আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিঠা



রাস্তার পাশে ড্রেনগুলো দেখলে জিহ্বায় পানি চলে আসে। ড্রেনের নোংরা-ময়লা পানি যেমন একেবেকে বয়ে চলে তেমনি আমার জিহ্বায় পানি গড়িয়ে পড়ে। লোভে চক্ষু দুটো চকচক করতে থাকে।
প্রায়শয় মানুষদের দেখা যায়,ড্রেনের পাশ দিয়ে যাবার সময় রুমাল দিয়ে নাকটা চেপে রাখতেছে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করি,
'দাদা মুখটা বিকৃত করে নাকটা ঢেকে রাখতেছেন যে!'
লোকটা নাক-মুখ থেকে হাতটা ছড়িয়ে কোন রকম বলে "গন্ধ!"
'"গন্ধ"? কে বলে "গন্ধ"? কিসের "গন্ধ"? আমিতো "ঘ্রান" পাচ্ছি।

'
আমার মুখে "গন্ধ"র জায়গায় "ঘ্রান" শব্দটা শুনে লোকগুলো ক্ষেপে যায়। "ব্যাটা খচ্চর" বলে স্থান ত্যাগ করে।
হতভম্ব হয়ে পিছন থেকে তাদের যাওয়াটা ফ্যাল ফ্যাল করে দেখতে থাকি ।
সত্যি বলছি "ড্রেন" আমার কাছে খুব প্রিয়। বিশেষ করে ড্রেনের গন্ধটাকে ছাপিয়ে যখন পাশের দোকান থেকে পিঠার "ঘ্রান" ভেসে আসে।

হরেক রকম "পিঠার ঘ্রানে" ড্রেনের "গন্ধটাকে" আর "গন্ধ" মনে হয়না। মনে হয় "ঘ্রান"। "সুগন্ধির ঘ্রান!"
শীতে বা গরমে দেখা যায় রাস্তার পাশে ছাউনি পেতে পিঠা বানাচ্ছে হতদরিদ্র বয়স্ক মহিলারা। এ সকল মহিলাদের বেশীর ভাগ আশ্রয় হয় রাস্তার ড্রেনের পাশে। কখনো ডাস্টবিনের কাছে।

পিঠার ছাউনি। চা-সিগারেটের টং আর চটপটি-ফুসকার গাড়ি।
সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন বা মধ্যবিত্তদের একমাত্র ভরসা রাস্তার পাশে এই পিঠার দোকানগুলো।

একটা সময় রাস্তার পাশে আয়েশ করে ভাপা পিঠা,চিতই পিঠা আর তেলের পিঠা খেতে দেখলে বন্ধুবান্ধবরা বকাবকি করতো। আপুরা বলতো,পেটে অসুখ করবে।

আর আম্মু বলতো ছিঃ! ছিঃ! তুই ঐসব পিঠা খাস? ওগুলো ভিক্ষুকেরা খায়। কালের পরিক্রমায় সেই আম্মু আর আপুরা মাঝে মধ্যে ফোন করে বলে,বাসায় আসার সময় কয়েকটা পিঠা নিয়ে আসিছ তো! ওইযে রাস্তার পাশে লাল শাড়ি পড়া মহিলার পিঠা। আর যেই বন্ধুটি আমাকে পিঠার দোকানে বসিয়ে রেখে একটু দূরে নাকে মাস্ক পড়ে দাঁড়িয়ে থাকতো,তাকে ইদানিং দেখি অফিস থেকে বাসায় ফেরার আগে এলিফ্যান্ট রোডের বাটার মোড়ে ডাস্টবিনের পাশে দাঁড়িয়ে তৃপ্তিসহকারে পিঠা খাচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।