আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ভারত ভ্রমণ --১ম পর্ব (( কালের কপোলে শিশির বিন্দু, তাজমহল-আগ্রা ))

চোখ কেড়েছে চোখ ,উড়িয়ে দিলাম ঝরা পাতার শোক...। ভোর বেলা ঘুম ভেঙ্গেই মনে হল,আজ সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ । অনেকদিনের একটা শখ পূরণ হতে যাচ্ছে আর কয়েক ঘণ্টা পরই । মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হওয়ায় সুবাদে বেশ কয়েকটা জায়গায় ক্যাম্প করার সুযোগ হয়েছে। সেই সাথে ঘুরাঘুরি ফাউ ।

কিন্তু সেসব দেশের ভেতরেই। এই প্রথম দেশের বাইরে, ইন্ডিয়া ট্যুরে যাচ্ছি । এবার শুধুই ঘুরাঘুরি ,উরাউরি । ভাবতেই মনটা ভালো হয়ে গেলো । সেই কবে থেকে কত প্ল্যানিং , কত উত্তেজনা এই ট্যুরটাকে নিয়ে !আমি শুধু একটা একটা করে দিন গুনে গেছি ।

এখনো গুনছি , তবে দিন নয়...ঘণ্টা । কখন যে রাত হবে ! রাত ১০.৩০ । এইমাত্র আমাদের বাস ছাড়ল । ঢাকা-কোলকাতা ,শ্যামলী বাস । ২ ঘণ্টা আগে যখন কলেজের হসপিটাল বিল্ডিং এর নীচে আমরা জড় হচ্ছিলাম একজন একজন করে ,দারুন লাগছিলো সবার আনন্দ আর উত্তেজনা দেখতে ।

আমরা মোট ২৫ জন। কেউ ছবি তোলায় ব্যাস্ত , কেউ লাগেজ নিয়ে ব্যাস্ত ,কেউ মন দিয়ে শুনছে বাবা-মায়ের হাজারো উপদেশ । আর আমরা ৬ বন্ধু ব্যাস্ত হয়ে গেলাম আমাদের গল্পে । ''এটা এনেছিস?'' ''ওটা নিয়েছিস তো । '' ''হলুদ গেঞ্জি (ট্যুর টি-শার্ট) টা কোথায় তোর ?''...আমাদের সব হিজিবিজি গল্প! এর মধ্যেই এসে পরলেন আমাদের এই ট্যুরের দুই প্রধান গাইড ।

রিয়াসাত স্যার এবং আকাশ ম্যাম । ওনারা স্বামী স্ত্রী। আমাদের কলেজেরই স্টুডেন্ট ছিলেন। এখন টিচার । তাই যতটা না শিক্ষক,তার থেকে বেশি বন্ধু।

এসেই বললেন , ''তোমাদের গেঞ্জি কই?এখনি পরে ফেল সবাই । নাহলে কাওকে নিয়ে যাবনা । '' অসহ্য ক্যাটক্যাটা হলুদ রঙা গেঞ্জিটা পড়তে সবারই ভীষণ অনিচ্ছা!তবু পড়তে হল । আর তারপরে আমাদের বাস ছুটে চলল হাইওয়ে ধরে । বাসের দুলুনি আর অন্ধকার দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম ।

হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে দেখি বাস থেমে আছে । ঘড়িতে রাত তিনটা। কি হল ,বুঝলাম না । শুধু শুনলাম বাসের চাকা পাংচার । সকাল না হলে ঠিক করা যাবেনা ।

স্যার-ম্যাম খুব টেনশন করছিলেন , কারণ আগামীকাল রাতে আমাদের কোলকাতা থেকে আগ্রা যাবার ট্রেন আগেই বুক করা হয়ে গেছে । এখন একটু সময়ের এদিক ওদিক হওয়া মানে অনেক রিস্কে থাকা । আমাদের সবার দায়িত্ব ওনাদের ওপর,তাই চিন্তাটাও বেশি । আমরা কিন্তু ওসব ঝামেলার মধ্যে নেই। সবার মনেই বেশ একটা এডভেঞ্চার এডভেঞ্চার ভাব ।

