আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারো চলে যাওয়া, কিছু রেখে যাওয়া

এই লেখাটি একজনের পোস্ট থেকে ধার করা..আমাদের জীবনের সাথে মিলে যাওয়ায় শেয়ার করলাম আবার। যারা পড়েননি তাদের জন্য। সত্য অনেক নির্মম। অবশেষে `ও` চলে গেল। ভোর তখন ৪টা।

আমি হাত ধরে বসে আছি। ওর শরীরটা ভীষণ নিস্তেজ। ডাক্তার এলো, বলল আইসিইউতে নিয়ে যাবে। বললাম দরকার নেই। ওকে যেতে দিন।

ওর শরীরজুড়ে কষ্ট আর বুকভরা অভিমান নিয়ে ও চলে গেল। এই মুহূর্তটার জন্য ১৫ মাস ধরে মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করেছি। কিন্তু কি অবাক কাণ্ড। সব প্রস্তুতি ছাপিয়ে আমার বুকটা হাহাকার করে উঠল। প্রচণ্ড ধাক্কায় মনে হলো এই পৃথিবীতে ভীষণ একা।

কষ্ট আর কষ্ট। আমি আর পারলাম না, বাথরুমে গিয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠলাম। সত্যি সত্যি ও চলে গেল? আমাকে একা ফেলে! আমার এখন কি হবে? ১৮ বছরের যে অসংখ্য স্মৃতি তার কি হবে? আমাদের দুজনের যে অনেক স্বপ্ন সেগুলোর কি হবে? আমাদের জীবনটা যেন অর্ধেকে এসে থেমে গেল। ওর নিথর দেহটা বিছানায় পড়ে আছে। সাদা চাদরে ঢাকা।

আমি ওর দিকে তাকাতে পারছি না। সচেতনভাবে অন্যদিকে মুখ করে আছি। আমি ওর অবস্থাটা মেনে নিতে পারছি না। মনে মনে ঠিক করে ফেললাম আমি ওর দিকে তাকাব না আর। আমি বসে আছি।

শুধু শ্বাস নেওয়া আর ফেলা যদি জীবন হয় আমি বেঁচে আছি। আমার দুচোখ বেয়ে কষ্টগুলো গলে গলে পড়তে লাগল। ঠিক ১৫ মাস আগে ১০ নভেম্বর (দিনটি ছিল টিংকুর জন্মদিন) ধরা পড়ল ওর মাথায় টিউমার। আমার ডাক্তার ভাই আমাকে প্রস্তুত করার জন্য বলল, কেমো অথবা রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। আমি বললাম ম্যালিগনেন্ট? আমার ভাই বলল হতেও পারে।

আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। পৃথিবীটা যেন আমার মাথার ওপর দুলে উঠল। আমি চোখে অন্ধকার দেখতে আরম্ভ করলাম। ১৩ নভেম্বর সিঙ্গাপুরের গ্লেনিগাল হাসপাতালে অপারেশনের পর ডাক্তার ট্রিমোথিলি ওকে বলল, `তোমার গ্লাইয়ো ব্লাস্টমা গ্রেড ফোর মাল্টি ফরম টাইপ টিউমার। সবচেয়ে খারাপ ধরনের ক্যান্সারের একটি।

আমি টিংকুর হাত ধরে আছি। ও অঙ্েিজন মাস্ক পরা অবস্থায় কাঁদতে শুরু করল। আমার এখন নরম হলে চলবে না `ও` ভেঙে পড়বে। আমি খুব সহজ ভঙ্গিতে বলার চেষ্টা করলাম, এটাই তো তোমার জন্য স্বাভাবিক। তোমার সবকিছুই আন-কমন।

তোমার রক্তের গ্রুপ, তোমার মেধা-মনন, চেহারা, বুদ্ধি সবকিছু। তুমি কি করে ভাবলে তোমার সাধারণ কোনো রোগ হবে? ও কষ্টের মধ্যেও হাসতে চেষ্টা করল। ১৬ তারিখে দ্বিতীয় দফা অপারেশনের পর ডাক্তার হাসিমুখে আমাদেরকে বলল, অপারেশন খুব ভালো হয়েছে। টিংকু বলল, আমি ভালো আছি। আমি তো মহাখুশি।

ঝটপট আরাবস্ট্রিটে গিয়ে রয়াল থেকে তিনটি লেস শাড়ি কিনে ফেললাম। দোকানদার বলল, আপনাদের ম্যাডাম আমাদের দোকান থেকে শাড়ি কিনে, আমি আরও একটা ফ্রেঞ্চ শিফন কিনলাম। পাঁচ দিন পর রেডিওলজিস্ট এলো রোগীর সঙ্গে দেখা করতে। টিংকু হাসি হাসি মুখ নিয়ে প্রশ্ন করল, ডাক্তার আমার কত দিন বাঁচার সম্ভাবনা আছে? ডাক্তার বলল, পাঁচ বছর। ওর মুখে ছায়া ঘনিয়ে এলো।

