আজ দুপুরে আমাদের বহনকারী গাড়ি যখন জামালগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও বাজরে পৌঁছে তখন ঐবাজারের ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা লিটার আর যখন জামলগঞ্জ উপজেলা সদরে পৌঁছে তখনই সহকর্মীর মুঠোফোনটি বেজে ওঠে। যিনি তাকে ফোন করেছেন সম্পর্কে তার চাচা হন। মুঠোফোনের মৃদৃ আওয়াজ কানে লাগে তিনি বলেন তাদেও গ্রাম্য বাজার রামনগরে ডিজেলের দাম ১০০ টা লিটার। যমুনা তেল ডিপোর ডিলারদের ধর্মঘটের কারণে বোরো মওসুমে ডিজেলের মূল্য লাফিয়ে বাড়তে থাকে। তাদের দাবী বেসকারী ভাসমান তেলডিপো বুড়িগঙ্গা কে জামালগঞ্জ ছেড়ে চলে যেতে হবে আরেকটি দাবী সাচনা বাজারে স্থায়ীভাবে সরকারী তেলডিপো স্থাপন করতে হবে।
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে একচেটিয়া বাজার ব্যবস্থা কোথাও গ্রহণযোগ্য নয়। এখানে সরকারের উচিত প্রতিযোগিতা মূলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলে যথাসম্ভব কম মূল্যে জনসাধারনের নিকট পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া। কিন্তু যমুনা সরকারী তেল ডিপো তাই সরকারী নিয়মে চলে। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার তেল উত্তোলন করতে পারেন না যমুনার ডিলারগন। অপরদিকে বুড়িগঙ্গা বেসরকারী তেলডিপো ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে।
তাই বৃহত্তর হাওরাঞ্চলের কৃষক,নৌযান মালিক থেকে শুরু করে সবাই ডিলার ছাড়া সরাসরি ন্যায্যদামে যেকোন সময় ডিজেল নিতে পারে বুড়িগঙ্গা তেল ডিপো থেকে। যমুনার ডিলারদের বেশীর ভাগই সরকারী দলের সাথে জড়িত। তাই তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বুড়িগঙ্গা কে সুরমা নদীর তীর থেকে বিতাড়িত করতে আদাজল খেয়ে লেগেছেন। জামালগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হায়াত উদ দৌলা খানের ভাষ্য অনুযায়ী গত ২১ জানুয়ারী যমুনার ডিলারগন ১ লাখ ৩ হাজার লিটার ডিজেল উত্তোলন করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তেল ধর্মঘটের ডাক দেয়।
উত্তোলনকৃত তেল সাচনা বাজারের সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীদের দোকানে ১৬ কেজির টিনে ভর্তি করে জ্বালানী তেলের বাজার অস্থিতিশীল করে এবং উচ্চ মূল্যে তেল বিক্রী করে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা লাভ করে।
লাভের কিছু অংশ যায় যারা টিনজাত করে ডিলাদের তেল বিক্রী করেছেন তাদের পকেটে। আজ সকাল ১০ টায় জামালগঞ্জ ও সাচনা বাজারে জামালগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হায়াত উদ দৌলা খানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে মাত্র ৪ জন ডিলারের কর্মচারী ও লাইসেন্স বিহীন ৪ জ্বালানী তেল বিক্রেতা কে আটক করে থানায় সর্পোদ করেন। বেলা ১ টায় জামালগঞ্জ থানায় গিয়ে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস আই আব্দুল কাঈয়ুম সহ যমুনার ডিলারদের আটকৃত কর্মচারীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার নানান তৎপরতা। তারপর এস আই আব্দুল কাঈয়ুমের সাথে কথা হয় তিনি আমতা আমতা করে সাংবাদিকদের বলেন ইউএনও স্যারের কথায় তাদের আটক করা হয়েছে। যা ব্যবস্থা নেওয়ার তিনিই নিবেন।
