এরই মাঝে জীবনে পরিবর্তন। সময়, স্বামী-স্ত্রীর কেমিস্ট্রি, পরিবারের প্রেশার কিংবা সারপ্রাইস গিফট- এই মাল্টিপাল অপশনের যেকোনো একটিতে গোল্লা ভরাট করে আপনি সন্তান সম্ভবা।

তাতেও কোন খামতি বা কমতি নেই আপনার- অফিসের প্রতি ডেডিকেশনে। তাছাড়া আপনার টিমও আপনাকে যথেষ্ট স্পেস দিচ্ছে- তা সহানুভূতি বা দূর্বল ভেবে নয়; এবং আপনি তা ননও। প্রেগনেন্সির নয়টা মাস যেন নয় যুগ! ডিউ ডেট এর ক্যালেন্ডার-এ ক্রস মার্ক ফেলতে ফেলতে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেও দিন এগোচ্ছেনা বলেই ঠেকে। কিছুটা শারীরিক অস্বস্তি কিংবা অনাগত সন্তানকে নিয়ে আবেগের উথাল পাতাল যা- ইহোক না কেন দিন না কাটার এই দিনগুলো সত্যিই অসাধারণ। দূঃখজনক হলেও সত্য যে আপনার পেটের পটে আঁকা শিশুটি, আপনার কোলে যেদিন থেকেই তার শরীরের ওম ছড়িয়ে দেবে, সেদিন থেকেই দিনগুলো লাগাম ছাড়া! ম্যাটারনিটি লিভ! হায়রে আমার ম্যাটারনিটি লিভ! বুদ্ধিদীপ্ত, কর্মচঞ্চল, ডেয়ারিং ওয়ার্কিং ওমেন, যে এইতো ছ’মাস আগেও দাবড়িয়ে বেড়িয়েছেন অফিস- আজ মনে হচ্ছে সব কেন যেন অনিশ্চিত।

বাবুর কেয়ার, অফিসের ডেস্ক – সব! সব নিয়েই হিম-সিম খাচ্ছেন। ওয়েট ইন দেয়ার গর্জিয়াস! আপনার জন্য কিছু আছে বলার- যা আমি অন্যদের উপদেশ থেকে পেয়েছি কিংবা হোচোট খেয়ে শিখেছি আর ভেবেছি- যদি কেঊ বলবার থাকত! কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার জন্য আপনার যেমন রয়েছে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির ব্যপার, তেমনি রয়েছে ছোট্ট শিশুটার-ও। ওকেও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতে হবে বলেই আপনাকে শক্ত, দৃর ও ধৈর্যশীল হতে হবে। এই সময়টা আর অফিস পাড়ায় ফেরার প্রথম কইয়েকটা দিন খুব বেশি ক্রুশিয়াল। 1. অফিসের সময়ের সাথে সাথে গুছিয়ে নিন রুটিন ধরুন আপনার অফিস টাইমিং ৯-৫ টা।

হাতে গোনা কিছু দিন আগে থেকেই এই টাইমিংটা প্রাকটিসে আনুন। সকাল সকাল ঘুম থেকে ঊঠে নিজেকে ও বাবুর প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো অর্গানাইজ করুন যাতে এমন ঠেকে যে একটু পরই আপনি ছুট দিবেন অফিসে। এটা প্রয়োজন- যাতে অফিসের দিনগুলোতে আপনার খুব বেশি এডজাস্ট এর প্রয়োজন না হয়; ওসময় এডজাস্ট করার থাকবে বহু কিছু। 2. গোটা-কদিন আগেই জয়েন করুন; ছন্দ আনতে একে বারে কাগজ-এ কলমে জয়েন না করলেও হাতে ক’দিন রেখেই জয়েন করুন। এত দিনের লম্বা গ্যাপে আপনি যাতে নিজেকে একেবারেই বেসামাল না মনে করেন তার জন্যই রিল্যাকস্‌ড ওয়েতে অফিস করুন।

বুঝে নিন আপনার দাবড়ানি-চাপরানি খাওয়া ডেস্ক আর ডেস্কটপটা। 3. বাবুর ফিডীং হ্যাবিট বাবুর জন্যও হুট করে আপনাকে ছেড়ে থাকাটা বেশ কঠিন। বিশেষ করে ওর ফিডিং রুটিনের ক্ষেত্রে। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং এ অভ্যস্ত হলে ওকে আস্তে ধিরে ফিডিং বোতল বা চামচে পাম্প করা দুধ অথবা ফরমুলা খাওয়ানোর অভ্যস করা উচিত। রিসার্চ বলে যে সাধারণত দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে এই হাবিট না গড়তে না পারলে পরবর্তীতে বেশ বেগ পেতে হয় মায়েদের।

তাই যারা কাজে ফিরবেনই, তাদের আগে থেকেই বাবুকে বোতল বা চামচে খাওয়নোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়া ছ’মাস থেকেই যেহেতু বাবু বাড়তি খাওয়া শুরু করে থাকে; তাই গোটা দশেক দিন আগে থেকেই কিছু কিছু (পিউরী করা ভাত বা সুজি) খাবার ইনট্রুডিউস করা মন্দ নয়। 4. বাবুর ডে-লং কেয়ার বাবুকে কার কাছে রাখবেন কাজে ফিরবার পর তা নিশ্চিত এত দিনে ঠিক ঠাক। তাই অফিস রুটিনের সাথে তাল মিলিয়ে বাবুকে তার কাছে অভ্যস্ত করুন। আপনি পাশে থেকেও একটু দূরে থাকুন।

এতে বাবুর অভ্যস্ততার সাথে সাথে আপনি বাবুর দেখভালে নিযুক্ত যিনি থাকছেন (নিকট আত্মিয়ই হোক কিংবা পেইড লেবার) তারও শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি গড়ে উঠছে, একই সাথে বাবুর সাথে তার কেমিস্ট্রি। সেই সাথে আপনার আস্থা আর মানসিক স্থিরতাও অনেকটাই একটা শেপ-এ চলে আসবে। 5. নিজেকে প্রস্তুত করুন ক্যরিয়ারিস্ট বলেই যে আপনি শিশু ও সংসারের প্রতি অবহেলা বা অন্যায় করছেন তা নয়। আপনি যা করছেন সবই পরিবারের জন্য। এটা সত্য, কাজে ফিরবার আগের কটা দিন ও ফিরবার পরের কতগুলো দিন খুব টাফ।

এসময়েই অনেকে ভুল কিছু ডিসিশন নিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এবং অতঃপর টানেন জীবনভর মন ভারের বোঝা। যা হোক। এখন কিন্তু টিনেজ টাইম নয় যে বয়ফ্রেন্ডের সাথে রাগ করে চুল কেটে ফেললাম। ধৈর্যের পরীক্ষায় আপনাকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। আপনার সহকর্মী, আপনার বস কে বুঝিয়ে বলুন- তারা আপনাকে স্পেস দেবে।

তবে সবচেয়ে বড় সাপোর্টটা নিজেকে নিজের দিতে হবে; আর যার কথা না বললেই নয়- আপনার জীবনসংগী। (চলবে..)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.