আমি মনে মনে বললাম, মাত্র পাঁচ বছর। আমাদের কতকিছু এখনো বাকি রয়ে গেছে। কত কথা, কত আকুলতা। তখনো আমি জানতাম না, আমার জানার অনেক বাকি রয়ে গেছে। আমি সিটি স্কয়ার মলে ফেয়ার প্রাইসে বাজার করতে গেছি এমন সময় টিংকুর বন্ধু নাফিস ভাই ফোন করে বলল, `মুনি্ন কোনো আশা নেই, আমি তন্ন তন্ন করে ইন্টারনেট দেখেছি আট থেকে বারো মাস`।

আমার পা দুটো কেমন অবস অবস মনে হলো। আমি মেঝেতে বসে পড়লাম। এরপর থেকে চারদিকে ফিস্ফাস আট থেকে বারো। আমি ভেতরে ভেতরে ক্ষয়ে যেতে শুরু করলাম। টিংকু আমাকে বলল, `তুই এমন একটা ছেলে বিয়ে করলি যেটার হায়াত নেই`।

কি হবে মুনি্ন, তুমি এত অল্প বয়সে বিধবা হয়ে যাবে? আমি ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললাম। আমরা দুজনে কাঁদতে থাকলাম। আমরা সিটি স্কয়ার রেসিডেন্সে অনেক বড় একটা বাসা নিলাম। দেশ থেকে একজন কুক নিয়ে এলাম। শুরু হলো আমাদের পিকনিক।

প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে দুজন করে টিংকুর বন্ধু আসে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিয়ত মঙ্গল কামনাকারীরা সমবেদনা জানানোর জন্য আমাদের বাসায় আসে। আমাদের চার রুমের বাসাটি সবসময় পরিপূর্ণ থাকে। টিংকুর বন্ধু ভাগ্য দেখে আমার খানিকটা ঈর্ষা হয়। তিন মাস পর প্রথম দফা কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি শেষে ফেব্রুয়ারিতে আমরা দেশে ফিরে এলাম।

পাঁচ দিন পর আমেরিকার হিউস্টনের এমডি এন্ডারসনের উদ্দেশে রওনা হলাম। হিউস্টন খুব ছিমছাম শান্ত একটি শহর। আমেরিকায় যতবার আসি ততবারই আমার মনে হয় এত জায়গা খালি পড়ে আছে। আমাদের দেশ থেকে কিছু লোক আমেরিকায় নিয়ে এলে কি হয়। এমডি এন্ডারসন অসম্ভব স্মার্ট এবং সুন্দরী একজন অনকলাজিস্ট টিংকুকে বলল, ১৫ মাস।

টিংকু আর আমি দুজনই কাঁন্নায় ভেঙে পড়লাম। আমরা দুজন মিলে ঠিক করলাম আমরা কোয়ালিটি সময় কাটানোর চেষ্টা করব। ২০ দিন পর একবুক হতাশা নিয়ে দেশে ফিরে এলাম। সবাই বলল, তোমরা ওমরাহ করতে যাও। ২০১১ সালের মার্চে আমরা আবার সৌদি আরব গেলাম।

এরপর লোহাপড়া পানিপড়া, দোয়া-তাবিজ প্রতিনিয়ত আমাদের সঙ্গী হয়ে রইল। এবার তাওয়াফের সময় আমি একটি জায়গায় এসে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম। `হে আল্লাহ আমার অন্তরের বাইরের সবই তুমি জান। আমি যা জানি না তাও তুমি জান। আমার ভাগ্যে যা আছে তা অবশ্যই হবে।

তুমি আমাকে শক্তি দাও আমি যেন তা সইতে পারি। ` আমার দুই চোখ পানিতে ভিজে এলো। ও প্রতি মাসে পপসি ভাইকে নিয়ে সিঙ্গাপুর যেত। পপসি ভাই ডাক্তার। ওর নিকটতম বন্ধুদের একজন।

আমি যেতে চাইতাম না। ভয় পেতাম। জুলাই এবং আগস্টে আরও দুটি অপারেশন হলো। প্রথমটা মাথার খুলিতে, দ্বিতীয়টা গামা লাইফ সার্জারি। অপারেশন না করে উপায় ছিল না।

