বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন] যদিও আমি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েসন করেছি তারপরেও নৈতিক কারণেই আমি বুয়েটের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি। বুয়েটের এ আন্দোলন এখন আর বুয়েটের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন দেশের সকল বিবেকবান সচেতন নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আমার কাছে এ আন্দোলন, ন্যায়ের পক্ষ সংগ্রামরত, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী, একদল উজ্জীবিত মানুষের আন্দোলন। যারা ন্যায়ের পক্ষে সংগ্রাম করে তাদের পাশে দাড়ানো প্রতিটি বিবেকবান মানুষেরই নৈতিক দায়িত্ব।
গত তিনদিন ধরে এক অভিনব আন্দোলন করছেন বুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। অত্যন্ত নৈতিক কারণেই তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন বুয়েট এলামনাই এসোসিয়েশন। একদিকে ভিসি, প্রো ভিসি আর অন্যদিকে বাদবাকী সবাই।
আমি খুব অবাক হলাম, যেখানে বুয়েটের সবাই অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত কারণেই চাচ্ছেন ভিসি, প্রো ভিসির পদত্যাগ (এ দুজনের বিরুদ্ধে এক বস্তা অভিযোগ রয়েছে) সেখানে এ দু "ভদ্রলোক" অত্যন্ত বড় গলায় মিডিয়ার সামনে নিজেদের কৃতকর্মের পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন, জোকের মত আকড়ে ধরে আছেন নিজদের মহা মূল্যবান গদিখানা। নির্লজ্জতা আর বেহায়াপনাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত এই ভিসি ও প্রো ভিসি।
আমি ভাবছিলাম, যদি এমন হতো যে আমি যেখানে চাকরী করি, সেখানকার সবাই কোন কারণে আমার উপর মহা ক্ষ্যাপা হয়ে, আমার পদত্যাগের জন্য আন্দোলন করে, কোম্পানীর কার্যকলাপ স্থগিত করে, তাহলে আমি কি করতাম? আমি অবশ্যই চাকরী থেকে পদত্যাগ করতাম। আমার যদি কোন দোষ নাও থাকতো তবুও আমি পদত্যাগ করতাম। কারণ আমার সহকর্মীরা, আমাকে চাচ্ছেন না তাদের সহকর্মী হিসেবে।
আমি যদি জোর করে থেকেও যাই তাহলে কি হবে? আমার সহকর্মী যারা আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তারা আমাকে সহায়তা করবে না। সহকর্মীদের সহায়তা ছাড়া আমার পক্ষে চাকরীতে টিকে থাকা সম্ভবপর হবে না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রো ভিসির পদটির কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আস্থার ওপর। তাদের আস্থা ছাড়া ভিসি, প্রো ভিসির এ প্রতিষ্ঠানে থাকা কতটা সমীচীন? এটাতো সাধারণ জ্ঞান, এটা বোঝার মত বোধশক্তি কি বুয়েটের ভিসি, প্রো ভিসির হয়নি। তারা তো অনেক উচ্চ শিক্ষিত।
আর তাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগও রয়েছে।
একটা জিনিস লক্ষ্য করে আপনারা দেখেছেন কিনা জানি না, এ দেশে যারা অপরাধ করে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে আরো জোর গলায় কথা বলে, নিজেরা নৈতিকতা হারিয়ে মানুষকে নীতি জ্ঞান শিক্ষা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী (কালো বিড়াল) এর জ্বলন্ত উদাহরণ।
আমি মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীকে অত্যন্ত বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, দয়া করে কোন অপরাধীকে প্রশ্রয় দিবেন না। এদেশের স্বাধীণতা সংগ্রামে, এ দেশের রাজনীতিতে আপনার পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য।
সেই অবদানের কথা আমরা ভুলিনি। আপনি যদি দয়া করে দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর হোন, তাহলে আপনার প্রতি দেশের মানুষের আস্থা অনেক বেড়ে যাবে। আর বুয়েটের এ অচলাবস্থা নিরসনে দেশবাসী আপনার ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করে। আমরা চাই, অবিলম্বে বুয়েটে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসুক। বুয়েট সহ অন্যান্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকল প্রকার রাজনীতির উর্ধ্বে থাকুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।