আপাতত রেস্টে আছি! :)
আজ কোনো এক পরীর জন্মদিন।
আমাদের সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিলো খুব আদি-রসাত্নকভাবে। ঠিক কোথায় আমাদের দেখা হয়েছিলো, এখন সেটা একদম মনে নেই। কিন্তু কিভাবে পরিচয় হয়েছিলো সেটা মনে আছে। এক "আইটেম সং" -এর মাধ্যমে।
সেই থেকে শুরু। খুঁজতে শুরু করলাম দিব্যা নামের মেয়েটার সব কয়টা মুভি। কিন্তু কি আজব, ওর তো কোনো মুভিই নেই। তারপর যখন ওর মুভি রিলিজ হওয়া শুরু করলো, বেগ সামলানো দায় হয়ে পড়লো। একজন ডেবু্ট্যান্ট হিসেবে একসাথে ১৪টা মুভি সাইন করে বসলো ও।
রেকর্ডটা আজও কেউ ভাংতে পারেনি। চোখ ভরা ইনোসেন্স আর মুখে বন্ধুত্বের আহবান নিয়ে চলে এলো মেয়েটি।
অনেকে বলেছিলো, মেয়েটা অভিনয় তেমন জানে না। তাদেরকে জবাব দিতেই ও Deewana নামে একটি মুভি করলো। আর সবাই মুগ্ধ হয়ে শুধু ওকেই দেখলো।
সেই মুভিতে সদ্য ইকোনোমিক্সে গ্রাজুয়েশন করে আসা এক ছেলের সাথে দিব্যা কাজ করলো। যে ছেলেটার সাথে অন্য কোনো নায়িকা কাজ করতে রাজি হচ্ছিলো না। ছেলেটার নাম- শাহরুখ খান।
প্রথমে যেটা স্রেফ ভালোলাগা ছিলো, একসময় সেটা পরিণত হলো অবসেশনে। ওর ভিউকার্ডে বাসা ভরে গেলো।
আর সবাই আমাকে পাগল ঠাওরাতে লাগলো।
তবে শুধু আমি একা না, সারা পৃথিবীই পাগল ছিলো ওর জন্য। এত্তসব প্রত্যাশা আর রটনা থেকে বাঁচতে ঝোঁকের বশে এক মুসলিম প্রোডিউসারকে বিয়ে করে বসলো ও। নাম নিলো "সানা"।
কিন্তু ওর মুভির সাফল্যে একটুও কমতি দেখা গেলো না।
বরং একটা উল্টো ব্যাপার দেখা গেলো। যেখানে হলিউডের মতো জায়গাতেও, নারী নির্ভর মুভি খুব একটা দেখা যায় না। সেখানে ওকে লিড ক্যারেক্টার করে চারটি মুভি নির্মিত হলো।
একটা সময় এমন গিয়েছে, আমি আড়াই দিন জুড়ে শুধু ওর গানগুলি দেখেছি। সবাই পরমার্শ দিলো, ওর থেকে দূরে থাকতে।
সবাইকে কিভাবে বোঝাই, মন কোনো বারণ শুনতে চায় না, এটা কি মনের অপরাধ?
আজ এতো বছর পরেও, সেই একই রকম মুগ্ধতা নিয়ে ওর মুভির গানগুলো দেখি। কি করবো ওকে না দেখে যে থাকতেই পারিনা
কিন্তু এতো পবিত্রতা, এতো সৌন্দর্য ধারণ করার মতো ক্ষমতা পৃথিবীর ছিলো না। সারাক্ষণ ছেলেমাণুষী আর ছুটোছুটি। তাইতো একদিন পাঁচ তলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলো ও। কিংবা উড়ে গেলো আকাশে।
আজ সেই পরীর জন্মদিন!
**লেখাটা খুব অগোছালো, কারণটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন?
**বলা হয়, ফারাহ খানের "ওম শান্তি ওম" মুভির শান্তিপ্রিয়া চরিত্রটি নাকি দিব্যার ছায়া অবলম্বনে করা। অল্প বয়সেই সাফল্যর শীর্ষে অবস্হান, নায়কোচিত প্রযোজকের সাথে গোপনে পরিণয় আর সবশেষে রহস্যময় মৃত্যু। কথাটা সত্যি হবার সম্ভাবনা কম। কারণ ফারাহ'র ভাই সাজিদ খানের পরিচালিত "ওর্স দ্যান ক্র্যাপ" টাইপ মুভিগুলোর প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা। একই কথা শোনা গিয়েছিলো সদ্য প্রয়াত দেব আনন্দ -এর সর্বশেষ মুভি "চার্জশীট" মুভির ক্ষেত্রেও।
**শেষ করি এক আষাঢ়ে গল্প দিয়ে। দিব্যা কি মারা গিয়েছে কিনা, এই ব্যাপারটা নিয়ে আমার চারপাশের সবার মাঝে খুব কনফিউশন ছিলো। কেউ বলতো মারা গিয়েছে। অনেকে বলতো আত্নহত্যার চেষ্টার পর, এখন মুভি করেনা। সত্যটা জানতে আমার ২০০২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
কারণটা খুব সহজ -কোনো সোর্স নেই। আজ ২০১২ সালে যেটা শুনতে অসম্ভব শোনাচ্ছে, সেটা ১০ বছর আগেও খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিলো। উইকিতে এখন যেটা ১০ সেকেন্ডে খুঁজে পাওয়া যায়, সেটা তখন জানা একরকম অভিযানের সমতুল্য। ইন্টারেট অ্যাভেইলএবল না, পুরো জেলা শহরে একটামাত্র লাইব্রেরী। আর এনসাইক্লোপিডিয়াতো ভূতের মতো (সবাই নাম শুনেছে, কেউ চোখে দেখেনি টাইপ)।
সংবাদপত্র গুলোতেও বিনোদন পাতাটাকে বরাবরই খুব হেলার সাথে ট্রিট করা হতো। যতদূর মনে পড়ে আজকের কাগজ (ও পরবর্তীতে প্রথম আলো) সিরিয়াসলি এই পাতাটাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। আর "সিধু জ্যাঠারা" তো বলিউডের খোঁজ রাখতেন না। ২০০২ সালের পর আমি দিব্যার আর কোনো মুভি দেখিনি। ইউটিউব-এ তার সব কয়টি মুভি আছে।
এমনকি দিব্যার অন্তিম সৎকারের ভিডিও পর্যন্ত আছে। ঐ ভিডিওটা আমি কখনো দেখিনি, দেখবোওনা। ওটা তো ফেইক ভিডিও, স্রেফ কম্পিউটারের কারসাজি।
কে বলে দিব্যা মারা গিয়েছে?
যত্তসব পাগলের দল!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।