আমি পৃথিবীর ছাএ। আমার এই লেখাটি হল, আমার এবং আমার অপর বন্ধুর কথোপকথন। তার মতে প্রথম আলো পাকিপ্রেমী। আমি বললাম, এরকম তো আরও শুনেছি যে তারা নাকি ভারতপ্রেমী! তো তারা আসলে কি? আসুন দেখি! আশা করি ভালো লাগবে। তার আগে নিচের এই দুটি লিঙ্ক থেকে ঘুরে আসুন।
১/ প্রথম আলো পাকিপ্রেমী
২/ প্রথম আলো ভারতপ্রেমী
কথোপকথনঃ
তার কথাঃ ১. কোন ব্লগে কোন লেখা সেটা সূত্রসহ উল্লেখ করলে আলোচনাটা করতে সুবিধে হোত। সোনাব্লগ বা সামুব্লগের মত যথেষ্ট নিচুমান সম্পন্ন ব্লগের পরিমাণ যেখানে বেশি, সেসব ব্লগে আরও বহু ধরণের লেখা আসে যেটা আলোচনা এবং প্রমাণের বিচারে উত্তীর্ণ হতে পারে না। কাজেই, সূত্রবিহীন একটা বক্তব্য থেকে আর সামনে এগোনো ঠিক হবে না।
আমার উত্তরঃ---- সূত্র এবং যুক্তি দেয়ার চেষ্টা থাকলো।
তার কথাঃ ২. "so point a chole aashi, kono lekhar majkhaner ekta para ba kono kothar onno meaning ber kore kalo ke shada shadake kalo bananoi jai. tai bole amader ki ta mante hobe?"
তুমি যদি স্পেসিফাই করো, ঠিক কোথায় সূত্রবিহীন একটা প্যারা প্রকাশ করা হয়েছে? প্রতিটা প্যারার সাথে এখানে সূ্ত্র হিসেবে মূল লেখার লিঙ্ক ব্যবহার করা হয়েছে।
কারও চোখ, কান বা নাক ব্যবহারের ওপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে বলে আমি দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে তোমার পয়েন্ট কোথায়? প্রথম আলো কী করছে বা না করছে, এটা আমাদের প্রতিজন ব্যক্তিমানুষকে গবেষণা করে বের করে নিতে হবে? একজন সেই গবেষণাটা যদি করে, তাহলে তোমাকে সেটা মানতে হবে এমন দোহাই কেউ দেয়নি। তুমি অবশ্যই সেটার বিপরীতে যেতে পারো। কিন্তু বিপরীতে যাবার পেছনের কারণটা আসলে কোথায়, তুমি কেন দেখাচ্ছো না?
আমার উত্তরঃ----- পয়েন্ট এবং চোখ, কান খোলা রাখতে আমি বলেছি কোন কমার্শিয়াল পত্রিকার প্রতি অতিরিক্ত আবেগ দেখিয়ে তার কথাকে নিজের মতামত এর প্রতিচ্ছবি মনে না করা। আর মত না মিললেই অন্য মানে বের করা গ্রহণযোগ্য নয়।
আমার বারবার শুধু মনে হচ্ছে ওই উধাহরনের কথা, গ্লাসে অর্ধেক পানিপূর্ণ দেখা এবং অর্ধেক খালি দেখা। কোন অনুচ্ছেদের মাঝখানের কিছু লাইন হাইলাইট করে কোন কিছু প্রমাণ করতে চাওয়া এক ধরনের "Stereotyping"[এর বাংলা মনে আসছে না এই মুহূর্তে], তাই অনেকে খালি গ্লাস দেখলেও আমি এবং আমার মত অনেকেই কিছুটা পানিপূর্ণ দেখছে!