এক সিট থেকে আরেক সিটে আড্ডা দিয়ে,গান গেয়েই পার করে দিলাম বাকি রাতটা । সকালে বাস ঠিক করে,আবার শুরু হল আমাদের যাত্রা । থামলাম একদম বেনাপোল এসে । এর মধ্যে জেনেছি ,আমাদের রুটিন একটু অদল-বদল হয়েছে । কোলকাতাতে পৌঁছে আমাদের হোটেলে ওঠার কথা ছিল ।

কিন্তু , সেটা করতে গেলে আগ্রার ট্রেন মিস করার সম্ভাবনা আছে । তাই আমরা একবারে শিয়ালদহ ষ্টেশনে যাবো বর্ডার থেকে । তারপর আগ্রা । বর্ডার ক্রস করে পা রাখলাম ইন্ডিয়ার মাটিতে । বেনাপোল সীমান্ত গেট পার হলাম।

কেমন একটা যেন অনভূতি! এই প্রথম বার দেশের বাইরে যাচ্ছি বলেই বোধহয় , একটু কষ্ট হল বাংলাদেশ কে ছেড়ে যেতে । মোবাইল যে সামান্য নেটওয়ার্ক নিয়েই বাসায় কথা বলে নিলাম। ডলার ভেঙ্গে রূপী করলাম। ( আমার ক্যামেরায় ভারতের প্রথম ছবি ) সারাদিন একটানা চলা,মাঝখানে লাঞ্চ ব্রেক। সন্ধ্যা বেলা সূর্য ডোবার পর বাস থেকে নেমে অনেকটা হেটে পৌঁছলাম শিয়ালদহ ষ্টেশনে ।

সবাই ভীষণ ক্লান্ত । ওয়েটিং রুমের বাথরুমেই কোনরকম করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম । কিছুক্ষণ পরেই হাতে এলো রাতের খাবার । সেই কোন দুপুরে হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে খেয়েছিলাম । জিরা পোলাও আর চিলি চিকেন হাতে নিয়ে ক্ষুধটা তাই আরও বেড়ে গেলো ।

কিন্তু, কে জানত যে ইন্ডিয়ান খাবারের এত সুনাম , সেই খাবার খোদ ইন্ডিয়াতে বসে দু' চামচের বেশি মুখে তুলতে ইচ্ছে করবেনা ! আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম,সবারই এক অবস্থা । কারোরই ঠিকমতো খাওয়া হলনা । বাংলাদেশের খাবারের আসলেই তুলনা নেই। রাত ১১.৩০ এ আমাদের ট্রেন এলো । তাড়াহুড়া করে সবাই ট্রেনে উঠে পড়লাম ।

আমরা বেশ সৌভাগ্যবান ,এক বগীতেই সবার জায়গা পেয়েছিলাম । কিছুটা সময় লাগলো নিজেদের আর লাগেজগুলোকে গুছিয়ে নিতে । সবাই বারবার করে বলে দিয়েছিলো বলে আমার ধারণাই হয়ে গেছিল,ইন্ডিয়াতে শেকলে বেঁধে না রাখলে ব্যাগ চুরি হবেই। আমি আবার জিনিস হারাই বেশি। তাই সারা ট্রেন জার্নি তটস্থ হয়ে ছিলাম,এই বুঝি আমার ব্যাগ-পাসপোর্ট সব গেলো।

যাইহোক সব গুছিয়ে বসলাম জানালার পাশে । গভীর রাতের জার্নি আমি খুব পছন্দ করি। আর ট্রেন জার্নির মজাটাই আলাদা । ঝড়ের গতিতে অন্ধকার কেটে ছুটে চলছে ট্রেন । হুস হাস করে পেরিয়ে যাচ্ছি একেকটা ষ্টেশন ।

দারুন লাগলো । তবে বেশিক্ষণ জেগে থাকা হলনা । ঘুমিয়ে গেলাম অল্প পরেই । পরদিন সারাদিন পেটের ভেতর । বোর হলাম না কিন্তু একবিন্দুও ।

