গতকাল একটি খবরে পিলে চমকে উঠল! সাথে সাথে নিজের সত্ত্বার কাছে প্রশ্ন করলাম- আমরা কি হিজড়া হয়ে গেলাম? আমরা কি স্বাধীন দেশের জনগণ? তিরিশ লক্ষ লোক আসলে কি জন্য তাঁদের মহামূল্যবান জীবন উৎসর্গ করেছিলেন? কিভাবে একটি ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষী মহল সাহস পায় তাবৎ জাতিকে বিভ্রান্ত করার, তাদের জন্মগত ও নাগরিক অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার? এত ধৃষ্টতা এরা কোথায় পায় আমাদের চলার পথ রুদ্ধ করার?
গতকাল থেকে কোন পূর্ব ঘোষনা না দিয়েই বি.আর.টি.এ ১৯৯৫ সনের আগের তৈরি সব যানবহনের ফিটনেস সনদ দেয়া স্থগিত রেখেছে। তারা সরকারের দোহাই দিয়ে বলছে যে সরকার যা বলেছে তাই তারা বাস্তবায়ন করছেন-যদিও এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশ কোন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়নি। তারা সরকারের খাস পাচাটা, তাই সরকার যা বলবেন তারা তাই করবেন। তাতে সাধারণ মানুষের কি লোকসান হল তাতে তাদের মাথা ব্যথা নেই- সত্যিইতো; তাদের মাথা থাকলে তবেই না ব্যথা হবে!
যানযটে ঢাকাবাসী নাকাল-তাই ঢাকাবাসীদের আরাম দেয়ার জন্য তাদের কাছথেকে গাড়ীগুলো কেড়ে নাও! বিগত ৩৫ বৎসরে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে ঢাকা শহর প্রসারিত হয়েছে ঠিক সে অনুপাতে কিন্তু কোন সরকারই রাস্তা প্রসারণের কাজ করেন নি, উন্নতি করেন নি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থারও। উন্নতির নামে কেবলই করে গেছেন দুর্নীতি আর লুন্ঠন।
তাই আজকের এ অবস্থা। এখন আবার ষড়যন্ত্র করছে আপনার আমার সম্পদ লুন্ঠনের।
গাড়ীতো একটি যান্ত্রিক বাহনমাত্র; আলু, পটলের মত কোন পচনশীল সব্জী নয় যে ১৫ বা ২০ বছরের পুরনো হলে পঁচে গলে পড়বে; রাস্তায় বের হলে পুঁতি গন্ধ ছড়াবে আর তাতে নপুশংক সরকারের একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানের হিজড়া কর্মকর্তাদের চলাফেরায় অসুবিধা হবে। ঠিকমত সার্ভিস ও মেরামত করলে এবং যন্ত্রাংশ বদলালে যন্ত্র কখনো পুরনো হয় কিনা আমার জানা নেই। গাড়ী দেখতে যেমন তেমনই হোক না কেন- তা যদি পরিবেশ দূষণ না করে; রাস্তায় ভেঙ্গে না পড়ে তাহলেই তো হল।
তার বয়েস কত তাতে কি আসে যায়। আমরা রাস্তায় বহু সরকারী গাড়ী দেখি যা ভদ্র সমাজে চলার অনুপোযোগী; কিন্তু সেগুলো বহাল তবিয়তেই সব ধরণের দূষণ পূর্ণ মাত্রায় ঘটিয়ে তারা চালিয়ে যাচ্ছেন; আর সাধারণ জনগণের ভাল গাড়ীগুলো খারাপ হয়ে গেল। যতসব মামদোবাজী! তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকাবাসী কোন জ্যাম দেখেনি কেন? তখন তো মাত্র ৮ জন উপদেষ্টা দেশ চালিয়েছেন এবং তখন গাড়ীর সংখ্যাও আজকের চেয়ে কম ছিলোনা। তাহলে বর্তমান সরকার তার চেয়ে দশগুণ লোক বেশি দিয়েও ঠিকমত কেন ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে পারছেনা? তাদের এই ব্যর্থতার মাসুল কেন সাধারণ জনতা চুকাবে? সাধারণ মানুষ অমানুষিক কষ্ট করে অপ্রতুল বাসে, রিক্সায়, ট্যাক্সিতে করে জীবনের ঝুঁকিনিয়ে চলাচল করছে প্রতিদিন। সেই সমস্যার সমাধান করতে তো কোন সরকারকে কখোনোই দেখিনি, উল্টো এখন তারা সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলছেন এই বিবেচনাহীন নজরিবিহীন সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে।
জনগণের ভোটের রায় নিয়েই এরা ক্ষমতায় যায়; অথচ নির্লজ্জেরমত এরা জনগণেরই ক্ষতি করে যায়! কি অসম্ভব রকমের ধৃষ্টতা! জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় এই সমস্ত কৃতঘ্নদের মুখের অন্ন জোটে; অথচ কি নির্দয়ভারে এরা জনগণেরই বিরুদ্ধাচরণ করে! যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের মত লিপস্টিক (!)দেয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কতটা যুক্তিযুক্ত তা প্রশ্ন সাপেক্ষ এবং সরকারের এহেন বিবেচনাহীন সিদ্ধান্তেও জনগণ বিস্মিত ও তাদের কর্মকান্ডে বিভ্রান্ত।
এই বাজেটে নতুন ও রিকন্ডিশান গাড়ীর ওপর বর্ধিতহারে করারোপের ফলে গাড়ীর মূল্য বৃদ্ধি পায়। কয়েকটি মুনাফালোভী গাড়ী ব্যবসায়ীর সংগঠনের ব্যবসায়ীরা মনে করেছিলেন তাতে তারা অধিক লাভবান হবেন। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। সাধারণ মানুষ অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ীর দিকে ঝুঁকে পড়ল।
আর অমনি তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তারা বীজ বুনলেন একটি নতুন চক্রান্তের-পুরনো সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ী নিষিদ্ধ করার চক্রান্ত! পুরনো গাড়ী নিষিদ্ধ করলে এই সব গাড়ীর মালিকগণ রিকন্ডিশান ও নতুন গাড়ী কিনতে বাধ্য হবেন। তাই তারা জোট বাধলেন কিছু অসাধু সরকারী প্রতিনিধির সাথে। মনে হয় বিশাল অংকে ডিল ফয়সালা হয়েছে। তা বলি- পয়সা কি ছাগলের পুচ্ছদেশ দিয়ে বের হয় নাকি যে যখন তখন তা পাওয়া যাবে? সাধারণ মানুষের হাতে অত টাকা থাকেনা বলেই তো সে পুরনো গাড়ী কেনে।
যত সব মোটা মাথার লোকজন। এরা কিভাবে আবার গাড়ীর ব্যবসা করে বুঝিনা। যত সব ছাগলের দল। আল্লাহ এদের হেদায়াত করুন, এদের মাথায় শুভ বুদ্ধির উদয়হোক সেই কামনায়.......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।