১৫ জুন ২০১১, সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ প্রবেশ করলাম সুইজারল্যান্ড এর “এংগেলবারগ” নামক শহরে। গরমের দিন হওয়াতে সন্ধ্যা একটু দেরিতেই হয়েছিল। হোটেলের রুমে ঢুকে বেল্কনিতে যেতেই মনে হল কোন একটা মেঘের দেশে এলাম। খুব কাছে থেকেই দেখা যাচ্ছে উঁচু পাহাড়ে ভেসে যাওয়া মেঘ গুলো ধূয়ার মত উরছে......যত দূর চোখ মেলি সবুজ আর সবুজ। পাহাড়ে ঘিরে আছে চারপাশ তার মধ্যে ভেসে যাওয়া মেঘের খেলা।
প্রকৃতির কি অপূর্ব সৃষ্টি। মন চাইল মেঘ গুলো কে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখি। চলে এলাম হোটেলের বাইরে। মিনিট বিশেক হাঁটতেই চোখে পড়ল একটি লেক। নাম “থালিয়া লেক”।
সবুজের মাঝে লেক টা হওয়াতে পানির রঙ ছিল গাড় সবুজ। পানির ওপাশে ছিল মাঠ আর কিছু লম্বা লম্বা গাছ, আশে পাশে কিছু ছোট ছোট ঘর-বাড়িও দেখা যাচ্ছিল। তারও ওপাশে ছিল পাহাড়, মেঘে ঢেকে ছিল পাহাড়ের উপরের দিকটা। দুর থেকে কিছু বরফ ও দেখা যাচ্ছিল পাহাড়ের গায়ে। সে যে কি অপূর্ব দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা দায়।
তার মধ্যে ঝিরি ঝিরি বাতাস।
পরদিন সকাল সাতটা। হোটেলের খুব কাছেই একটা পাহাড়, নাম “মাউন্ট টিটলিছ” রউনা দিলাম তার উদ্দেশে। সকাল থেকেই ছিল কুয়াশা আর বৃষ্টি। তাই গরম কাল আর মনে হল না, মনে হল কোন একটা বরফের রাজ্যে এলাম।
ঘন কুয়াশার মধ্যে ঢেকে ছিল পুরো শহরটা। কন কনে ঠাণ্ডায় আমার হাত জমে যাচ্ছিল। কেব্ল কার নামক তারের মাধ্যমে উপরে উঠে যাওয়া একটা গাড়িতে উঠে গেলাম পাহাড়টাতে। ঘণ্টা খানেক লেগে গেল উপরে যেতে। কিছুদূর উপরে উটতেই নিচের গাছ পালা, ঘর বাড়ি গুলো মনে হচ্ছিল কাগজের তৈরি খেলনা।
সব কিছু খুব ছোট ছোট দেখতে লাগছিল। পাহাড়টির উচ্চতা ছিল ১০,০০০ হাজার ফিট। ভেসে যাওয়া মেঘ গুলোও ছিল আমাদের অনেক নিচে। কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। চারিদিকে শুধু সাদা আর সাদা।
আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ছিল বরফ হয়ে। আমার খুব ভয় লাগছিল পা ফেলতে এই মনে হল পিছলে গেলাম। সেই সাথে ছিল চরম উত্তেজনা। এ আমি কোথাই এলাম। নিজেকে হাজারও বার জিজ্ঞাশা করে চলেছি।
কিছুক্ষণ পর ভয় ভীতি কাটিয়ে মজা করতে শুরু করলাম। বরফের সাথে খেলা, বরফ দিয়ে বল বানিয়া বন্ধুদের গায়ে ছুড়ে মারা। সে যে কি অদ্ভুত অনুভূতি তা আমি জানি না জানে আমার প্রান। সে আমার ভালবাসার দেশ, স্বপ্নের দেশ, মন ছুটে যাওয়া দেশ। “যা আমার স্বপ্ন কখনো ছুঁতে পারেনি তা আমার বাস্তব ছুঁয়ে দেখল”।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।