সুনামগঞ্জের হাওরের মিঠাপানিতে মাছ ধরতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের ফাঁদ ‘গুই’। সুনামগঞ্জসহ হাওরের ৭টি জেলায় জনপ্রিয় এই শিকারযন্ত্র দিয়ে মাছ ধরে জীবন চালান মত্স্যজীবীরা। দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৪টি গ্রামে তৈরি করা হয় গুই। আর গ্রামগুলো পরিচিত হয়ে উঠেছে গুই তৈরির গ্রাম হিসেবে।
গ্রামগুলোর তিন শতাধিক পরিবারের একমাত্র পেশা গুই তৈরি করে বিক্রি করা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চান্দারগাঁও, গোপালপুর, বজ্রনাথপুর ও লক্ষ্মীপুর—এ ৪টি গ্রামে ১৫-২০ বছর আগে থেকে গুই তৈরি করা হয়। বর্তমানে ৪টি গ্রামের ৩ শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই গুই তৈরি করেন। বজ্রনাথপুর গ্রামের যতীন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বাঁশ ও সুতা গুই তৈরির উপকরণ। সারা বছর তৈরি হলেও বর্ষাকালে গুই তৈরি হয় বেশি।
চান্দারগাঁও গ্রামের প্রবাসিনী বিশ্বাস বলেন, একশ’ গুই তৈরি করতে খরচ হয় ৭শ’ টাকার মতো। আর বিক্রি করা যায় ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায়। পাইকার সুরেশ বিশ্বাস বলেন, এখান থেকে গুই কিনে সুনামগঞ্জের সাচনা, জাউয়াবাজার, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে বিক্রি করা হয়। বজ্রনাথপুর গ্রামের কমলাকান্ত বিশ্বাস বলেন, গুই দিয়ে টেংরা, গুলসা, ইছা ও ছোট বাইম মাছ ধরা হয়।
গত দু’বছর ধরে ৪টি গ্রামের সবাই সম্মিলিতভাবে গুই তৈরি করে বিক্রি করেন।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা নামের ৫টি সংগঠন এ কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইন্টার কো-অপারেশনের সহযোগিতায় আইডিয়া সমৃদ্ধি প্রকল্প এদের নিয়ে কাজ করে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৭ লাখ ৯১ হাজারটি গুই তৈরি করা হয়েছে। বাজারে বিক্রি করে আয় হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কমিটির সদস্য চান্দারগাঁও গ্রামের আশিষ পুরকায়স্থ বলেন, সম্মিলিতভাবে গুই তৈরি ও বিক্রি করায় লাভ বেশি হচ্ছে।
উন্নয়ন সংস্থা ইন্টার কো-অপারেশনের এ কে ওসমান হারুনী জানান, গুই তৈরির সঙ্গে জড়িতদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে। আগামী বছর আরও বেশি গুই তৈরি হবে বলে তিনি জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।