তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দুস্কৃতকারীরা ‘খেলাচ্ছলে’ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
তদন্ত কমিটির প্রধান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আগের দিন মঙ্গলবার তারা প্রতিবেদনটি বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক সুকুমার ভৌমিকের দপ্তরে জমা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে তিনটি সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, “দুস্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনা, রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার চালানো এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির সুপারিশ করেছে কমিটি। ”
গত ১০ অগাস্ট রাতে ঢাকামুখী তূর্ণা নিশিথা চট্টগ্রামের ভাটিয়ারী ভাঙ্গা সেতু এলাকা পার হওয়ার সময় জানালা লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। ঢিলের আঘাতে প্রীতি দাশ (২৪) নামের এক প্রকৌশলী নিহত হন।
প্রীতি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগে লেখাপড়া করছিলেন। ঈদের পরদিন ব্যাংকার স্বামী মিন্টু দাশের সঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছিলেন তিনি।
ওই ঘটনায় রেল পুলিশ একটি মামলা করে। ১২ অগাস্ট ঘটনাস্থল থেকে রুবেল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর গত সোমবার সকালে সীতাকুণ্ড থানাধীন কেশবপুর এলাকা থেকে ইকবাল হোসেন নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাদের দুজনকেই দুই দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মো. শহীদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ইকবাল (১৯) নবম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন। তবে এখন তিনি কিছুই করেন না। এলাকার লোকজন তাকে‘বখাটে’ হিসেবে চেনে।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে প্রীতি দাশ হত্যার বিচার দাবি করে তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা।
রেলপথে প্রায়ই চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে যাত্রীদের আহত করার ঘটনা ঘটলেও এর সুনির্দিষ্ট কোনো ‘কারণ’ জানা নেই রেল কর্তৃপক্ষ বা রেল পুলিশের।
রাতের বেলা রেল লাইনের আশেপাশে থাকা নেশাগ্রস্ত এবং দিনের বেলা শিশু-কিশোররা এই কাণ্ড করে বলে রেল কর্মকর্তাদের ‘ধারণা’।
অবশ্য কখনো কখনো স্টেশন ছাড়া ট্রেন থামাতেও ট্রেনের দিকে পাথর ছোড়া হয় বলে মনে করেন কেউ কেউ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের নথি বলছে, চলতি বছর দৌলতগঞ্জ, ফাতেমানগর, গেণ্ডারিয়া, মানিকখালি, কসবা, ফৌজদারহাট, সোনাইমুড়ি, লালমাই ও ভাটিয়ারি এলাকায় পাথর ছোড়ার নয়টি ঘটনা ঘটে। এর বাইরেও হর হামেশা এ ধরনের ঘটনা ঘটে বলে রেল যাত্রী ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এর মধ্যে তিনবার ট্রেনের যাত্রা ২৫ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত বিলম্বিত হয়। একাধিক ট্রেনের জানালার কাঁচ ভাঙ্গে। একাধিক ঘটনায় ট্রেনের চালক বা তার সহকারীও আহত হয়েছেন।
রেলওয়ে আইন অনুযায়ী যাত্রীদের ক্ষতি করতে ট্রেনে পাথর ছুড়লে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এছাড়া রয়েছে ১০ বছরের জেল থেকে বিভিন্ন মাত্রার অর্থদণ্ডের বিধি।
তবে এ আইনে কারো শাস্তি হওয়ার কথা জানাতে পারেননি রেল কর্মকর্তারা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।