আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার নপুংশক বেলা (নারীরা নিজ দায়িত্বে ঢুকবেন)

২০০৪ সালের মধ্যবর্তী সময়...এস.এস.সি পরীক্ষা শ্যাস..মাস দুয়েকের ছুটির প্রায় শ্যাস পর্যায়ে খাড়াইয়া রইছি...ছুটির রাজত্ব দখল করতে আসন্ন রেজাল্টের হুমকি ধামকি কানে বাজা শুরু হইছে...আম্মা সরাসরি জানাই দিছে পরীক্ষায় ফেল করলে একটা চায়ের ফ্লাক্স কিন্না বাসা থেকা বাইর কইরা দিবো...আব্বাও নিরব সমর্থন দিয়া দিছে...ঠিক সেই সময়েই আমার জীবনে এমন ঘটনা ঘটছিলো যেটার ৫০% ও যদি অ্যাকুরেটলি কই তাইলে মডু কর্তৃক নির্বাসিত হওনের চান্স ১০০%...চেস্টা করুম ইশারা ইংগিতে কথা কওনের..যাই হোক আসল কথায় আসি... তখন আমার বোনের বাচ্চা হবে তাই বইন আমাদের বাসায় আইসা থাকে..আমি আজাইরা খাই বিজাইরা ঘুরি তাই আমার কচি কান্ধে দুলাভাইরে খাওন সাপ্লাই দেওনের দায়িত্ব পড়ছে...আম্মায় একেবারে ৪/৫ দিনের খাওন রাইন্ধা দেয়, আমি ডেলিভারি দিয়া আসি আর মনে মনে দুলাভাইরে শালা কইয়া গালি দেই..যথারীতি একদিন আমারে আম্মা খাওন দিয়া পাঠাইছে...আমি মুখ কালা কইরা টিফিন ক্যারিয়ারে কইরা খাওন নিয়া ছুটতাছি...এই কামডা আমার আসলেই প্রচন্ড বোরিং লাগতো...কিন্তু না নিয়া যাওনের উপায় নাই...কারন সামনে রেজাল্ট আর এই সময় মুরুব্বি গনের দোয়ার জরুরাত আছিলো..তাই মুরুব্বিগোরে খুশি রাইখ্যা যতটুকু দোয়া কামানি যায় ...কলবাগান বাসস্ট্যান্ড থেকা বাসে উইঠা সোজা মিরপুর বাসস্ট্যান্ডে নাইমা রিকশা না পাইয়া 'ভিগে হোট তেরে, পেয়াসা দিল ম্যারা,লাগে আবরেসা মুজে তান তেরা' গান গাইতে গাইতে মাজার রোডের দিকে হাটা শুরু করলাম...মাজারের সামনে আইতেই দেখি ৫০/৬০ জন মানুষ জটলা বাইন্ধা কি জানি দেখতাছে...কিউরিসিটি ধইরা রাখতে ব্যর্থ হইলাম...দুই আংকেলের কোমরের চিপা দিয়া কুনমতে মাথা আর ঘেডি হান্দাইলাম...দেখি ভিতরে একটা ২০/২২ বছরের একটা শুকনা পোলা ম্যাজিক দেখাইতাছে......খাওন দাওন ছাড়া আরেকটা বিষয় ম্যাজিক যেইটাতে আমার লিমিট ছাড়া আগ্রহ...তাই আমারে আর পায় কেডায়...কেইচ্চার মতন মোচড়াইয়া বেকাইয়া বাকি শরীর ডাও দুই আংকেলের দুই কোমড়ের চিপা দিয়া উদ্ধার কইর‌্যা নিয়া আইলাম...শরীরটা তো নিয়া আইছি কিন্তু টিফিন ক্যারিয়ার টা আন্তে গিয়া আংকেলের জামায় ক্যারিয়ার বাইয়া পড়া ঝোলের ছোপ পইরা গেলো...আংকেলে 'ঐ ছ্যারা করছসডা কি ' কইয়্যা আমার কান ধইরা টানা শুরু করলো...আমার কি আর অত শত হুশ আছে নাকি...আংকেলে কান ধইরা টানে আর আমি হা কইরা ম্যাজিক দেখি...আংকেলে আমার কান টাইনা আমার কনসেন্ট্রেশন গ্র‌্যাব করার চেষ্টা কইরা ব্যার্থ হইয়া ফাজিল ছেমরা, বেহায়া ছেমরা কইয়া দুইডা ঠুয়া মাইরা ছাইরা দিলো...মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে ম্যাজিশিয়ানের সামনে খারাইয়া ম্যাজিক দেখতাছি....হালায় দুইডা বল রে ৪ টা কইরা দেয়, ৪ টারে আবার দুইডা কইরা দেয়....পানিরে দুধ বানাইয়া দেয়, আবার আরেকজনের কান দিয়া দুধ বাইর করে ইত্যাদি হাবি জাবি ম্যাজিক দেখাইতাছে...আমি দুলাভাইয়ের খাওন নিয়া খারায়া খারায়া তাই দেখতাছি....হঠাৎ ক্রাচে ভর দিয়া কালা পান্জাবী পরা একটা লোক ঢুকলো আসরের মইধ্যে...পান্জাবী ওয়ালা ঢুকতেই ম্যাজিশিয়ান তারে পায়ে ধইরা সালাম কইরা সমবেত জনগনের উদ্দেশ্যে লোকটার পরিচয় বর্ননা করলো এবং তারে উস্তাদ কইয়া সম্বোধন করলো....উস্তাদ নাকি তার চাইতেও বড় ম্যাজিশিয়ান..এবার উস্তাদে কওয়া শুরু করলো... 'ভাইয়েরা আমারে দেইখা কেউ করুনা কইরেন না..আমি ল্যাংরা হইতে পারি কিন্তু আমি একজন গুনী শিল্পী..এহন আপনেরা জিগান আমি কিসের শিল্পী'.. ভীড়ের মইধ্য থেকা একজন জিগাইলো কিসের শিল্পী...উস্তাদে কইলো 'আমি বিটিভির তালিকা ভুক্ত শিল্পী..আমি জীবনে ১৭ টা নাটকে অভিনয় করছি..আগামী মঙ্গলবার আমার একটা নাটক বিটিভি তে প্রচারিত হবে..মাসতিনেক আগে মোটর সাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে আমার পা হারায় ফেলছি...এখন আর নাটক করতে পারি না তয় আপনাগোর দোয়া রাস্তায় রাস্তায় ম্যাজিক দেখাইয়া আমার দিন ভালই চইলা যায়...সারা ঢাকা শহরে আমার ১১ জন সাগরেদ ম্যাজিক দেখায়'। আমার আগ্রহ আরো বাইরা গেলো....উস্তাদে হঠাৎ কইলো 'আপনেরা পকেট থেকা ২ টেকা বাইর কইরা সামনে ধরেন আমি সেইডা ধইরা সবার অতীত ভবিষ্যৎ কইয়্যা দিমু ভুল হইলে আমার গাল আপনেগোর জুতা' ...মনে মনে কইলাম পাইছি চান্স...সামনে এস.এস.সির রেজাল্ট...পান্জাবি উস্তাদরে দিয়া রেজাল্টের খবরডা জাইনা লইলে খারাপ হয়না....তো আমি সহ আর ১০/১২ জনে টেকা মেইলা খাড়াইয়া গেল...তখনই হঠাৎ বুজলাম যে জীবনডাই একটা পরীক্ষার হল এইহানে সবাই পরীক্ষা দেয়...পরথম জনের টেকা ধইর‌্যা কইলো 'অই আমি তোর কোন কিছুই কমু না, তর মন পরিস্কার না, যা আগে মন পরিস্কার কইরা আয় তারপরে কমু'.... শুইনা নগদে মন থেকা তৎকালীন হার্টথ্রব কারিনা, মল্লিকা সেরেওয়াত, রানী মুখার্জির চিন্তা মুছনের জোর চেস্টা করা শুরু করলাম...কিন্তু ম্যাডামেরা আরো জড়াইয়া ধরে...মনে মনে চিন্তা করলাম হালায় তো আমার কথাও কিছু কইবো না...ডরে ডরে বাকী লোক গুলানের অতীত-ভবিষ্যৎ শুনায় মনোযোগ দিলাম...আরেক জনের টেকা ধইরা কয় 'তর নাম আব্দুল হালিম(কোন একটা নাম বলছিল,মনে নাই)তুই ১৫ দিন আগে রাগ কইর‌্যা বাড়ি থেকা বাইর হইয়া ঢাকায় চইলা আইসস, যা বাড়ি ফেরত যা' ...পোলায় দেখি নগদে ভ্যাবাচেগা খাইয়া গেল, লগে আমরাও..তার পাশের বেডা ডার টেকা ধইরা কয়... 'আপনে বহুত টেনশনে আছেন,পরিবারে বিশাল ঝামেলা চলে, বাসায় চরম অশান্তি, তবে মাস খানেকের মইধ্যেই অশান্তি দুর হবে' ...