আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিশুশ্রম এবং আমাদের মায়াকান্না

চুশীল/প্রগুদিশীল/প্রচুদিশীল ব্লগার দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঘোষণা করা হয়েছে।
রাহেলা, বয়স ৮ ~ ১০ বছর। কাপড় কাঁচছে, স্কুল থেকে এসে আমার কাপড়টাও ছুঁড়ে দিলাম ওর দিকে। অল্প সাবান খরচ করে, গায়ের জোড়ে কিভাবে কাপড় ধুতে হয় সেই উপায় বাতলে দেয়া হয়েছে। মেয়েটি সাধ্যমত চেষ্টা করছে, না করলে আমার স্কেল ব্যবহৃত হবে ওর পিঠে, চেষ্টা তো করতেই হবে।

এরপর মাছ কাটা এবং ধোয়ার কাজ আছে, তাই বারবার তাড়া দেয়া হচ্ছে। বিকেলে আবার আমার মা ঘুমায়, মাঝখানে বিদ্যুৎ গেলে তার ঘুমের ব্যাঘাত যাতে না ঘটে তাই রাহেলাকে হাতপাখা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অবশ্য, বসে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল একদিন দাঁড়ানো অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েছিল বলে। সন্ধায় আরও অনেক কাজ। থালা-বাসন ধোয়া, ঘরের মেঝেগুলো আবার মোছা।

ওর একমাত্র বিনোদন টেলিভিশন দেখা, কিন্তু ক্লান্তিতে রাজ্যের ঘুম চলে আসে। মাঝখানে টেনে তুলে চা বানাতে পাঠিয়ে দেয়া হয়, বাবা আবার রাতের বেলা একটু চা খান। আমরা দিনে মাত্র ৪/৫ বার চা খাই তাও আবার একেক জন একেক সময়, বাকি ৩/৪ বার অতিথিদের জন্য বানাতে হয়। সেদিন সকালে ওকে ঘুম থেকে তোলাই যাচ্ছিল না। আমার মা শেষে চামচ গরম করে ওর পিঠে ধরল, আর অমনি রাহেলার ঘুম ভেঙ্গে গেল।

তার এই ঘুমটাকে অভিনয় বলে গণ্য করা হয়। পেছনের ঘটনা। রাহেলার বাবা একজন দিনমজুর, ৪ সন্তানের বাবা। সংসার চালাতে পারে না। পাশের বাড়ীর একজন ঢাকায় থাকে।

বলা হয়েছে রাহেলাকে তার বাসায় পাঠালে মাসে ৫০০ টাকা দেয়ার হবে এবং বড় হলে বিয়ের সব খরচ বহন করা হবে। টুটুল, বয়স ১১ ~ ১২, ভ্যান গাড়ী (হুডছাড়া রিকশা) চালায়। পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষ ৪/৫ জনকে অনায়াসে টেনে নিতে পারে। টুটুল ছোট বলে আপাততঃ ২ জন করে টানে। ওর মধ্যে একধরণের ক্ষোভ, সে তাড়াতাড়ি বড় হয় না কেন!!! ওর বাবাও দিনমজুর, কোন জমি-জমা নাই, স্কুলে গিয়েছিল কয়েক বছর।

লক্ষ্য করা গেল, সে যদি রিকশা চালায় তাহলে বেশ কিছু টাকা রোজগার হয় এবং একবেলার পরিবর্তে ২ বেলা খাবার জুটে। এবার কিছু পরিসংখ্যান দেখা যাক। নিচের বিন্যাসগুলো এই পরিসংখ্যান থেকে নেয়া হয়েছে এবং প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ। অঞ্চলভেদে শিশুশ্রমঃ আফ্রিকাঃ এইসব দেশে সবচেয়ে বেশি শিশুশ্রম হয়। লক্ষ লক্ষ্য শিশু বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছে।

আরবঃ ১৩.৪ মিলিয়ন বা আরব অঞ্চলের ১৫% ভাগ শিশু কাজে নিয়োজিত। এশিয়া এবং এশিয়া পেসিফিকঃ কাজে নিয়োজিত ১৫ বছরের নিচের শিশুর সংখ্যা ২০০০ সালে ছিল ১২ কোটি ২৩ লক্ষ। ইউরোপ এবং সেন্ট্রাল এশিয়াঃ শিশুশ্রমের হার কম, তবে আইএলও ২০০৬ সালে এক রিপোর্টে শিশুশ্রম কমিয়ে আনার পরামর্শ দেয়। ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ানঃ প্রায় ৬ মিলিয়ন শিশু কাজ করে। বাংলাদেশ DHAKA, 25 November 2009 - 33 million children in Bangladesh - about half of all Bangladeshi children - are living in poverty while about one in four children is deprived of at least four basic needs among the following: food, education, health, information, shelter, water and sanitation. These findings were presented today at the launch of the UNICEF Study on Child Poverty and Disparities in Bangladesh. আমরা গরিব কেন বা এই এরা দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে কেনঃ উপরে কয়েকজনের ছবি দেখতে পাচ্ছেন।

শেয়ার কেলেঙ্কারীতে এদের নাম এসেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বসে আছে। সে ঋণ ফেরত দেয়ার নাম নাই, দেবে কি-না তাও জানি না, আমরা অসহায়!!! বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। অধিকাংশ প্রজেক্টই আলোর মুখ দেখে না অর্থের অভাবে, চালু হলেও এমপি-মন্ত্রী-আমলাদের ঊদর সামাল দিতে গিয়ে খোদ প্রজেক্টই বেসামাল হয়ে পড়ে, প্রজেক্টের কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পর্যাপ্ত বিদ্যূৎ থাকলে দেশে শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে পারে।

ছোট ছোট কারখানা গড়ে উঠলেও সেখানে ৫ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়, ৫ টা পরিবার বাঁচে, সেই পরিবারের সন্তানরা লেখা-পড়া করতে পারে, কাজে যোগ দিতে হয় না। আমাদের যে পরিমান খেলাপী ঋণ আছে তা দিয়ে অনায়াসে বিদ্যূৎ সমস্যার সমাধান করা যায়। পুনশ্চঃ শিশুদের জন্য মায়াকান্না না করে গর্জে উঠুন। ওদেরকে ধরে ধরে ফাঁসি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ধন্যবাদ সবাইকে।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.