অনেকটা না পেরেই এই লেখা লিখতে বসলাম। আজ আমার প্রাক্তন বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের নামকরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটছে তার জন্য কে দায়ী ? দেশের হরতাল, অরাজকতা এগুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে যা হচ্ছে তা আর বলবার নয়। ক্ষমতার লোভে মানুষ অনেক কিছুই যে করতে পারে তা আমরা অনেক আগে থেকেই জানি। দেখুন না এক ইলিয়াস আলীকে নিয়ে কত কি যে হচ্ছে।
শোনা কথা উনি নাকি একসময় সন্ত্রাসী ছিলেন। যাই হোক আমাদের শিক্ষকরা কিন্তু কম যান না। ব্যাক্তিগত স্বার্থের কারনে কিনা করছেন উনারা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ গুলো অচল করে রেখেছেন। জাবির ভিসি শরীফ এনামুল কবির যিনি নাকি এদেশের একজন স্কলার (ইউজিসির চেয়্যারম্যান এর মতে) ।
আজ উনার মানবতাবোধ কোন পর্যায়ে পৌছিয়েছে তা আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু উনি কি বুঝেও বোঝেন না নাকি দেখেও দেখেন না। এটাই হওয়া স্বাভাবিক। আজ উনি উনার পরিবারের অনেক সদস্যদেরকেও যেন চিনেও চিনেন না । শোনা যায় শিক্ষক নিয়োগে এক একজন এর কাছ হতে ১৫ লক্ষ করে টাকা নিয়েছেন।
এমনও শোনা যায় আইবি এতে ছাত্র ভর্তির ব্যাপারেও তিনি দুর্নীতি করেছেন। তার অনুগত একজন শিক্ষক রয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। সবাই তাকে ____ স্যার বলে ডাকেন। উনি শিক্ষকতার চাইতে ব্যস্ত থাকেন জাবির আশেপাশের জমিজমা দখলের কাজে। বিনপির আমলে ছাত্রদেরকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের জমি দখল করিয়ে নিয়েছেন।
আর এখন বলে বেড়ান ওগুলো নাকি তার পৈতৃক জমি জমা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও উনি যে আন্তর্জাতিক বিষয়ে জ্ঞান খুব কম রাখেন সে আর বলতে। এরকম আরও অনেক শিক্ষক রয়েছেন জাবির বর্তমান ভিসির অনুগত। যা বলে শেষ করা যাবে না। সামনে আসছে অনেক কাজ যেমন পুর্নাঙ্গ মেডিক্যাল সেন্টার এর নির্মান।
সবমিলিয়ে প্রায় ১২০ কোটি টাকার কাজ। আর কিছু নাহোক ভিসি থাকতে পারলে এর পাচ পার্সেন্ট তো আদায় করেই নেবেন। যা প্রায় ৬ কোটি টাকার উপরে। এই লোভ ছেড়ে দেয়া অনেক কষ্ট। এখন বলি আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পারবেন আপনারা এই লোভ ছেড়ে থাকতে? যদি বলি আপনারাও এই সবের লোভে পড়ে আন্দোলন করছেন।
আমার কি ভুল বলা হবে। গতকাল একটি অনুষদের ডীন পদত্যাগ করেছেন। যিনি আওয়ামী লীগের আগের পিরিয়ডে ভিসি ছিলেন। বেশ ভাল ছিলেন। সবাই তাই বলেন।
আসলে কি তাই ? উনি যে অনুষদের ডীন ছিলেন সেই অনুষদেরই একজন শিক্ষিকা হলেন উনার বড় মেয়ে। যিনি কিনা জাবির স্কুল কলেজ হতে বরাবর বিশেষ বিবেচনায় পাশ করে এসেছেন। আর উনি নাকি এখন ইভনিং এমবিএর ক্লাস নেন। যেখানে ছাত্র হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ। কিন্তু উনারা কি জানেন এসব সম্পর্কে।
