আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোকো যেভাবে খবরের শিরোনাম হন

মেঘ দেখে তুই করিস না ভয় , আড়ালে তার সূর্য হাসে. পরপর পাঁচবার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে 'চ্যাম্পিয়ন' করা খেলোয়াররা একসময় কট খান... ২০০৮ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি ইতালির সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) লরা পেডিও স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পায় ঢাকার ইতালি দূতাবাস। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করা চিঠিটি ছিল মূলত একটি অনুরোধপত্র। ওই চিঠির সঙ্গে সিমেন্সের নিয়োগ করা মার্কিন ল ফার্ম দেভভয়েস অ্যান্ড প্লিমটনের তৈরি একটি প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্তসার পাঠানো হয়। তাতে সিমেন্স বাংলাদেশ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে কীভাবে ঘুষ লেনদেন করেছে, তার বিশদ বিবরণ ছিল। কোকো বাংলাদেশের সরকারি টেলিফোন কোম্পানি টেলিটক বাংলাদেশের একটি প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দিতে সিমেন্স বাংলাদেশের কাছ থেকে ঘুষ নেন।

তাঁর মা খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী। ইতালির সরকারি কৌঁসুলির চিঠিতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। এ লক্ষ্যে ঢাকার ইতালি দূতাবাস অনুরোধপত্রের অনুলিপি এবং দেভভয়েস অ্যান্ড প্লিমটনের প্রতিবেদনের কপি পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা পাঠিয়ে দেয় আইন মন্ত্রণালয় ও অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ল ফার্মের প্রতিবেদনসহ অনুরোধপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয় তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল সালাহউদ্দিন আহমেদের কাছে।

ওই বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি এ-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র প্রথম আলোর হাতে আসে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে দেশের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট অব কলম্বিয়ায় সিমেন্সের বিরুদ্ধে ‘দ্য ফরেন করাপ্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট, ১৯৭৭’ আইনে মামলা করে। মামলার বিবরণে বাংলাদেশে টেলিটকের কাজ পেতে সিমেন্স যে অসাধু পন্থা অবলম্বন করেছিল, তা তুলে ধরা হয়। ১২ ডিসেম্বর মার্কিন আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয় সিমেন্স। প্রথম আলো সেই রায়ের কপিও সংগ্রহ করে।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সিমেন্স-কোকোর এই দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রথম আলো। এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া হয় তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন, আইনসচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, অ্যাটর্নি জেনারেল সালাহউদ্দিন আহমেদ, নকিয়া সিমেন্স বাংলাদেশের কান্ট্রি পরিচালক খালেদ শামস, তৎকালীন বিটিটিবির পরিচালক (ক্রয়) নাদির শাহ কোরেশী এবং প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ইউসুফ নিয়াজের। এরপর ২০০৮ সালের ২২ ডিসেম্বর প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় ‘কাজ পেতে কোকোকে ঘুষ দেয় সিমেন্স’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ২৬.০৬.২০১১  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।