তার কথাঃ না, দুঃখিত, তুমি পয়েন্টে আসো নাই। আমি যে লেখাটার লিঙ্ক দিয়েছি, সেখানে বরং কিছু পয়েন্ট আছে। তোমার আপত্তিটা কোন পয়েন্টে আমাকে জানাও। আসিফ নজরুল, সৈয়দ আবুল মকসুদ, বদরুদ্দিন উমর, ফরহাদ মজহার, হাসান ফেরদৌস; এদেরকে লেখায় পাকিস্তানপন্থী লেখক হিসাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদের সম্পর্কে তোমার কোনও পজিটিভ বক্তব্য কি আছে? আমি জানি না, কারণ তুমি বলো নাই।
আমার উত্তরঃ----- এদের নিয়ে কথা বলার জন্য যতটুকু পড়ালেখা করা প্রয়োজন তার সময় এবং সুযোগ আমার নেই। তোমার কাছে কি তাদের ফাকিস্তান-প্রেমের অকাট্য প্রমাণ আছে। নাকি অনুচ্ছেদের ২-৪ টা লাইন নিয়েই যত কথা? আমি জানি না। তুমি বল নাই বা লিঙ্ক দাও নাই।
ব্লগে আরও বহু ধরণের লেখা আসে যেটা আলোচনা এবং প্রমাণের বিচারে উত্তীর্ণ হতে পারে না। কাজেই, সূত্রবিহীন একটা বক্তব্য থেকে আর সামনে এগোনো ঠিক হবে না।
তার কথাঃ পাকিস্তানি পত্রিকার সম্পাদকের কলাম কেন প্রথম আলোতে ছাপা হয়, এই বিষয়ে লেখাটায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তোমার কি এই পয়েন্টে দ্বিমত? জানাও নাই।
আমার উত্তরঃ---- তুমি নিশ্চয়ই জানো কিভাবে তার আগমন।
হ্যাঁ, আফগানিস্তানের যুদ্ধের রিপোর্টের সময়। এখন নিশ্চয় বলবে না, কেন ফাকিস্তানের রিপোর্টার? কারণ, এই যুদ্ধে ফাকিস্তান সরাসরি জড়িত। পরবর্তীতে তার আরও কিছু রিপোর্ট আসলে তাতে রহস্যের গন্ধ কেন থাকবে তুমি বল নি। আমিও জানি না। সূত্র দিও।
তার কথাঃ সোহরাব হোসেনের লেখায় পাকিস্তানের প্রতি পক্ষপাত খুঁজে পাওয়া গেছে বলে বলা হচ্ছে। সেই লেখার লিঙ্কও পূর্বোক্তভাবে মূল প্রবন্ধে দেওয়া হয়েছে। পুরো লেখাটার মূল থিম পাকিস্তানের কিছু মহামানব আমাদের কাছে পকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ানোর জন্য চেষ্টা করে চলেছেন। যদি আসলেই তা হয়, সেটা কিছু পয়েন্টে প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু পাকিস্তানের সত্যিকার নৃশংসতা নিয়ে যথেষ্ট আলোকপাত না করে, পাকিস্তানে ক্ষমা চাওয়ার ওপর এতোখানি আলোকপাতের মানেটা আসলে কী? আলোচনাটায় এর মানে নিরূপণ করা হয়েছে, সুপ্ত পাকিস্তানপ্রীতি।
তুমি কি এখানে দ্বিমত? হয়ে থাকলে, কেন?
আমার উত্তরঃ---- এখানে আমার ধারনা একটি দেশের[ফাকিস্তান], আরেকটি দেশের[বাংলাদেশ]কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি ক্ষমা চাওয়া, কোন আলু, গাজর বিক্রি না! এত বড় একটা কাজ করতে বলার পরও তা কিভাবে 'সুপ্ত ফাকিস্তানপ্রীতি' তা আমার জানা নাই। তার একটা লাইনকে লেখক হাইলাইট করেছেন, যা হলঃ 'অতীত খুঁড়ে দুর্গন্ধ বের করা', আমার কাছে মনে হয়েছে তা হল ফাকিস্তানের অপকর্মের দুর্গন্ধ, কিন্তু চতুর লেখকের মতে সোহরাব হোসেন এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলেছেন বলতে চাইছেন! হ্যাঁ, আমাদের লেখক তা বলতেই পারেন। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। গ্লাসের উদাহরণটা আবার মনে পড়ে গেল।
অনেকের প্রশ্নটা তা-ই। সূত্র দিও।
তার কথাঃ আলোচনাটায় বলা হচ্ছে, মোবাইল কর্পোরেটস, ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা(যেমন গ্রামীণ ব্যাংক) এসবের পক্ষে দাঁড়ায়, বিপক্ষীয় আলোচনা উপেক্ষা করে। তুমি কি এখানে দ্বিমত? হয়ে থাকলে, কেন?
