কেবল আইন করে শিশুশ্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। শিশুশ্রম বন্ধ করতে হলে আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সবাইকে মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রতি মানবিক ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীদের। তাহলে এই শিশুরাই একদিন দায়িত্বশীল সফল নাগরিকে পরিণত হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়।
ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের সহযোগিতায় অ্যাসিস্ট্যান্স ফর স্লাম ডুয়েলার্স (এডিএস) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য দেন এডিএসের নির্বাহী পরিচালক জামিল হোসেন চৌধুরী।
জামিল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে নগরায়ণ যত দ্রুত বাড়বে, দরিদ্র পরিবারের শিশুরাও ততই এসব নগরে ভিড় জমাবে এবং গৃহকর্মে শ্রমদাসে পরিণত হবে। সরকার ২০১৩ সালে জাতীয় শিশু নীতিমালা ও ২০১০ সালে শিশুশ্রম বিলোপের জন্য নীতিমালা গ্রহণ করেছে। কিন্তু সামগ্রিক দারিদ্র্য পরিস্থিতি বিবেচনায় গৃহকর্মে শিশুশ্রমসহ সব ধরনের শিশুশ্রম বিলোপ করা একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
এ অবস্থায় গৃহকর্মের শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের জন্য আইনের পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রতি মানবিক ও দায়িত্বশীল আচরণ করলে এই শিশুরাই একদিন সফল নাগরিকে রূপান্তরিত হবে।
গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রম ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে জামিল হোসেন আরও বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুরা অলিখিত ও অপূর্ণাঙ্গ চুক্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। সেখানে তাকে দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর কর্মসময় কাটাতে হয়; বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চুলার পাশে কাজ করতে হয়, ধারালো বস্তু ব্যবহার করতে হয় এবং অতিরিক্ত ভার বহনের কাজ করতে হয়। অপরিমিত ও পুষ্টিহীন খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়; অপরিসর ও অস্বাস্থ্যকর স্থানে ঘুমাতে হয়; টিকে থাকতে হয় সহানুভূতিহীন, আনন্দহীন ও শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে এবং কখনো কখনো যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে।
সংবাদ সম্মেলনে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রেখে তাদের কোনো খণ্ডকালীন স্কুলে পাঠানো; রাতে নিরাপদ স্থানে থাকার ব্যবস্থা করা ও যেকোনো ধরনের যৌন নিপীড়নের হাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয় ।
এ সময় গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রমিক জুয়েল, টুনি ও রুবেল জানায়, তারা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বাসায় কাজ করে। তারা গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ করে। অনেক সময় গৃহকর্ত্রীরা তাদের মারধর করে। অসুখ করলে গৃহকর্ত্রী ওষুধ দিতে চায় না বলেও জানায় তারা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি গোবিন্দ সাহা, এডিএসের কনসালট্যান্ট আবদুল্লাহ জাফর প্রমুখ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।