চারপাশে এত সব বন্ধু থাকলে কি বোর হওয়া যায়! আড্ডা , গান , খেলা , হাসি আর ছবি তুলে কেটে গেলো সময়গুলো । ( ট্রেনের ভেতর দুষ্টুমি ) আকাশ ম্যাম আর রিয়াসাত স্যার ও ভিড়ে গেলেন আমাদের সাথে । শুধু প্যানট্রি কারের বিস্বাদ খাবার গুলো বাদ দিলে পুরো ট্রেন জার্নিটাই ছিল মনে রাখার মত । প্রায় ১৭ ঘণ্টার জার্নি শেষে পৌঁছে গেলাম শাহজাহান-মমতাজ এর ভালোবাসার শহর আগ্রা । মুঘল যুগের ভারত ইতিহাসের প্রাণকেন্দ্র আগ্রা ।

উঠলাম হোটেল রামনাথ এ । আজ রাতের জন্য এটাই আমাদের আস্তানা । স্যার-ম্যাম সবার রুম বুঝিয়ে দিয়ে বললেন রেস্ট নিয়ে তৈরি হয়ে যেতে । ওনারা আমাদের ম্যাকডোনালড'স এ খাওয়াবেন । আসলে আমরাই ওনাদের কাছে বায়না ধরেছিলাম ।

সেটা রাখতেই আজকের এই ট্রিট,সাথে ঠিকঠাক মতো ইন্ডিয়া পৌঁছানোর সেলিব্রেসনটাও হবে । ক্লান্তি ভুলে সবাই তারাতারি তৈরি হয়ে গেলাম ম্যাকডোনালড'স এ । মজা করে টেস্ট করলাম ওদের বিখ্যাত বার্গার আর মাত্র দশ রূপির দুর্দান্ত আইসক্রিম । সাথে চলল ফটোসেশনও । হোটেলে ফিরে আবার রাতের খাবার খেতে হল ।

যদিও কারও পেটেই তেমন জায়গা ছিলনা । তবুও স্যার এর অর্ডার । সবাই একসাথে বসে খেতে হবে । পেট ভরা থাকলেও একসাথে সবাই মিলে গোল হয়ে বসে খেতে খারাপ লাগছিলো না । আর রান্নাটাও দারুণ ছিল ।

খাবার শেষ করে রুমে এসে ঘুমিয়ে পরলাম,পরদিন তাজমহল দেখার স্বপ্ন চোখে নিয়ে । ******** তাজমহল ********* সকাল হতে না হতেই হাজির হলাম তাজমহলের গেটে । (প্রবেশ পথ--এখান থেকে টিকেট কেটে ঢুকতে হয় ) ভারতীয়দের জন্য তাজে ঢোকার টিকিট দশ রুপি আর ফরেনারদের জন্য ১০০০ রুপি । সুতরাং , চালাকি তো একটা করতেই হবে। সবাই আলাদা আলাদা অথবা জোড় বেধে ঢুকলাম ।

কেউ কাওকে চিনিনা এমন ভাব। আমি আর মৌরি একসাথে। আমাকে দেখে টিকিট চেকারের সন্দেহ না হলেও , মৌরিকে দেখে কেন জানি আমাদের আটকে দিলো । আমরা কি আর কম দুষ্টু ! ঠিকই ঝাড়ি টাড়ি মেরে ওদের বিশ্বাস করিয়ে ফেললাম আমরা কোলকাতার মেয়ে । চাঁপাডালি মোড় ,বারাসাত থেকে এসছি তাজমহল বেড়াতে ।