আরেক পুলার টেকা ধইরা কয় 'তুমার লগে জেসমিন নামের এক ছেমড়ির লগে মহব্বত হইছে, কিন্তু ছেমরির বাপে রাজি না' ....আমি তো মনে মনে কই্তাছি উস্তাদ তুমি তারাতারি আইসা খালি আমার রেজাল্ট ডা কইয়া যাও...এমনে সবার টা কইয়া অবশেষে আমার কাছে আইলো...আমার বুক ধকধক করা শুরু করলো....উস্তাদে কইলো 'তুমি পোলাডা বেশ ভালা তয় বন্ধু বান্ধব থেকা সাবধান' ...কইয়া ১৮০ ডিগ্রী টার্ন মারলো আমারে কিছু না জিগাইতে দিয়াই...তারপরে আমাগোরে কইলো 'আরো ডিটেইলে জানতে হইলে নীরব জায়গায় যাইতে হইবো...কারন এই খানে হাজার মাইনষের সামনে এইসব গোপন কথা কওন যাইবো না' ...কইয়া উস্তাদে মাজারে আন্ডার কন্স্ট্রাকশন মার্কেটের ভিতরে হাডা ধরলো....আমার তো রেজাল্ট জানতেই হইবো...আমিও নগদে হাডা ধরলাম উস্তাদের পিছে পিছে....একটা খালি দোকানে ঢুকলাম ১২/১৫ জন....উস্তাদে আমগোরে দেইখ্যা অনেক খুশু হইলো....একটু পরে আরো দুইডা বেডা আইসা ঢুকলো আর দোকানের শাটার নামাইয়া দিলো ....উস্তাদে বয়ান শুরু করলো.... 'আপনেগোর গোপন কথা যেন বাইরে না যায় তাই শাটার নামাইয়া দিলাম....এবার সবাই হাত সামনে বাড়ান' ...সবাই বাড়াইলাম...সবার হাতে একটা কইরা হলুদ রংগের পাথর রাখলো ...তারপর আবারো বয়ানে গেলো...কইলো যে 'আমি আসলে কামরূপ কামক্ষার একজন যাদুকর...আমার লগে তেরামি না করলে আমি খুব ভালো মানুষ আর নইলে আমি জানোয়ার' ..তারপর আমগোর দিকে তাকাইয়া জিগাইলো যে 'আমার লগে খারাপ করলে আমি কি?' ...একজনে উত্তর দিলো জানোয়ার...তারপরে দেখলাম হালায় ক্রাচ ফালাইয়া দুই পায়ে খাড়াইয়া গেলো...দেইখাই ভিরমি খাইলাম। যেই পোলায় জানোয়ার কইছে অরে গালি দিয়া কইলো 'আমারে জানোয়ার কইলি তুই' কইয়াই গলার তাবিজ দিয়া বাড়ি দিতেই পোলার মিরকী ব্যারাম শুরু হইলো আর মুখ দিয়া ফেনা বাইর হওয়া শুরু করলো...তারপরে আরেকজনের পাশে গিয়া খাড়াইতেই সেই বেডায় ঝরঝর কইরা প্যান্টে মুইতা দিলো(সত্যি সত্যি)...উস্তাদে কইলো থাক 'তরে আর কিছু কইলাম না...আমি কামরূপ কামাক্ষায় ছিলাম ১৫ বছর..বান মারা আমার কাম..একবার গুলিস্তানে এক বেডায় আমারে কইছিলো ফালতু লোক..তার টাওয়ারে বান মাইরা দিছি..৩ দিন পরে বেডা আর বেডার বউ আইসা আমার পায়ে চুমা খাইয়া ২০০০০ টেকা দিয়া টাওয়ার ঠিক কইরা নিয়া গ্যাছে' ..তারপর আরেকজনের পাশে গিয়া খারাইয়া তার মাথায় হাতের ব্রেসলেট দিয়া বারি মারতেই বেডা আর কথা কইতে পারলো না...মনে হইলো বেডার দম বণ্ধ হইয়া আইতাছে...উস্তাদে কইলো 'এই বেডারে মাইচ্ছা বান মারছি, মাছরে পানি থেইকা উঠাইলে যেমনে মইরা যায় অয়ও সেমনে মইরা যাইবো, অরে কে কে বাচাইতে চান' ...নগদে সবাই হাত উঠাইলাম ...উস্তাদে কইলো 'সবাই পায়ে পা মিলাইয়া খাড়ান' ...