নতুন করে তিন জায়গায় গ্রোথ হয়েছিল। শেষবার কোরবানি ঈদের পর যখন `ও` সিঙ্গাপুর গেল টেলিফোন করে হ্যালো বলার পরিবর্তে শুধুই কান্নার শব্দ। আমি যা বোঝার বুঝে নিলাম। শুধু বললাম চলে আস আমার কাছে। দুই দিনের ব্যবধানে ওর ডান পা প্যারালাইসিস।

আমি ওকে বললাম, আমার অনেক দিনের শখ আমরা একসঙ্গে এক প্লেটে খাবার খাব। এখন থেকে আমি তোমাকে খাইয়ে দেব, গোসল করিয়ে দেব, দাড়ি সেভ করে দেব, প্রতিদিন একেক ব্র্যান্ডের পারফিউম লাগিয়ে দেব, চুল অাঁচড়ে দেব। এসবই করব আমি আমার নিজের ভালোলাগার জন্য। আমি সব সময় তোমার সঙ্গে থাকব। টিংকু সাংঘাতিক খুশি হলো।

ও খুব আড্ডাবাজ। এক মুহূর্ত মানুষ ছাড়া থাকতে পারে না। বাসায় বসে থাকা ওর পছন্দ নয়। ওর জন্য হুইল চেয়ার কিনলাম। ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ আমি ঢাকায় মোট চারটি ক্লাবের মেম্বার।

এই প্রথম আমি খেয়াল করলাম ক্লাবগুলো ছাড়াও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, নামিদামি শপিং সেন্টার, দেশের পাঁচতারা হোটেল, কমিউনিটি সেন্টার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কোথাও হুইল চেয়ারের জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থা নেই। তার মানে আমরা কি কখনো বুড়ো হব না? নাকি বুড়ো মানুষের আনন্দ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই? শারীরিক প্রতিবন্ধী যারা, তারা কি সব সময় অকেজো হয়ে গৃহবন্দী থাকবে? পঙ্গুত্ব কি তাদের অপরাধ? নাকি অভিশাপ? তারা কেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না? আমি শার্ট-প্যান্ট পরিয়ে বুকের উপর চাদর জড়িয়ে হুইল চেয়ারে করে মতিয়া আপার বাসায় নিয়ে গেলাম, আপা দোতলা থেকে নেমে এলো। মুক্ত বাতাসে ঘুরতে পেরে ও ভীষণ খুশি। প্রতিদিন জেদ ধরত বাইরে ঘুরতে যাবে। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাব আমি? বড়জোর সংসদ ভবন অথবা রমনা পার্ক।

ধীরে ধীরে ওর পুরো ডান দিক প্যারালাইসিস হলো, শুরু হলো বাঁ দিক। আমি ফিজিওথেরাপি আর আকুপ্রেসারের জন্য দুজন লোক নিয়োগ দিলাম। সেই সঙ্গে চলল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। বাড়িভর্তি লোকজন শুধু টিংকুকে খুশি রাখার জন্য। সব প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে চলার অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল ওর।

দুই দিক প্যারালাইসিস। কথা বলতে পারে না, চোখেও ঠিকমতো দেখে বলে মনে হয় না, তারপরও আমাকে খুশি করার জন্য চুটকি বাজিয়ে গানের সঙ্গে নাচের চেষ্টা করত। আমি খুশি হওয়ার ভাব করতাম কিন্তু কষ্টে আমার বুকটা দুমড়ে-মুচড়ে যেত। আমি জানি ওর হাতে সময় নেই। খুব দ্রুত সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে।

ওকে আমার প্রেমিক স্বামী কিংবা বন্ধু নয়, ছোট বাচ্চার মতো মনে হয়। খানিকটা অবুঝ, অসহায়। ভীষণ মায়া লাগে। আমার সবটুকুন নিংড়ে দিয়ে ওকে বাঁচিয়ে তোলার ইচ্ছা জাগে। ১০ জানুয়ারি ল্যাবএইডে ভর্তি করাতে বাধ্য হই।

এরপর এ একমাস শুধু অপেক্ষা। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। দৌড়ে পালাতে ইচ্ছা করে। কিন্তু পারি না! সারাক্ষণ বসে বসে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। কোথা দিয়ে দিন হয় কোথা দিয়ে রাত আসে তাও জানি না।

টিংকুর নাকে রাইস টিউব। মুখে অঙ্েিজন মাস্ক, স্যালাইন আর ইনজেকশন দেওয়ার জন্য বুকের ডান দিকে সিভিল লাইন করা, সারাক্ষণ কেবলই উৎকণ্ঠা এই বুঝি শেষ। শেষ পর্যন্ত সবই শেষ হয়ে গেল। ওকে সকাল ৭টায় আঞ্জুমান মুফিদুলে গোসলের জন্য পাঠিয়ে আমি বাসায় এলাম। বাথরুমের দরজা বন্ধ করে প্রথমে নাকফুল খুললাম তারপর চুড়ি।