এরপর দশ রুপিতেই ঢুকে পরলাম মার্বেলের শোকগাথা,পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি--''তাজ'' দেখতে। ( তাজমহলের প্রধান প্রবেশ ফটক ) ( ভেতর দিক থেকে ফটকের ছাদ ) তাজমহল আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। এর বয়স নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু কোনো বিতর্ক নেই যে, অমর প্রেমের নিদর্শন হলো তাজমহল। ( দূর থেকে তাজকে দেখা ) ফার্সিতে তাজমহল অর্থ প্রাসাদের মুকুট হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি একটি স্মৃতি সৌধ।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের পুত্র খুররম ১৬১২ সালে ফার্সি-রাজকন্যা আরজুমান্দ বানু বেগমকে বিয়ে করেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর বিয়ের দিনই আরজুমান্দ-এর নতুন নাম দেন মমতাজ মহল। সম্রাট জাহাঙ্গীর মারা যাবার পর খুররমকে সম্রাট ঘোষনা করা হয়। খুররম পঞ্চম মোঘল সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং তার নতুন নাম রাখা হয় শাহ্জাহান। শাহ্জাহান ও মমতাজ মহল-এর মধ্যে ভালোবাসা এতো গভীর ছিল যে, রাজকার্য থেকে শুরু করে সামরিক অভিযান পর্যন্ত মমতাজ ছিলেন তার স্বামীর অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী।

তাদের সংসার জীবন ছিল আঠারো বছরের এবং এর মধ্যে তাদের ১৪টি সন্তান লাভ করে। সর্বশেষ সন্তান জন্মলাভের সময় ১৬৩০ সালে সম্রাট শাহ্জাহান-এর সঙ্গে এক সামরিক অভিযানে অবস্থান কালে মমতাজ মহল মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে শাহ্জাহানের কাছ থেকে মমতাজ চারটি প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন। যার মধ্যে দুটি ছিল --সম্রাট শাহ্জাহান তাদের ভালোবাসার পবিত্রতা ও সৌন্দর্যকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য একটা সৌধ নির্মাণ করবেন এবং প্রতি মৃত্যুবার্ষিকীতে সম্রাট তার সমাধিতে আসবেন। সম্রাট প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন।

২০ হাজার লোকের ২২ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাজমহল । তবে তাজমহলের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই শাহ জাহান তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেব দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত ও আগ্রার কেল্লায় গৃহবন্দী হন। কথিত আছে, জীবনের বাকী সময়টুকু শাহ জাহান আগ্রার কেল্লার জানালা দিয়ে তাজমহলের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়েই কাটিয়েছিলেন। ( রোদের আলো-ছায়ার খেলা তাজের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ ) তাজমহল দেয়াল ঘেরা আগ্রা শহরের দক্ষিণ অংশের একটি জমিতে তৈরি করা হয়েছিল যার মালিক ছিলেন মহারাজা জয় শিং। শাহজাহান তাকে আগ্রার মধ্যখানে একটি বিশাল প্রাসাদ দেওয়ার বদলে জমিটি নেন।

অসাধারণ এই মহলের নির্মান কাজ শেষ হতে প্রায় বাইশ বছর সময় লেগেছিল এবং বিশ হাজার কর্মী এই নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিল। এই মহান স্থাপত্য নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ৩২ মিলিয়ন রুপী এবং এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৬৪৮ সালে। দিল্লী, কান্দাহার, লাহোর এবং মুলতানের সুদক্ষ রাজমিস্ত্রীগণকে তাজের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত করা হয়। অধিকন্ত্ত বাগদাদ, শিরাজ এবং বোখারার অনেক দক্ষ মুসলিম নির্মাতা তাজের বিশেষ কাজগুলি করেন। নির্মাণকাজের দলিলে উল্লেখ আছে যে, তাজের প্রধান স্থপতি ছিলেন সেই সময়ের প্রখ্যাত মুসলিম স্থপতি ওস্তাদ ঈসা।

