হৃদয়ের কথা কহিয়া কহিয়া গাহিয়া গাহিয়া গান.... সুপ্রিয় ভাই ও বোনেরা আসসালামুয়ালাইকু।
আপনারা জানেন বুয়েটে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চলছে. কেন চলছে সেটাও আপনারা জানেন। এর আগে সরকার গোয়েন্দা দিয়ে তদন্ত করে তাতে ষড়যন্ত্র খুঁজে পেয়েছে যে রকম পাচ্ছে অন্যান্য ব্যাপার গুলোতেও। বাংলার আকাশ, বাতাস , মাটি সবকি আজ ষড়যন্ত্র যুক্ত।
বুয়েটের এই আন্দোলন কেন ? ভিসি নিজেও একজন অধ্যাপক মানুষ, বয়স্ক ব্যক্ত।
অনেক দিন ধরে তিনিও বুয়েট। তাহলে আজ এতদিন পরে হটাত্ কেন এই ঘটনা গুলো? উত্তর আপনাদের কে বলে দেবার দরকার নেই। আপনারা সবাই জানে। আমিও সেটা লেখার জন্য এই লেখাটি লিখতে বসিনি। বুয়েটে সক্রিয় রাজনীতি, দলীয় নিয়োগ এগুলি ছিলো না।
কোনো গোপাল ভাড় গিয়ে হয়তো রাজা মশাইকে বলেছে আমরা সেখানে নিজেদের লোক বসাই। সে আমাদের কীর্তন করবে দিন রাত। ছাত্ররা আমাদের সাথে মেলাবে হাত। হয়ে যাবে বাজিমাত।
নিয়োগ দেয়া হবে দলীয় লোক।
মেধাবীদের যা হবার হোক। রাজা মশাই ও হয়তো বুঝেছেন সেই কথা। তারপর যা হয়েছে সকলি জানা কথা।
এখন আসি আসল প্রসঙ্গে। আপনারা যারা বুয়েটের না তাদের জন্য বুয়েটের ভিতরের কিছু কথা বলি।
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা কঠিন, ভর্তি হবার পরে পড়াশুনা আরো অনেক কঠিন। আমি বুয়েটে পরেছি, বিদেশেও পড়েছি। সত্যি করে বলতে পারি বুয়েটের পড়াশুনার মান বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলির চেয়ে কোনো অংশে কম না। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সাথে বুয়েটের এই পার্থক্য হবার পিছনে বেশ কিছু কারণ আছে। কারণ এক গোটা বিশ্বে ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাটার চাকুরী বাজার ভালো।
দেশেও ভালো ছিলো , আছে । দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গুলোর মধ্যে বুয়েট সবচেয়ে পুরনো , ঢাকায় অবস্থিত এবং সরকারী ইত্যাদি। আরেকটা কারণে বুয়েটের জনপ্রিয়তা সেটা হচ্ছে বাইরের বিশ্বে যাওয়ার একটা গেটওয়ে হিসাবে বুয়েট ভালো। পাসকৃত অধিকাংশ ছেলে-মেয়েই বিদেশে গিয়ে দেশে থেকে একজন হলেও বেকার কমাতে সচেষ্ট থাকে । এজন্য অনেকে বুয়েটকে স্টুডেন্ট এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন বলে থাকে।
কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য।
এবার আসা যাক শিক্ষক প্রসঙ্গে । বুয়েটে শিক্ষক হবার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অনেক পড়াশুনা , কষ্টের পর শিক্ষক একজন ছাত্র শিক্ষক হয়। এজন্য তাকে কোনো দল করতে হয় না, মিছিল মিটিং এ যেতে হয় না, শিক্ষক হবার পর তারা সবাই বিদেশে যান পিএইচডি ডিগ্রী নেন।
আবার ফিরে এসে শিক্ষকতায় মনোনিবেশ করেন। বলা বাহুল্য তারা সবাই যে ফিরে আসেন তা না, অনেকে বিদেশে থেকে যান উন্নত ভবিষ্যতের জন্য। তবে বেশিরভাগ ই ফিরে আসেন বলে আপনারা এখনো বুয়েটের যে কোনো ডিপার্টমেন্ট এ অনেক পিএইচডি ধারী শিক্ষক পাবেন।
এবার আসি এবারের বুয়েটের ঘটনা ও তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে। বুয়েটের সাধারণ স্টুডেন্টরা যখন বাইরে থেকে যায় তখন এই অসাধারণ স্টুডেন্টদের বাইরে থাকতে কোনো সমস্যা কখনো হবে না।
তারা বাইরে ভালো ভাবে তাদের সারা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবে. আর দেশে থাকলেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে চাকুরী করলে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তখনো তো বুয়েটে শিক্ষক থাকবে। তাহলে কারা থাকবে শিক্ষক হয়ে ওই ঘরগুলিতে?
সে উত্তর আমি দিবনা। আপনারা জানেন। সকলে জানে।
দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা আজ আর শিক্ষক হতে চান না। বিদেশে চলে যাওয়াটা তাদের কাছে এর চেয়ে অনেক ভালো মনে হয়। অনেকে শিক্ষক হয়ে বিদেশে গিয়ে ডিগ্রী শেষ করে পিজাহাট এ পিজা বানান। যারা নর্থ আমেরিকার বাইরে থাকেন তারা স্বপ্ন দেখেন ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে কানাডা চলে যাবার। ইমিগ্রান্ট হয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যাবার।
আমার চেনা পরিচিত কয়েকজন বুয়েটের শিক্ষক ডিগ্রী শেষ করে দেশে ফিরে যাবেন কিনা চিন্তা করছিলেন। তাদের উত্তর টা আরো পরিষ্কার করে দেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। আর যারা দেশে বুয়েটে এখনো আছেন তারা দলে দলে বাইরে চলে আসুন। এসে দেশকে তাদের হাতে তুলে দিন যারা নাকি দেশের সেবা করতে চায়। বিদেশে থাকুন, সুখে থাকুন ।
মাঝে মাঝে রেমিট্যান্স পাঠান। তাতে আবার অর্থ মন্ত্রী খুশি হবে। দেশ উন্নত হবে। বেকার সমস্যা আর থাকবে না।
তাই আজকে বুয়েটের এই চলমান আন্দোলন সফল না হলে বুয়েটের ওই বীর শিক্ষকবৃন্দের কাছে আমার এই উদাত্ত আহবান।
“এসো বিদেশে ফিরে যাই, দেশের উপর চাপ কমাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।