আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কঠোর আন্দোলন না, সতর্ক বিএনপির কৌশলী অবস্থান

ভাষা ধর্ম বর্ণ আর আভিজাত্যে বিশ্ব আজ বহুধা খণ্ডিত। কেউ প্রথম বিশ্বের, কেউ তৃতীয় বিশ্বের। কেউ হিন্দু কেউ মুসলমান কেউবা হিন্দু.....এত জটিলতায় কাজ নেই। আমি মানুষ এবং একজন বাঙালি এটাই হোক আমার পরিচয়। এতেই আমি গর্বিত।

দানিয়েল হাবীব নোভা, ঢাকা : তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ইলিয়াস আলী নিখোঁজসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ঈদের পর সরকার পতনের লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা থাকলেও বিএনপি এখনই সে পথে যাচ্ছে না। বরং সরকারের সাথে সমঝোতা এবং একই সাথে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কৌশলী অবস্থানের কথা ভাবছে। আগামী রোববার অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটির বৈঠকের আগে এমনই আভাস দিয়েছেন শীর্ষ নেতারা। কঠোর আন্দোলন না, সতর্ক বিএনপির কৌশলী অবস্থান এ বৈঠকে আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি, কর্মকৌশল ও নির্দলীয় সরকার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবটিও গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে গুরুত্ব পাবে বলে দলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র আরও বলছে, বিএনপির শীর্ষ মহলের অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবটি নিয়ে ভাবছে। এদিকে, দলের সাংগঠনিক অবস্থা বিবেচনা করে আগামী দিনে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের মধ্যেই মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। নেতাদের মধ্যে অনেকেই বলছেন, বর্তমানে দলের যে অবস্থা তাতে এক দফার মতো কঠোর আন্দোলন ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য বিএনপির নেই। তাছাড়া, ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জেলে থাকার কারণে রাজপথের আন্দোলনে দলটি সরব হতে পারছে না। উপরোন্তু জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপির মৌনতায় দু’ দলের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।

এমতবস্থায় সরকারের সাথে আলোচনার পথ খোলা রেখেই বিএনপি আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন করবে বলে টাইমস ওয়ার্ল্ডকে দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী আন্দোলন সম্পর্কে টাইমস ওয়ার্ল্ডকে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ও পরবর্তীতে জোটের শরিকদের সাথে বসে দাবি আদায়ের জন্য চূড়ান্ত আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সব সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। তবে তিনি দাবি করেন, যে যাই বলুক না কেন বিএনপিতে বড় ধরনের কোন্দল নেই। ফখরুল আরো বলেন, আমরা সংলাপের পথ খোলা রাখার চেষ্টা করব।

তবে সেটা হবে নির্দলীয় নিরোপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হবে। এদিকে স্থায়ী কমিটির অন্তত চারজন সদস্য টাইমস ওয়ার্ল্ডকে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন- এটাই এখন বিএনপির মূল বিবেচ্য। এ বিষয়ে সরকারের সাথে সংলাপেও বসতে রাজি বিএনপি। তবে এই আহ্বানটি সরকারের পক্ষ থেকে আসবে বলে তারা আশাবাদী।

বিএনপির নিপাট ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত স্থায়ী কমিটির এক সদস্য টাইমস ওয়ার্ল্ড’র সাথে আলাপকালে বলেন, রাজপথের আন্দোলনে বিএপির একটি বড় শক্তি ছিল জামায়াত। গত কয়েক মাস ধরে চলছে এ দু’দলের টানপোড়েন। এমন অবস্থায় বিএনপির একার পক্ষে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অসম্ভব। বিএনপির কয়েকজন নেতা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে ভোট করতে পারেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে। এ গুঞ্জন নতুন নয়, তবে এর সাথে যোগ হয়েছে আরেক গুঞ্জন- বিএনপির বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় নেতা এরশাদের জাতীয় পার্টির সাথে যোগাযোগ রেখে চলছেন।

সূত্র বলছে, রোববারের বৈঠকের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক ইতোমধ্যে শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বৈঠক একদিনের বেশি সময় চলতে পারে। টাইমস ওয়ার্ল্ড আগেই প্রকাশ করেছিল- বেগম জিয়া ৭ বিভাগসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলো সফরে যাবেন। এ সিদ্ধান্ত এখনো বহাল আছে। তবে তার সফরসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

দেশের চলমান রাজনীতিতে রোববারের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অনেকের ধারণা বিএনপির এই বৈঠক দেশের চলমান রাজনীতির মোড় ঘুরে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, গত জুন মাসের ১১ তারিখের সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ইলিয়াস আলী নিখোঁজ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি লন্ডন অলিম্পিক-২০১২’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের বিষয়টি তুলে ধরেন। সে সময় তিনি বলেছেন, ওই সরকারে বিএনপিও অংশগ্রহণ করতে পারবে।

টাইমস ওয়ার্ল্ড ২৪.কম/ আরআর/ ২৪ আগস্ট ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।