মনে হয় না। উনাদের আর কি দোষ বলেন উনারা তো জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির নাম দেখেই তো এসেছেন। এই হচ্ছে দেশের অন্যতম একটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের অবস্থা। আন্দোলনকারী অনেক শিক্ষক তাদের ব্যাক্তিগত স্বার্থের কারনেও আন্দোলন করছেন । সব পাঠকদের কাছে প্রশ্ন রাখছি আপনাদের কি মনে হয় ? ভিসি যদি টাকা নিয়ে একজন শিক্ষক কে নিয়োগ দিয়েই থাকেন তাহলে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের কি সমস্যা হতে পারে বলতে পারেন ? কেউ কেউ বলেন দরকারের চাইতে বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তাতে সমস্যাটা কি ? কারো কি বেতন ভাগ হয়ে যাচ্ছে ? আজকে শিক্ষকরা শিক্ষকতার বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাভ ক্ষতির হিসাব করা শুরু করেছেন। এটা কি উনাদের দায়িত্ব নাকি প্রসাশনের। তাহলে প্রশাসনের আর দরকার কি । এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ কারা ? আপনারাই বলেন। ভিসি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছাচারীতা চালাচ্ছে।
ছাত্রলীগ নামধারী ক্যাডার বাহিনী বানিয়েছেন । এতে করে অন্যান্য শিক্ষকদের স্বার্থ ভুলুন্ঠিত হচ্ছে নাকি ছাত্ররা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমন অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা বছরের পর বছর ধরে বিদেশে পিএইচডি এর নাম করে কাজ করছেন। আবার সরকারী বেতনও নিচেছন। কই তখন তো কোন শিক্ষক এর গা জ্বালাপোড়া করেনা।
কেউ তে আন্দোলনও করেনা। আসলে সবাই একই গোয়ালের গরু। কেউ কেউ ভিসির কাছে আবেদন করে এগুলোর মেয়াদও বাড়িয়ে নেন যাতে করে আরো কিছুদিন কাজ করে টাকা বানিয়ে নেয়া যায়। যাতে করে দেশে এসে বাড়ী কেনা যায়,এসি গাড়ীতে চড়া যায়। আর দেশে ফেরত এসে কেনা এসি গাড়ীতে করে ঢাকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে যান টাকার লোভে ।
আর জাবিতে শিক্ষক এর অপেক্ষায় বসে থাকা ছাত্রছাত্রীদেরকে মোবাইল ফোনে রাজনীতির নির্দেশনা। বাহ কি সুন্দর । ছাত্রছাত্রীদেরকে আর ক্লাস করতে হয়না। স্যার এর নির্দেশ পালন করলেই তো পাশ। আর ভিসির পক্ষে যেসকল শিক্ষক-শিক্ষিকারা আছেন তারা কি স্বার্থ ছাড়া ভিসির পক্ষে লড়ছেন বলে মনে করেছেন ।
ভিসির পক্ষে এমন একজন অস্থায়ী শিক্ষিকাকেও দেখা গেছে যিনি কিনা ছাত্রীবস্থায় উনার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা খেয়েছেন। বেশিরভাগ শিক্ষকই শিক্ষিকাই অস্থায়ী । তারা এই আশায় ভিসির পক্ষে রয়েছেন যে ভিসি টিকে যেতে পারলেই তো স্থায়ী চাকরী । বলা মুস্কিল ভিসি কয়জনকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন । আবার দেখবেন আরেকটি ইস্যু নিয়ে আবার আন্দোলন ।
এই চলতে থাকবে । শিক্ষকদের দুর্নীতি বলে শেষ করা যাবেনা । আজকে জাহাঙ্গীরনগর এ এই পরিস্থিতির মুলে রয়েছে ব্যাক্তিগত স্বার্থ । আসুন সবাই মিলে শিক্ষক সমাজের এই অবক্ষয় রোধে আমরা ছাত্রছাত্রীরাই রুখে দাড়াই । যদিও এর মাঝে ছাত্রলীগ নামধারী অনেক বাধা আসবে, তাতে কি হয়েছে ওরা ১০০ তো আমরা ১০০০০ ।
এখনই সময় এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার ।
-
-
-
-আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন জাবি ও বুয়েট সহ রাষ্ট্রের সকল বিদ্যাপীট হতে সকল স্তরের রাজনীতি আইন করে বন্ধ করা হোক এবং ছাএছাত্রীদের স্বার্থে ক্লাস চালু করা হোক। নাহলে এদেশ আরও পিছিয়ে যেতে থাকবে । আসুন সবাই এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।