আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকার; বাংলাদেশের দায়িত্ব

আমি এক যাযাবর.... মিয়ানামারের রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই। ধর্মের কথা বাদ দিন। ওরা বাংলায় কথা বলে, দেখতে বাংলাদেশিদের মতো বলে তারা মিয়ানমারে বর্ণবৈষম্যের শিকার। রাখাইন প্রদেশে দাঙ্গার শিকার এই রোহিঙ্গারা আজ মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হতে চাইছে তারা।

কিন্তু বাদ সেধেছে বাংলাদেশ সরকার। পুশ ব্যাক করা হচ্ছে তাদের। নিজ দেশে পরবাসী এই অসহায় বনি আদমরা পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ থেকে মানবিক সহায়তাটুকু পাচ্ছে না। অথচ নৈতিকতা ও আন্তর্জাতিক আইনের দিক বিবেচনায় এসব অসহায় মানুষকে উদ্বাস্তু বা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামরিক কিংবা অন্য কোনো কারণে নির্যাতিত হয়ে যারা নিজ দেশ থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় চায়, তারাই রিফিউজি।

এদের ব্যাপারে জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক হয়রানি থেকে রেহাই পেতে প্রত্যেকের অধিকার আছে অন্য কোনো রাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার। রিফিউজি বা উদ্বাস্তু সম্পর্কিত বিশেষ আন্তর্জাতিক আইনটির নাম 'কনভেনশন রিলেটিং টু দ্য স্ট্যাটাস অব রিফিউজি ১৯৫১'। এই আইনের ৩৩ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো দেশ রিফিউজিদের এমন কোনো পার্শ্ববর্তী দেশে বহিষ্কার কিংবা ফেরত পাঠাতে পারে না, যেখানে তাদের ধর্ম, বর্ণ, কিংবা কোনো দলের সদস্য হওয়ার কারণে জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই আইনের ৩১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে কোনো রিফিউজিকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। শুধু তাই নয়।

একই আইনের ১২ থেকে ৩০ নং অনুচ্ছেদে রিফিউজিদের অধিকারের কথা বলা হয়েছে, যেখানে আশ্রয়প্রদানকারী দেশের নাগরিকদের মতোই বেশ কিছু ক্ষেত্রে অধিকার পাবার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার এদের পুশব্যাক এবং ক্ষেত্রবিশেষে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে; যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান রেখেছে যে, দেশটি যেন এসব শরণার্থীকে পুশ ব্যাক না করে। তাসত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার সেদিকে কর্ণপাত করছে না। মানবিক বিপর্যয়ের এই কঠিন মুহূর্তে এসব নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিপক্ষে বাংলাদেশ সরকার কোন যুক্তি খাড়া করছে, সেটা বোধগম্য নয়।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.