সততায় বিশ্বাসী
জনবহুল এ বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসিম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সবসময় প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। বাংলাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কলেজ দেশের প্রত্যেকটি জেলাতে বিদ্যমান থাকায় এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। অর্থাৎ বলা চলে এদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মানুষ গড়ার এক বৃহৎ কারিগর। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভয়াবহ সেশনজট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে আজ সম্পূর্ণ গ্রাস করে ফেলেছে।
এই সেশনজটের ফলে ছাত্রছাত্রীদের জীবন থেকে ঝড়ে যাচ্ছে অতি মূল্যবান সময়। আবার মানসম্মত শিক্ষাও হচ্ছে ব্যাহত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রনহীনতার কারণে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়না, ফল প্রকাশিত হয়না। অভিযোগ উঠেছে চার বছরের অনার্স ও এক বছরের মাস্টার্স কোর্স শেষ করতে আট থেকে নয় বছর সময় লাগে। অথচ একই মেয়াদের কোর্স শেষ করতে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সময় লাগে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় বছর।
অর্থাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে প্রায় দুইটি বছর অযথাই ঝড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শিক্ষার উপকরণ, প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও অবকাঠামো। প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত ক্লাশ হয়না। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা বাজারি কিছু নোটবই সংগ্রহ করে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়, যা মোটেও কাম্য নয়।
যেহেতু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের একটি বৃহৎ অংশ শিক্ষা গ্রহণ করে তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আজ জরুরী হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে যে সেশনজট আছে তা নিরসন করতে না পারলে সেশনজট ধীরে ধীরে আরও বাড়তে থাকবে। সেজন্য অবিলম্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও পরীক্ষার ফলাফল যাতে নির্দিষ্ট সময়ে দেয়া হয় সেজন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে। একটি কেন্দ্র থেকে পরীক্ষাসহ অন্যান্য যাবতীয় কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ না করা সম্ভব হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। এর মাধ্যমে কাজ সুষমভাবে বন্টিত হবে এবং পরীক্ষাগ্রহণ ও ফল প্রকাশ যথাসময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
অর্থাৎ সময়ের প্রয়োজনেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।