ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার দুপুরে জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫২তম জন্মবার্ষিকী এবং নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশের সাহিত্য বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হওয়া উচিত। তেমনি, বিশ্বের বিভিন্ন সাহিত্য বাংলায় অনুবাদ করে নিয়ে আসা দরকার। ”
“এর মধ্য দিয়ে আমাদের বৈচিত্র্যপূর্ণ সাহিত্যিক কীর্তির সাথে বিশ্বের অন্যান্য ভাষা ও সংস্কৃতির পাঠকের পরিচয় ঘটবে”, যোগ করেন তিনি।
আরো বেশি করে বাংলা চর্চা করতে হবে এবং তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বকবির অমর সৃষ্টির হাত ধরেই বাংলাভাষা ও সাহিত্য বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে”, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্বকবির চিত্রকর্মের আরো প্রচারের উপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় নাম।
শিল্প- সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং চিত্রশিল্পে তার অবদান বাংলা সাহিত্য ও বাঙালির সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। ”
উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত, গীতিনাট্য, ভ্রমণকাহিনী সব ক্ষেত্রেই রবীন্দ্রনাথের সাবলীল পদচারণার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে এবং মনের ভাব প্রকাশ করতে রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিই। ”
শেখ হাসিনা বলেন, “ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আমরা আমাদের প্রতিটি ঋতুতে রবীন্দ্রনাথকে খুঁজে পাই। ”
রবীন্দ্রচর্চায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে স্থাপিত হয়েছে ‘রবীন্দ্র চেয়ার’।
সিরাজগঞ্জের শাজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত হবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। শিলাইদহে হবে অ্যাকাডেমিক ভবন। শান্তি নিকেতনে আমরা তৈরী করে দিচ্ছি বাংলাদেশ ভবন। ”
শেখ হাসিনা বলেন, “কবিগুরুকে একই সঙ্গে স্বদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আমরা পাই একজন বিশ্ব নাগরিক হিসেবে।
১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ তার ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের এর মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যের জন্য বয়ে এনেছেন নোবেল পুরস্কারের বিরল সম্মান।
এই পুরস্কারপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের মর্যাদাপূর্ণ অভিষেক ঘটে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি যতদিন থাকবে, ততদিন রবীন্দ্রনাথ আমাদের আলোর দিশারী হয়ে থাকবেন। তার সৃষ্টি, তাঁর স্বপ্ন আর জীবনদর্শন আগামী প্রজন্মকেও পথ দেখাবে সত্য ও সুন্দরের পে থাকতে। ”
“স্বদেশের গন্ডি পেরিয়ে রবীন্দ্রনাথ আজ বিশ্বজনীন, প্রকৃত অর্থেই বিশ্বকবি। তার জন্মের দেড়শো বছর পরেও তিনি আমাদের বিশ্বাস ও চেতনায় সমুজ্জ্বল হয়ে আছেন,” যোগ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সংস্কৃতি সচিব রণজিৎ কুমার বিশ্বাস।
পরে প্রধানমন্ত্রী এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।