প্রীতি(ছদ্মনাম ): জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে একটা বেসরকারি ব্যাংকে জব করছে।
-অপু(ছদ্মনাম): বুয়েট থেকে পড়াশুনা শেষ করে একটি মালটিন্যাশনাল কম্পানিতে কর্মরত।
রাত ১২ টায় অপুর মোবাইলে ফোন :
- হ্যালো , কে বলছেন প্লিজ?
আমি প্রীতি। তুমি কেমন আছো? আমাকে চিনতে পারছো ?
-কোন প্রীতি? আমি তো আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না।
আমি তোমার বান্ধবী।
প্রায় ১৭ বছর আগে তোমার সাথে ক্লাস থ্রীতে পড়তাম। এরপর তুমি মফরশল শহর ছেড়ে ঢাকাতে চলে আসলে তোমার সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। আমি তোমার খোঁজ ঠিকই রাখতাম। তুমি কোথায় পড়ছ , কি করছ ,কিন্তু কখনোই তোমার সাথে যোগাযোগ করার সাহস পাইনি।
-আমি এখনো আপনাকে চিনতে পারছি না।
প্লিজ আপনার কিছু বলার থাকলে বলেন (বিরক্তিকর ভঙ্গিতে)।
ক্লাস থ্রীতে পড়ার সময় আমি তোমাকে বলেছিলাম অ্যাই লাভ ইউ (হাসতে হাসতে)। এই কথা শুনে তুমি আমার বাসায় এসে আমার আম্মুকে বলে দিয়েছিলে। তুমি আম্মুকে বলেছিলে আপনার মেয়ের জন্য আমি বাইরে বেরোতে পারি না। আমি কিছুই বুজতাম না তারপরও ক্লাসে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
মনে আছে তুমি ক্লাসের মোটা রাজীবকে দিয়ে আমাকে একদিন মেরেছিলে। রাজিব আমাকে বলেছিল , তুই যদি আর একবার অপুর দিকে তাকাশ, তাইলে তোর চোখ তুলে ফেলব। ঐ দিন আমি খুবই ভয় পেয়েছিলাম।
[অপু কিছুটা মনে করতে পারছে কিন্তু প্রীতির চেহারা মনে করতে পারছে না। অপুর মনে আছে সে রাজীবকে বলেছিল দোস্ত তুই যদি প্রীতিকে একটা ঘুষি মেরে ভয় দেখাতে পারিস তাহলে তোকে ৫ টাকা দিব।
রাজীব কাজটা ভালোভাবেই করেছিলো]
-হ্যাঁ মনে করতে পারছি(হাসতে হাসতে)। তুমি কেমন আছো? কোথায় আছো? এরপর ওপাশ থেকে শুধু কান্নার আওয়াজ শুনতে পেল। প্রীতি কথা বল। কি হয়েছে তোমার? তুমি কান্না না থামালে আমি ফোন রেখে দিব।
প্লিজ তুমি ফোন রাখবা না।
আমি ১৭ বছর ধরে যে কথা গুলো চেপে রেখেছি আজ তোমাকে বলতে চাই। তোমার মনে আছে, কমল স্যারের কছে প্রাইভেট পড়তে গিয়াছিলাম, কোন চেয়ার ফাকা ছিল না, তুমি উঠে আমাকে বসতে দিয়েছিলে। [আরও অনেক ছোট ছোট ঘটনা বলতে লাগলো। বেশির ভাগ ঘটনাই অপুর মনে নাই। ] প্রীতি কথা বলছে আর কান্নাকাটি করছে।
তুমি ১০ বছর আগে আমাদের কলেজে বেড়াতে এসেছিলে আমি লুকিয়ে লুকিয়ে তোমাকে দেখেছিলাম, কথা বলার সাহস পাইনি।
-প্লিজ কান্না থামাও। তোমার কোন হেল্প লাগলে বলো, আমি সবরকম চেষ্টা করবো।
তুমি প্লিজ আমাকে ভুল বুঝ না। আমি তোমাকে কখনোই প্রেসার দিব না।
আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। এই ১৭ বছরের মধ্যে একদিন ও নাই যে তোমার কথা মনে পরে নি। প্রতিদিন নামাজ শেষে তোমার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ্ যেন আমাদের এক করে দেয়। আমি জানি এটা তোমার জন্য কঠিন।
আমার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউনড তোমাদের মতো ভালো না। আমি জানতাম তুমি বেইলি রোডে থাকো, কতো যে বেইলি রোডে দাঁড়িয়ে থেকেছি তোমার দেখা পাবো বলে, কিন্তু দেখা পাই নি।
জানি, আমি তোমার যোগ্য নই কিন্তু প্লিজ আমাকে খারাপ কিছু বল না, আমি সহ্য করতে পারব না। ক্যাম্পাসে আমার কোন ছেলে বন্ধু ছিল না। আমি ছেলেদের সাথে মিশতাম না।
সবসময় তোমার কথা চিন্তা করতাম। আমার বন্ধুরা জানে আমি ইনগেইজেড। আমাকে কেও কিছু বললে আমি তোমার কথা বলতাম। আমি কখনোই তোমাকে বলতাম না কিন্তু আমি আর পারছিনা। তোমাকে ছাড়া আর কাওকে বিয়ে করতে পারব না।
তুমি যদি আমাকে বিয়ে করো সেটা হবে আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া আর যদি না হয় তবু কোন আপসোস থাকবে না। আমি আমার বাকি জীবন একাই কাটিয়ে দিতে পারব।
[--- এটা অপুর ফ্যামিলি সহজে মেনে নিবে না আর অপু খুব শ্রিঘ্রই বাইরে চলে যাবে উচ্চতর পড়াশুনার জন্য। বিয়ে নিয়ে এখন কোন চিন্তা করতে পারবে না। ফোনআলাপ শেষে অপু ঘুমাতে পারে নাই, কেন জানি ওর মনটা খুবই খারাপ।
ও কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না ]
চলবে …………….
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।