ব্লগের একমাত্র অলস ব্লগার ।
সম্প্রতি কিছুদিন আগে আবিষ্কৃত মৌলভীবাজারের "হামহাম" ঝর্ণাটি বর্তমানে বিএসএফ এর দখলে । গত এক মাস ধরে যে সব বাংলাদেশী পর্যটক হামহাম পরিদর্শনে গেছেন তাদের সবাইকে বিএসএফ এর ঝামেলা পোহাতে হয়েছে ।
"হামহাম" জলপ্রপাতটি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা সংরক্ষিত বনের গহীনে ত্রিপুরা সিমান্ত ঘেষে অবস্থিত । পাহাড়ী অধিবাসীরা পানি পতনের স্রোতধ্বনিকে ''হামহাম'' বলে ।
তাই এই জলপ্রপাতটি 'হামহাম' নামে পরিচিত । দূর্গম পাহাড়ের ভেতর 'হামহাম' জলপ্রপাতের চারদিকে গাছ-গাছালি ও প্রকৃতিক বাঁশবনে ভরপুর আর ডলু, মুলি, মিরতিঙ্গা, কালি ইত্যাদি অদ্ভুত নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশবাগান পর্যটকদের দেয় বাড়তি আনন্দ । কিন্তু বাংলাদেশীদের এ আনন্দ কেড়ে নিতে যাচ্ছে বিএসএফ
গত মাসে আমাদের কয়েক বন্ধুর প্ল্যান ছিল "হামহাম" পরিদর্শনের । অনিবার্য কারণবশত আমার যাওয়া হয়নি । কিন্তু গিয়েছিল অন্য পাঁচ জন ।
ওরা ফিরে আসার পরই "হামহাম" দখলের ঘটনা জানতে পারি ।
মার্চের ১৯ তারিখ ওরা হামহামের উদ্দেশ্যে কমলগঞ্জ থেকে রওনা দেয় । সাথে ছিল একজন গাইড । পাঁচ ঘন্টা পর "হামহাম" এর ঠিক একটু আগে বনের মধ্যে ওরা একদল অভিযাত্রীদের ফিরে আসতে দেখে । ফিরে আসার সময় ওরা বলে হামহাম ঝর্ণা বিএসএফ এর দখলে ।
বিএসএফ ওদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছে । ওদিকে না যাওয়াই শ্রেয় । যদিও ওদের গাইড আগে থেকে ওদেরকে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি । কিন্তু এতদূর এসে ফিরে যাওয়াটা সমীচিন মনে করেনি আমার বন্ধুরা । ওরা যাবেই ।
কিন্তু বেকে এক বন্ধু । বিএসএফ এর ভয়ে ও যাবে না "হামহাম" । অগ্যতা ওকে ওখানে অপেক্ষা করতে বলে বাকি চার জন এবং গাইড আবারও হাঁটা শুরু করে । কিছুক্ষণ পর পৌছে যায় "হামহাম" এবং সত্যিই সেখানে বিএসএফ কে অবস্থান করতে দেখে । "হামহাম" এর একটু আগেই পতাকা গেড়ে জায়গাটা ইন্ডিয়ার সীমানা বলে চিহ্নিত করে রেখেছে ।
বিএসএফ এর কিছু সদস্য ওদেরকে আটকে ফেলে । একজন দোভাষীর মাধ্যমে কথা বলে ওদের সাথে । জায়গাটা ইন্ডিয়ার যেনেও কেন ওরা এল জিজ্ঞেস করে । ওদেরকে সার্চ করা হয় । হুমকি দেয়া হয় গুলি করার ।
মোবাইল , ক্যামেরা রেখে দেওয়ারও হুমকি দেয় । ওরা জায়গাটা বাংলাদেশের জেনে এসেছিল বলে । এও বলে গত কয়েকমাসে আরও অনেকেই ঘুরে গেছে ।
৪৫ মিনিট আটকে রেখে ওদের ছেড়ে দেয় বিএসএফ । আমার বন্ধুদের ভাষ্য বাংলাদেশের ভেতরে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ওদের দখলে ।
দূর্গম এই সীমান্তে বিএসএফ ঘাটি গড়ে বসলেও নেই বিজিবি । নেই প্রশাসনের কোন নজরদাড়ি । হয়ত এ সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে বিএসএফ
এই ঘটনার কোন সংবাদ মাধ্যমে আসেনি । তবে তারপরও একটি ভিডিও লিঙ্ক দিচ্ছি । দেখুন ।
এখানে লাল শার্ট পরা ছেলেটার পেছনে বিএসএফ ক্যামেরা দেখে বলছে ক্যামেরা উস তারাফ । যার ফলে ক্যামেরা বন্ধ করে দিতে হয়
বিএসএফ এর দখলে হামহাম ঝর্ণা
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এ ঝর্ণাটির পর্যটন মূল্য ইন্ডিয়ানরা বুঝে গেলেও বোঝেনি বাংলাদেশ ।
গতমাসের পর এখন পর্যন্ত আর কোন আপডেট জানা যায়নি
কৃতজ্ঞতাঃ বন্ধু ফয়সাল রহমান ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।