পাকিস্তানের রাজনীতিক মিয়া হুসেইন। দলের প্রধান কার্যালয়ে বসে আছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের হাঁকডাক নেই। পাশে দুটি টেলিফোন পড়ে আছে। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাওয়া একজনের পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।
তালেবানবিরোধী রাজনীতিকদের অন্যতম মিয়া হুসেইন। তালেবানের হুমকিতে এখন নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছেন না তিনি। ১১ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে একটি জনসমাবেশও করেননি। অসাধারণ বক্তা হিসেবে পরিচিত মিয়া হুসেইন এর আগে অনেক বড় বড় সমাবেশ করেছেন। আর এখন ফোনে ছোট ছোট বার্তা দিচ্ছেন নেতা-কর্মীদের।
কখনো কখনো তাঁদের নিয়ে গোপনে বৈঠক করছেন। আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) নেতা মিয়া হুসেইন এখন এক অর্থে নিজের রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন।
তালেবান হামলার ভয়ে অনেকে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এএনপির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের জন্য বাইরে যাওয়া বিপজ্জনক ব্যাপার। ’ বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্যমতে, গত এপ্রিল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তালেবান হামলায় অন্তত ১০১ জন নিহত হয়েছেন।
মূলত শীর্ষ তিন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় তাঁরা নিহত হন। এই দলগুলোর বেশির ভাগ শীর্ষস্থানীয় নেতাকে দলের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে প্রচারণা না চালাতে বলা হয়েছে।
তালেবান হামলা এখনো চলছে। গতকাল মঙ্গলবারও পেশোয়ারে আত্মঘাতী হামলায় অন্তত নয়জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ জানান, হামলায় অন্তত নয়জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়েছেন।
তবে অন্য একজন সরকারি কর্মকর্তা নিহতের সংখ্যা ১০ জন বলে উল্লেখ করেন। গত সোমবার জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের (জেইউআই) সমাবেশে হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন।
এএনপির নেতা মিয়া হুসেইন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তালেবানের প্রতি সহানুভূতি আছে এমন দলকে জয়ী করতে কাজ করছে তালেবান। তিনি বলেন, তালেবান জঙ্গিরা হামলার জন্য পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতৃত্বাধীন বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল এএনপি ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টকে (এমকিউএম) বেছে নিয়েছে। এই দলগুলোর নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হচ্ছে বেশি।
এই জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রধান কারণ হচ্ছে, ক্ষমতায় থাকতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে তালেবানবিরোধী সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছিল বিদায়ী সরকার।
তালেবান বলছে, তারা সেই দলগুলোর সমাবেশেই হামলা করছে, যারা নাস্তিকদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে এবং ইসলামের শত্রুর মতো আচরণ করে।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, ধর্মভিত্তিক ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো তালেবানের হামলার লক্ষ্য নয়। সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দলের সমাবেশে তারা হামলা করছে না। ইমরান পাকিস্তানের মাটিতে মার্কিন ড্রোন (মানুষবিহীন বিমান) হামলা এবং কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর বিরোধী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।