বুয়েট নিয়ে হঠাৎ করে একটা ক্যাচাল পোস্ট দিলো একজন ব্লগার। তাই ভাবলাম, আমি সামান্য কিছু শেয়ার করি।
বুয়েটের ক্যাম্পাসের একেবারে পিছনে একটা মেডিক্যাল সেন্টার আছে, যেটাতে কয়েকজন ডাক্তার নিয়মিত বসেন। বুয়েটের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রাই মূলত তাদের নিয়মিত রোগী।
তবে নতুন যারা ভর্তি হয়, তারা মোটামোটি খুবই ক্ষ্যাপা থাকে এই ডাক্তারদের উপর।
কিঞ্চিত ১৮+ কারণ আছে, যেটা শেয়ার করাটা ঠিক হবে না। আর ডাক্তার রাও মনে হয় বছরের এই সময়টার জন্য খুবই তক্কে তক্কে থাকে। তুমি যত বড় ইঞ্জিনিয়ারই হতে চাও না কেন, আমার চিপা রুমে তোমাকে আসতেই হবে।
ছাত্রছাত্রীদের অষুধ কিংবা চিকিৎসা বাবদ কোনো টাকা পয়সা দিতে হতো না। তাই আমি মোটামোটি মেডিক্যাল সেন্টারের একজন নিয়মিত রোগী ছিলাম।
বছরে ১০-১২ বার ঠান্ডা লাগতো, কাশির সিরাপ আনতে যেতাম । কখনো মনে হতো একটু দুর্বল লাগছে, ভিটামিনের অভাব, যাই একটু মেডিক্যাল থেকে ঘুরে আসি। তবে সবচেয়ে বেশি যে রোগের কারণে যেতাম, সেটা হলো এসিডিটি।
আর আমারও মোটামোটি ঔষুধের নামগুলো সব মুখস্হ হয়ে যেত।
থার্ড ইয়ারের শেষের দিকে যখন ডাক্তারের কাছে যেতাম, তখন ডাক্তারকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে দিতাম না।
গিয়ে সোজা বলতাম, আমার ঠান্ডা লেগেছে, ফেনাড্রিল সিরাপ দেন, এসিডিটি আছে, ওমিপ্রাজল দেন, মাঝে মাঝে দুর্বল লাগে, ওআরএস দেন ব্ল্যা, ব্ল্যা, ব্ল্যা। আমি নিজে থেকেই নাম বলতাম, তার ডাক্তার স্লিপে নাম লিখতো। তারপর সালাম দিয়ে চলে আসতাম।
আর চতুর্থ বর্ষে গিয়ে মেডিক্যাল সেন্টারেও যেতাম না, হলের সিক বয়কে দিয়ে স্লিপ পাঠাতাম, শুধু লিখে দিতাম আমার কি কি ঔষুধ লাগবে, আর ডাক্তার সেই ঔষুধের নাম সিগনেচার করে দিতো, সিক বয় হলে ঔষুধ নিয়ে আসতো।
এই হলো বুয়েটের ডাক্তার।
বুয়েটের ডাক্তারদের জ্ঞানের বহর দেখে আমরা তখন খুব মজা করতাম, আর বলতাম,
বুয়েটের ডাক্তাররাও বুয়েট থেকে পাশ করা।
আর একটা ব্যাপার, যারা নতুন ভর্তি হয়, তারা নিজেদের চীপ ইঞ্জিনিয়ার মনে করে। প্রথম বর্ষে বাঁশ টাশ খেয়ে সুপারিটেন্ডেট ইঞ্জিনিয়ার, তারপর এক্সকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, শেষে চতুর্থ বর্ষে এসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মনে করে।
অতঃপর পাশ করার পর নিজেকে ওজনদার জিপিএ ওয়ালা বেকার ছাড়া আর কিছু মনে করতে পারে না।
অতিরিক্ত সিজিপিএ এর কারণে চাকুরীদাতারা অনেকেই বুয়েটের ছেলে মেয়েদের চাকুরীতে নিতে চায় না।
কারণ, সবাই চায়, একটু বোকা সোকা কাউকে অধীনস্ত হিসাবে রাখতে, ইচ্ছেমতো বেগার খাটানো যায় সহজে। সিজিপিএ জোর না থাকলে পালাতেও পারবে না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।