কইতে দেরি খাড়াইতে দেরি নাই... উস্তাদে কয় 'সবাই তারে তিনডা কইরা ফু দেন' ..দিলাম ফু...ফু দিতেই হালায় ঠিক হইয়া গেল.. ..তারপর উস্তাদে কইলো 'তগোর হাতে যেই পাথর দিসি অইটার হাদিয়া দে' ...একজনে ৫০ টেকা দিলো...উস্তাদে খেইপা গিয়া কইলো যে 'নাটকির পো যা আছে তাই দে' ....বেডায় কইলো যে আমার কাছে আর ৪০ টেকা ছাড়া আর নাই... উস্তাদে কইলো 'আমি কিন্তু জানি তর জুতার ভিতরে ১৭০০ টেকা লুকানি আছে...অইডা বাইর কইরা দে নইলে কিন্তু গুটি গায়েব কইরা দিমু..যারা যারা মিছা কথা কইয়া টেকা লুকাইয়া রাখবো অগোর জোড়া গুটি আমি গায়েব কইর‌্যা দিমু' ...বিশেষ অংগের মাল্টিপারপাস ইউজের কথা জানছি বেশি দিন হয়নাই...এর মইধ্যেই যদি গুটি গায়েব হইয়া যায় তাইলে তো আফসুসের শ্যাস থাকবো না..নগদে পকেট হাতরাইয়া দেখি ৫২ টেকা আছে, বাইর কইরা দিয়া কইলাম উস্তাদ আমার কাছে আর নাই. ..উস্তাদে কইলো '০নাই তো, দেখিস আবার'. ..আমি ডরে ডরে কইলাম না উস্তাদ, আসলেই নাই... 'যা টেকা ডা দিয়া বিচি চিপ দিয়া ধইরা দম বন্ধ কইরা দৌড় দিয়া বাইর হইয়া যা, কেউ ডাকলে তাকাবি না, বিচি ছাড়বি না..নইলে কিন্তুক গায়েব হইয়া যাইবো' ...আমি তো দম বন্ধ কইরা জায়গা মতন মুঠ কইরা চিপ দিয়া ধইর‌্যা খিচ্যা দৌড় দিলাম...এক হাতে টিফিন কেরিয়ার আরেক হাতে সম্পত্তি ধইর‌্যা সারা রাস্তা দৌড়াইতে দৌড়াইতে দুলাভাইয়ের বাসায় আইসা পৌছাইলাম...বাসার সামনে আইসা দেখি দুলাভাই আমার দিকে তাকাইয়া রইছে...শরমের মাথা খাইয়া টিফিন কেরিয়ার রাইখ্যা বাথরুমে ঢুইকা দুইয়ের নামতার প্র‌থম লাইন দিয়া হিসাব কইরা দেখলাম যে ঠিকই আছে...শান্তির নিশ্বাস ফেইলা বাথরুম থেকা বাইর হইয়া দুলাভাইয়ের কাছ থেকা ৫০ টেকা নিয়া পকেটে ঢুকাইতে গিয়া হাতে একটা কি জানি লাগলো...বাইর কইরা দেখি ১ টেকার ১টা কয়েন..কইলজার মইধ্যে কামুর দিয়া উঠলো...উস্তাদরে তো মিছা কথা কইয়া ফালাইলাম...এহন তো আমার ঘন্টা গায়েব হইবো নিশ্চিত..ডরে ডরে বাসার দিকে রওনা দিলাম, বাসের মইধ্যে সারা রাস্তা টিপা টিপা দেখছি সে পিস্তলের ম্যাগজিন ঠিক আছে কিনা...চান্স পাইয়া দুইবার উকি মাইরাও দেখছি যে ম্যাগজিনের ২টা গুলি আছে কিনা....বাসায় আইসা প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর অন্তর চেক করছি যে মার্বেল ঠিকঠাক রইচে কিনা...হঠাৎ ফিল করলাম টাওয়ার তো ঠিকই আছে কিন্তু টাওয়ারে কুনই নেটওয়ার্ক নাই...একরাশ ডর গ্রাস করলো..নানান ভাবে চেস্টা নিলাম...উমহু কুনো লাভ হয় না...টেনশনের কথা না পারি কাউরে কইতে না পারি সইতে...রাইতে কুন মতে ঘুমাইতে গেলাম...সকালে ঘুম ভাইন্গা দেহি অরে রেএএএএ টাওয়ারে ফুল নেটওয়ার্ক..... (সংক্ষিপ্ত ও পরিমার্জিত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.