আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

প্রবাসী ঘটনার শুরু গত ১৬ই জুলাই থেকে। ঐদিন দুই জন বাঙ্গালী খুন হন আসামের কোকড়া ঝাড় জেলায়। এরপর ১৯শে জুলাই আরো দুই জন এবং একই দিনে খুন হন ৪ জন বোডো ন্যাশানাল প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্টের সদস্য। শুরু হল নিধনযজ্ঞ। বাড়ী ঘর দোর জ্বালানো, লুট খুন, শুরু করলো বোডোরা।

বোডদের আক্রমনের শিকার হচ্ছে বাংলীরা যাদের অধিকাংশই মুসলমান। এ পর্যন্ত ৪৫ জন এই দাংগায় নিহত হয়েছেন। দিল্লী অভিমূখী রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে সেখানেও হামলা হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী দাঙ্গা থেমে এসেছে কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে ত্রান এবং পূনর্বাসন নিয়ে। ৪ লক্ষ লোক ঘরবাড়ী ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ত্রান শিবিরে ।

সেখানেও নেই খাবার দাবার ,পানি ,মাথা গোজার ঠাই । আইন শৃঙ্গখলা বাহিনী ব্যার্থ এবং অভিযোগ উঠেছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তরুন গগই এর দিকে। ১৬ ই জুলাই দাঙ্গা শুরু হলেও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় ২৫ শে জুলাই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মন মোহন সিং আজ আসাম যাচ্ছেন। তিনি আসাম থেকেই ভারতীয় রাজ্যসভার সদস্য।

সাথে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বোডোরা বাঙ্গালীদের বহিরাগত দাবী করে তাদের আসাম থেকে বহিস্কারের দাবী জানিয়ে আসছেন অনেক দিন। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গড়ে ওঠে ভারতের স্বাধীনতার পর পরই। আসামের অপর প্রধান বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বায়ত্বাধীকার আন্দোলনের সঙ্গঠন হল উলফা। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর আসাম ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্য এবং আমাদের সাথে তাদের সীমান্ত রয়েছে।

আসামের চা তেল, গ্যাস, কয়লা, ভারতের অর্থনীতিতে গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা রেখে চলেছে। আসামের প্রাকৃতিক সোন্দর্য্য অতুলনীয়। এখানকার ন্যাশনাল পার্ক এবং অভয়ারন্যে রয়েছে এক শিঙ্গের গন্ডার, লাল মুখো লেঙ্গুর প্রভৃতি বিরল প্রানী। ৭৮ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের আসাম রাজ্যে উল্লখযোগ্যা সংখ্যক বাঙ্গালীর বাস । ভাষাগত দিক থেকে অহমীয়া হল প্রধান ভাষা(৫৮%) এর পরেই বাংলার অবস্থান (২২%)।

৩কোটির কিছু বেশী লোকের বাস আসামে। ধর্মীয় দিক থেকে প্রায় ৬০ ভাগ হিন্দু ২৫% মুসলমান এবং বাদ বাকি খৃস্টান, শিখ প্রভৃতি। বৃটিশ আমল থেকেই শুরু করে বাঙ্গালীরা আসামে বসতি স্থাপন শুরু করে যা চলে আসছে গত অধ্যাবধি। গত ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে আসামের জনসংখ্যা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বেড়েছে অপরাপর এলাকার চেয়ে দ্বিগুন হারে। দাঙ্গা, খুন, ঘরবাড়ী লুট জ্বালানো পোড়ানো ঘৃন্য অপরাধ।

মজার ব্যাপার হল অপরাধীরা থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। পরিশেষে আশা, ক্ষতিগ্রস্থরা নিরাপত্তা পাবে ক্ষতিপূরন পাবে, স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন শুরু করবে এবং দোষীদের শাস্তি হবে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের দাঙ্গা আর না হয় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.