আমি সায়েন্সের ছাত্রী। খানিকটা যুক্তিবাদীও। আমার মধ্যে কখনো কোনো কুসংস্কার কাজ করত না। এই প্রথম আমার মনে হলো, নাকফুল আর চুড়ির সঙ্গে খুবই রোমান্টিক একটা সংস্কার জড়িয়ে আছে। আমি বললাম, আমাকে একটা সাদা শাড়ি বের করে দাও, আমার ছেলে বলল, সাদা কেন পরতে হবে।

পৃথিবীর সব রং (লাল, নীল, হলুদ) সাদাতে সমানভাবে আছে। এ জন্য এটাকে পবিত্র রং মনে করা হয়। আমি বললাম, এটা প্রতীকী অর্থে তোমার আব্বুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য। তোমরাও সাদা কাপড় পর। টিংকুর বন্ধু সাজ্জাদ ভাই আমাকে বলল, টিংকুর ব্যবহার করা জিনিসগুলো মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিও।

ওদের কাজে আসবে। এটাই নিয়ম। টিংকুর পাঞ্জাবি, প্যান্ট, শার্ট, টাই-কোট সবকিছুই আমি বিলিয়ে দেব। কিন্তু আমি? আমরা রাউজানের উদ্দেশে রওনা হলাম। হঠাৎ টিংকুকে বহন করা আঞ্জুমান মুফিদুলের গাড়ি।

আমার বুকটা হু হু করে উঠল। আমার চোখ গড়িয়ে পানি পড়তে লাগল। আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা আজ বরফের গাড়িতে শুয়ে আছে। আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলাম। রাউজান, টিংকুর স্বপ্নের গ্রাম।

কত স্বপ্ন ছিল কত সাধ ছিল এই গ্রামকে ঘিরে। সবকিছুই অপূর্ণ রয়ে গেল। টিংকুর হাত ধরে প্রথম যেদিন আমি এই গ্রামে বউ হয়ে এসেছিলাম অনেক মানুষ এসেছিল আমাকে দেখতে। আমি লজ্জাবনত চোখে হেসেছিলাম। আমার গা-ভর্তি গহনা ছিল, পরনে লাল শাড়ি।

আজ বিচ্ছেদের দিন। প্রথম দিনের চেয়ে অনেক বেশি লজ্জা আমাকে ঘিরে রেখেছে। এ লজ্জা অপারগতার লজ্জা, এ লজ্জা সব হারানোর লজ্জা। আমি সাদা শাড়ির উপর একটা কালো বোরকা পরে নিলাম। প্রথমে যেদিন আমি এ গ্রামে এসেছি সবাই আমার হাতে-কানে গলার গহনা দেখেছে।

আজও দেখছে। তবে তফাৎ আছে। আজ কিছুই না পেয়ে অবশেষে একজন বলল, ঘড়িটা খুলে ফেল। আমাদের দেশে মহিলারা প্রচণ্ড রকম অবহেলিত, অবদমিত। তাই বেশির ভাগ মহিলা অন্যের শোকের মাঝে নিজের সুখ খুঁজে ফিরে।

মহিলাটির জন্য আমার কষ্ট লাগল। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে একটি ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কিন্তু এ মুহূর্তে সবকিছু ছাপিয়ে এই গণ্ড পাড়াগ্রাম আর তার মানুষগুলোকে আমার অনেক আপন মনে হচ্ছে। আমি উল্টা ওদের সান্ত্বনা দেওয়া শুরু করলাম।

ওদের ভালোবাসাটুকুন এই মুহূর্তে আমার বড় প্রয়োজন ছিল। আমি কাঙ্গালের মতো ওদের ভালোবাসায় ডুবে রইলাম। ভীষণ পরিশ্রান্ত ছিলাম। ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম ভাঙল ঘড়িতে দেখি ৪টা।

আমার টিংকুর কথা মনে হলো। আমি শব্দ করে কাঁদতে থাকলাম। কোথায় চলে গেল আমার বুকের মানিক, সাতরাজার ধন। অসুখ ধরা পড়ার পর `ও` আমাকে বলত, এমন একটা সময় আসবে তুমি আমাকে খুঁজবে শুধু, পাবে না। আমি এখন প্রতি মুহূর্তে খুঁজে ফিরি।

দোলনা পাড়া ছাদে, পুকুর ঘাটে, ক্ষেতের আড়ে, আমাদের শোয়ার ঘরে। নাম না জানা দেশে কোথায় আছে `ও` এখন? কেমন আছে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.