অপর দিকে ডিজেল ধর্মঘট স্থগিত করে ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের ডিজের সরবরাহের দাবীতে উপজেলা পরিষদের সামনে আয়োজিত সমাবেশের কথা জিজ্ঞাস করতেই তিনি আগ বাড়িয়ে বলে উঠেন সুরমা নদীর অপরপাড় সাচনা বাজারেও ডিলারগণ সমাবেশের ডাক দেওয়ার কথা। প্রায় ১০/১৫ মিনিট থানা ভবণে অবস্থান করতেই জামালগঞ্জে কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিকগণ পুলিশের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করার অসহযোগিতার কথা বলেন। পওে তারা ইউএনও মহোদয়ের নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে সমর্থহন। অবশেষে ইউএনও হায়ত উদ দৌলা খানের অফিসে গিয়ে দেখা গেল যমুনার ডিলারদের একজন ইউএনও সাহবের সাথে আলাপরত অবস্থায়। একসাথে ৭/৮ জন স্থানীয় সাংবাদিকদের দেখে তিনি দৌড়ে এসে বলেন,স্যার আলপ
করতেছেন এখন ভিতরে যাওয়া যাবে না।
তাকে সাংবাদিক সাথে স্বাাত করার খবরটি পৌঁছে দিতে বলার পরনি আলাপরত ঐ ব্যাক্তি অফিস থেকে বের হয়ে যান।
ইউনও মহোদয়ের সঙ্গে পরিচয় পূর্বক র্কমদন করার পর তিনি ¯প্রাইট ও পটেটু চিফ আনার কথা বলেন তার একজন পিয়ন কে। পিয়ন যথারীতি গুলো নিয়ে এসে সাংবাদিকদের পরিবেশন করেন। ইতিমধ্য সুনামগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ফোন করে ডিলারদের আটক করার নির্দেশ দেন। তার পর উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদ সাংবাদিকদের জানান,যমুনা তেল ডিপোর উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার সাথে তিনি কথা বলেছেন।
তারা তাকে বিমুখ করে দিয়েছে। তিনি অসহায়। এভাবে কেটে যায় অনেকণ পরে বিকেলে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগের সভাপতি মিছবাহ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য শেষে নিজ প্রতিষ্ঠানে ফেরার সময় তার সাথে বাকবিতন্ডা হয় জনৈক
ডিলারদের একজন শুভাকাঙ্খীর সাথে। এঘটনাটি শেষ পর্যায়ে শোষিত ও শোষকের সংগ্রামে অবর্তীর্ণ হয়। পরে মিছবাহ উদ্দিনের বিচণতার কারণে কোনক্রমে শেষ হয়।
আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন জামালগঞ্জের স্থানীয় বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতা তাদের এক কথা তারা যমুনার ডিলারদের হাত থেকে মুক্তি চায়। সেই সাথে ২৪ ঘন্টা জ্বালানী তেল সরবরাহের নিশ্চয়তা। তাদের দাবী মেনে নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচীর ঘোষণা দেবার আহবান করেন। সেই সাথে বোরো মওসুমে কয়েকদিন যাবৎ তীব্র জ্বালানী সংকটে পতিত কৃষক, নৌযান মালিক ও সর্বস্থরের জনগণের সুবিধার জন্য বেসরকারী তেল ডিপোটি চালু করার দাবী জানান। সেই সাথে তেল নিয়ে তেলেসমাতি কারীদের বিচারদাবী করেন।
পথসভায় বক্তারা বলেন, সরকার বলেছে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবার কথা কিন্তু ডিজেলের উচ্চ মূল্যের কারণে ১০০ টাকা দিয়ে এককেজি চাল কিনতে পারবে না জনগন। কারন তাদের ধানী জমি গুলো প্রযোজনীয় সেচ না পাওয়ার কারণে ফেটে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বোরো উৎপাদন ব্যবহত হবে। ইউএনও মহোদয় জানান, ঘটনার সাথে জড়িতদের প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।