একটি বর্গাকার(১৮৬ x ১৮৬) ক্ষেত্রের প্লাটফর্মের মোড়ানো চৌকোনার উপর অসমান অষ্টভুজাকৃতির আকার ধারন করেছে তাজ মহল। ভবনের নকশা কারুকাজখচিত পরস্পরসংবদ্ধ শাখা-প্রশাখার ধারনায় তৈরী যাতে একটি প্রশাখা নিজ শাখার উপর দাড়িয়ে আছে এবং প্রধান কাঠামোর সাথে সুচারুভাবে সংহত হয়েছে। এই চমৎকার সমাধিসৌধ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে- প্রধান প্রবেশ পথ, একটি প্রশস্ত বাগান, একটি মসজিদ (বামে), একটি অতিথি নিবাস (ডানে) এবং কয়েকটি রাজকীয় ভবন। প্রধান কাঠামোর উপর চারটি পুল আবার চারটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তাজের চমৎকার নকশাকে আরও শৈলিতা দান করেছে । পুরোটা মহল ঘুরে ঘুরে দেখলাম, সত্যিই অসাধারন ।

তাজমহলে উঠার সময় জুতা পরে উঠে যায় না, জুতার উপরে কাপড়ের মোজার মতো একটা পড়তে হয়। তাজমহল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নরূপে পর্যটকদের কাছে ধরা দেয়। যেমন ভোরবেলায় গোলাপী, দুপুর-বিকেলে দুধ সাদা, জোৎস্নার আলোয় সোনালী এবং চাঁদের আলোয় মুক্তোর মত জ্বল জ্বল করে। এছাড়া বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রং । এসব শোনা কথা ছিল।

আজ দেখলাম। তিনটে রঙ দেখতে পেলাম । দুধ সাদা , হালকা হলুদ আর ধূসর । ( দুধ সাদা ) ( হালকা হলুদ ) ( ধূসর ) তাজ মমতাজ এর সমাধি সৌধ হলেও,শাহ্জাহানের মৃত্যুর পর তাকেও তাজমহলের মাঝখানে একটি ঘরে মমতাজ এর পাশেই সমাহিত করা হয়। আমরা সেই দুটো সমাধিও দেখলাম ।

আরও কয়েকটি ছবি--- ( যমুনা নদী --যার পাড়ে তাজমহল ) ( টিকেট কেটে ঢুকার পরেই এই জায়গাটা ) ( মহল চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে এই উঁচু দেয়াল ) ( শাহজাহান-মমতাজের সমাধিতে যেতে হয় এই সিঁড়ি দিয়ে নেমেই ) ( ভিত্তি গম্বুজ এবং মিনার ) ( শ্বেত পাথরের নকশা কাটা দেয়াল,খুবই সুন্দর ! ) ( গম্বুজের ভেতরের দিক ) ( তাজমহলের চারদিকের মিনার গুলোর একটি ) ( মহলের ভেতরের মসজিদ ) তাজমহলকে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধীটিই বেশি সমাদৃত, তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখণ্ড স্থাপত্য। এটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তখন একে বলা হয়েছিল "universally admired masterpiece of the world's heritage। " তাজ ঘুরে ঘুরে দেখতে ভালই লাগছিলো।

কিন্তু প্রচণ্ড রোদে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। জলের পিপাসাও ছিল দারুণ। মহলের ভেতরেই জল পানের ব্যাবস্থা আছে সর্বসাধারণের জন্য। খুব ঠাণ্ডা আর মিষ্টি জল। সেখান থেকেই সবাই পিপাসা মিটালাম।

তারপর কিছুক্ষণ বাগানে ঘুরে বেরিয়ে ফিরে এলাম হোটেলে । ভারতের শ্রেষ্ঠ যেসব আকর্ষণ রয়েছে তার মধ্যে তাজ মহল প্রধানতম দৃষ্টি আকর্ষণীয় বর্তমান এবং চিরকালের জন্য। সাবেক একজন মার্কিন রাষ্ট্রপতি তাজমহল দেখে মন্তব্য করেছেন, ‘পৃথিবীতে দুই ধরণের মানুষ আছে- যারা তাজ দেখেছে আর যারা দেখেনি’। যাক আমি সৌভাগ্যবান ,তাজ দেখে ফেলেছি । আগামীকাল আবার অন্য কোথাও যাওয়ার অস্থিরতা মনের ভেতর এখন *** প্রথম পর্ব বলে সূচনাটা একটু বড় হয়ে গেলো ।

আমি দুঃখিত। ----->>>চলবে ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.