আমার উত্তরঃ---- মন্তব্য করতে পারছি না। দুঃখিত।
তার কথাঃ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, 'মেহেরজান'-এর মতো নির্লজ্জ পাকিস্তানপন্থী প্রোপাগান্ডা মুভির বিরুদ্ধে যখন একটা সমালোচনা আসলো, সেই সমালোচনার উল্টোপিঠে সেই মুভির পরিচালকের বক্তব্য, সেই একই দিনে, একই পত্রিকায় ছাপানো হয়। কোথায়, কবে, কোন এথিক্সে বলে, সমালোচনা প্রকাশের দিন তার প্রতিক্রিয়া এসে পৌঁছায়? প্রথম আলো মেহেরজানের বিপক্ষে সমালোচনা হবার ক্ষীণ সম্ভাবনাটুকু বন্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই কাজ করেছে। পাকিস্তানপন্থী এই সিনেমা নিয়ে তাদের এই স্পেশাল ট্রিটমেন্ট কেন? অন্য কোনও মুভির আলোচনায়, শুধু মুভি কেন, অন্য যেকোনও বিষয়ের আলোচনায়, সেই বিষয়ের সমালোচনার জবাবটা তো একই দিনে ছাপানো হয় না। হোয়াই মেহেরজান? তুমি কি দ্বিমত? আমি জানি না।
আমার উত্তরঃ---- উত্তরটা এক লাইনের।
কমার্শিয়াল মার্কেট কিভাবে ধরে রাখতে হয় তা প্রথম আলো জানে। এইটা তারই নমুনা। মেহেরজান ছবিটা দেখি নাই। কিন্তু যা শুনছি, তাতে দেখার ইছছাও নাই।
তার কথাঃ ৩. তুমি জাফর ইকবালের লেখাটির লিঙ্ক দিয়ে যেটা প্রমাণ করতে চাও, ১/ মূল লেখার নিচে কমেন্টে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়ে গিয়েছে।
তুমি পুরোটা পড়ে তারপর মন্তব্য করলে ভালো হোত। তুমি কমেন্ট নম্বর ৪, ২৭, ২৮, ৩০(এটা বিশেষ একটা নতুন আশঙ্কা প্রকাশ করে), ৩৫(এখানে একজন লেখাটার মূল সুরের সমালোচনা করেছেন, সেটার উত্তরও দেওয়া হয়েছে), ৪১ থেকে ৪৭(জাফর ইকবাল বিষয়ে এখানে বিস্তারিত ক্ল্যারিফিকেশন আছে; একজন জাফর ইকবাল বিরোধী ছাগুকে চিহ্নিত করার অংশ, এবং নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা), এই কমেন্টগুলো অন্তত পড়ে দেখবা, এটা আশা করি। একজন জাফর ইকবালের কথা ছাপিয়ে প্রথম আলো এক ধরণের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে নেয়। জাফর ইকবালকে আমরা সবাই বিশ্বাস করি, ভালোবাসি। তাঁর প্রাপ্য গ্রহণযোগ্যতার ভাগ প্রথম আলো নিয়ে, একটা পার্শ্বিক গ্রহণযোগ্যতার আবহ তৈরি করছে।
এই গ্রহণযোগ্যতা তাদেরকে হামিদ মীরের লেখা ছাপানোর সুযোগ করে দেয়, মেহেরজানের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে একটা পত্রিকার জন্য ন্যূনতম এথিক্সটুকু বিসর্জন দিতে সাহস যোগায়।
আমার উত্তরঃ---- আচ্ছা কথা হল কেও যদি ফাকিপ্রেমি হয় তবে কেন জাফর ইকবাল স্যার তাতে লিখবেন? কেন? তার মানে তিনিও জানেন না কিছুই? প্রথম আলোর ব্লু-প্রিন্ট? প্রশ্ন রইল। সূত্র দিও।
তার কথাঃ কিছু পয়েন্ট রিমাইন্ড করি। পুরোটা পড়ো, কথায় প্রয়োজনীয় সূত্রটুকু উল্লেখ করো, যেকোনও পয়েন্টে দ্বিমত জানাও।
ঠিক কোন পয়েন্টটাতে তুমি দ্বিমত, এটা যদি স্পেসিফাই না করো, তাহলে তোমার পুরো কমেন্ট প্রথম আলোর জন্য তোমার সফট কর্ণার প্রকাশ করে, কোনও যৌক্তিক এবং সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটায় না। তুমি ব্যক্তিগতভাবে প্রথম আলোর প্রতি সফট কর্ণার পোষণ করতে পারো, সেই ব্যক্তিস্বাধীনতায় আমি হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু তোমার ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে তুমি যদি একটা সামগ্রিক ক্ষতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে বন্ধ করতে চাও, তাহলে সেটা আর সমর্থন করে উঠতে পারছি না।
আমার উত্তরঃ---- আমি মনে করি প্রথম আলো একটি কমার্শিয়াল পত্রিকা যা উভয় পক্ষের কথা তুলে ধরে পত্রিকার কাটতি নিশ্চিত করে।
তার কথাঃ আশা করছি তুমি আমাকে নিশ্চিত করতে পারবা, তোমার আসলেই প্রথম আলো প্রীতি আছে কি নাই।
তুমি নিজে বলছ নাই, কিন্তু তোমার পয়েন্টবিহীন সমালোচনা আমার কাছে ঠিক উল্টোটা প্রকাশ করছে।
আমার উত্তরঃ----- আশা করছি কিছুটা বুঝাতে পেরেছি।
[পুনশচঃ আরিফ জেবতিক আমার অনেক প্রিয় ব্লগার। তার উদ্বেগ আমাকেও ভাবায়। যাই হোক আমি আর কথা বারাবো না।
এই ধরনের "ঋণাত্মক" কাজের কোন ফল নাই। আবার সব কাজেরই "ধনাত্মকতা" নাই। ভালো থাকো। আর বাংলা লেখায় কোন ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর ধনাত্মক দৃষ্টিতে দেখো। শুভ সকাল
[বাংলাদেশে মনে হয় এখন সকাল ৬ টা]] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।